অ্যাপশহর

জোরে শ্বাস নিতেও তো ভয় করছে

সিরিয়ার খান শাইখুন শহরে এখন মৃত্যুর নিস্তব্ধতা৷ রাস্তাগুলো খাঁ খাঁ করছে৷ চারদিক থেকে ঘিরে ধরা নৈঃশব্দ্যের আড়ালে লুকিয়ে দু’দিন আগের ভয়াবহতার শোক৷

EiSamay.Com 8 Apr 2017, 11:06 am
ইদলিব : সিরিয়ার খান শাইখুন শহরে এখন মৃত্যুর নিস্তব্ধতা৷ রাস্তাগুলো খাঁ খাঁ করছে৷ চারদিক থেকে ঘিরে ধরা নৈঃশব্দ্যের আড়ালে লুকিয়ে দু’দিন আগের ভয়াবহতার শোক৷
EiSamay.Com us missiles blast syria now it is afraid of breathing
জোরে শ্বাস নিতেও তো ভয় করছে


সে দিনের ঘটনাকে মনে করিয়ে দেওয়ার মতো একমাত্র চিহ্ন শহরের উত্তর দিক ঘেঁষে রাস্তার উপর তৈরি হওয়া ছোট একটা কালো গহ্বর৷ যেখানে স্নায়ু বিকল করে দেওয়া গ্যাস ভর্তি ক্ষেপণাস্ত্র এসে আছড়ে পড়েছিল৷ তার একটা সবুজ টুকরো এখনও রয়ে গিয়েছে৷ জোরে শ্বাস টানলে নাকের কাছটা এখনও হালকা জ্বালা করে ওঠে৷ সম্প্রতি কোনও হামলা হয়েছে , বাড়িঘরের দিকে তাকালে এমন কোনও চিহ্নই চোখে পড়ে না৷ বাইরে থেকে বাড়িগুলো দিব্যি স্বাভাবিক দেখায়৷ শুধু কাছে গেলে বোঝা যায় , কোথাও জনপ্রাণী নেই৷ যাঁরা সে দিনের রাসায়নিক যুদ্ধের বলি হওয়া থেকে কোনও রকমে বেঁচে গিয়েছেন , তাঁদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অন্যত্র৷

কাছেই একটা গুদাম , ধুলোয় ধূসর৷ শস্য মজুত রাখার কয়েকটি গুমটি , ভিতরে এ দিক ও দিক ছড়িয়ে কয়েক দানা শস্য আর জৈব সার৷ স্থানীয় এক জন জানালেন , মাস ছয়েক আগে বিমান হানার সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল শস্য রাখার ওই গুমটিগুলো৷ তার পর থেকেই আর ব্যবহার হত না৷ মঙ্গলবার ভোরে যখন বিষবায়ু ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে , কী করে যেন একটা গুমটির ভিতরে ঢুকে পড়েছিল একটা ছাগল৷ দমবন্ধ হয়ে মরে পড়ে ছিল সেখানেই৷ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন , মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ছটা নাগাদ যখন বিমানহানা শুরু হল , আর পাঁচটা বিমানহানার সঙ্গে তার কোনও তফাত রয়েছে বলে শুরুতে বুঝতেই পারেননি তাঁরা৷ বুঝলেন , যখন দেখলেন , ক্ষেপণাস্ত্রটা আছড়ে পড়ার পর যে সব উদ্ধারকর্মীরা তার কাছাকাছি প্রথম গিয়ে পড়েছিলেন , তাঁরা একে একে মাটিতে পড়ে যাচ্ছেন৷ সিভিল ডিফেন্স ভলান্টিয়ার হামিদ খুতাইনির কথায় , ‘ওরা আমাদের চিত্কার করে ডাকছিল৷ বলছিল , আমাদের নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ নেই , আমরা হাঁটতে পারছি না , বাঁচাও৷

ওরা যে কী বোঝাতে চাইছে , তা আমরা বুঝতেই পারছিলাম না৷ তার পর প্রায় ৫০০ মিটার দূর থেকেও গন্ধটা নাকে এসে লাগল৷ ’‘মাটিতে পড়ে ছটফট করছে কয়েকটা মানুষ৷ থরথর করে কাঁপছে সারা শরীর , মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা উঠছে , ঠোঁট নীল৷ মাঝে মাঝে অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে৷ ’ এ ভাবেই সে দিনের ভয়াবহ দৃশ্যের বর্ণনা দিচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা৷ বলতে বলতে শিউরে উঠছেন৷ এখনও তাঁদের প্রতি মুহূর্তে তাড়া করে বেড়াচ্ছে মৃত্যুর বিভীষিকা৷

পরের খবর

Worldসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল