অ্যাপশহর

অগ্নিকাণ্ডে ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন রণতরি ডুবতে বসেছে সান দিয়েগোয়

রবিবার থেকে অগ্নিকাণ্ড শুরু হয়েছে। সান দিয়েগোয় এখনও জ্বলছে মার্কিন নৌসেনার রণতরি বনহোম রিচার্ড। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত আগুন নেভার খবর নেই। মার্কিন নৌ বাহিনী সূত্রে খবর, রণতরি ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

EiSamay.Com 17 Jul 2020, 2:41 am
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: অগ্নিকাণ্ডের পাঁচ দিন পরেও ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়েগো বন্দরের মার্কিন নৌঘাঁটিতে নোঙর করে রাখা মার্কিন রণতরির আগুন এখনও নিভল না! দমকল কর্মীরা এখনও হাল ছাড়েননি। আগুন নেভানোর সবরকম চেষ্টা চলছে। কিন্তু, ক্ষতি ঠেকানো যায়নি।
EiSamay.Com US
অবিচল আগুন...


মার্কিন নৌবাহিনী (US Navy) বৃহস্পতিবার ঘোষণা করে, অগ্নিকাণ্ডে ৪৪ হাজার টন ওজনের অ্যাসল্ট যুদ্ধজাহাজ বনহোম রিচার্ডের (Bonhomme Richard) ভয়ানক ক্ষতি হয়েছে। নিরাপত্তার কারণে নৌ-অফিসার, নাবিকদের ওই যুদ্ধ জাহাজ থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফলে, নতুন করে আর কেউ জখম হয়নি। সান দিয়েগো বন্দরে এখন ডুবতে বসার উপক্রম এই মার্কিন রণতরির। জেটি থেকেই জাহাজে নজর রাখছেন নৌসেনা অফিসাররা।

রিয়ার অ্যাডমিরাল ফিলিপ সোবেক দু-দিন আগেই জানিয়েছেন, ওই রণতরিতে থাকা ৬১ জন জখম হয়েছেন। নতুন করে আর কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ৬১ জনের চোট সামান্যই। জানা গিয়েছে, ৬১ জনের মধ্যে ৪০ জন মার্কিন নৌবাহিনীর নাবিক। বাকি ২৩ জন সাধারণ নাগরিক। এই ৬১ জনের মধ্যে কয়েক জনের অল্প আঘাত লেগেছে। বাকিরা ধোঁয়ায়, আগুনের উত্তাপে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তবে, কাউকেই হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়নি।

১৯৯৮ সালে মার্কিন নৌবাহিনীর প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরে যুক্ত হয় ইউএসএস বনহোম রিচার্ড। মার্কিন মেরিন কোরের সমর হেলিকপ্টার ও স্থল সৈন্যদের যুদ্ধক্ষেত্রে বহন করে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই জাহাজটি তৈরি করা হয়।

নেভি নিউজ সার্ভিস (NNS) সূত্রে খবর, ১৬ জুলাই, বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত মার্কিন এই রণতরির আগুন নেভেনি। দমকলকর্মীরা বনহোম রিচার্ডেই রয়েছেন। আগুন নেভাতে বিগত কয়েক দিন ধরে আপ্রাণ তাঁরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।

NNS জানাচ্ছে, হেলিকপ্টার সি কমব্যাট স্কোয়াড্রন (HSC) -থ্রি ক্রমাগত হেলিকপ্টার থেকে জল ঢেলে আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে। আগুনের তাপে ফ্লাইট ডেক ও জাহাজের কাঠামোর যাতে ক্ষতি না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কাজ করছে HSC। আগুনে উত্তাপ খুব বেড়ে গেলে, দমকলকর্মীরা সেক্ষেত্রে জাহাজে থেকে কাজ করতে পারবেন না। তাই ওই রণতরিকে ঠান্ডা রাখতে হচ্ছে।

রক্ষণাবেক্ষণের জন্যই সান দিয়েগোর শিপইয়ার্ডে ছিল ওই রণতরিটি। রক্ষণাবেক্ষণে শেষে সেখান থেকে এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান নিয়ে ওই রণতরির দক্ষিণ চিন সাগরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই দুর্ঘটনা।

জানা গিয়েছে, ইউএসএস বনহোম রিচার্ডে মার্কিন নৌবাহিনীর এক হাজার সদস্য থাকার কথা থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শিপইয়ার্ডে থাকায়, জাহাজটিতে দুর্ঘটনার সময় ১৬০ জন ক্রু ছিলেন। ফায়ার সার্ভিসের ৪০০-র বেশি কর্মী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে চলেছেন।

সূত্রের খবর, ১২ জুলাই শিপইয়ার্ডে মার্কিন বাহিনীর একটি ছোট জাহাজে বিস্ফোরণ থেকে আগুন ধরে যায়। সেখান থেকে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে মার্কিন বাহিনীর দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরি ইউএসএস বনহোম রিচার্ডে। কিন্তু, আদতে ছোট জাহাজ থেকেই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত কি না, সেসম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তদন্ত করে দেখছে মার্কিন নৌসেনা।

জাহাজে আগুন লাগার পরপরই অবশ্য সেখান থেকে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

পরের খবর