অ্যাপশহর

চিনের ‘ন্যাশনাল ডে’তে বিক্ষোভকারীদের নিগ্রহ

চিনের কমিউনিস্ট শাসনের ৭০তম বর্ষপূর্তি। মঙ্গলবার দিনটায় যে বড়সড় কিছু অশান্তি হতে চলেছে, তা আগে থেকেই আশঙ্কা করেছিল হংকং। হল-ও তাই।

EiSamay.Com 2 Oct 2019, 10:38 am
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: চিনের কমিউনিস্ট শাসনের ৭০তম বর্ষপূর্তি। মঙ্গলবার দিনটায় যে বড়সড় কিছু অশান্তি হতে চলেছে, তা আগে থেকেই আশঙ্কা করেছিল হংকং। হল-ও তাই। আপাত শান্ত প্রতিবাদ মিছিল শেষমেশ পরিণত হল হিংসাত্মক সংঘর্ষে। এবং গত চার মাসে শত বিরোধিতা সত্ত্বেও যা হয়নি, সেটি-ই হল এ দিন। পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এবং সে গুলি বুকে লাগায় জখম এক বিক্ষোভকারী।
EiSamay.Com Protesters harassed in Chinas National day
নিগ্রহের অভিযোগ।


চার মাস ব্যাপী বিক্ষোভে এর আগে একাধিক বার হিংসাত্মক হতে দেখা গিয়েছে প্রশাসনকে। কখনও কাঁদানে গ্যাস, কখনও রবার বুলেট ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। তাতে গুরুতর জখমও হয়েছেন অনেকে। কিন্তু আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার এত দিন পর্যন্ত মূলত বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করতেই করেছে তারা। এ দিন হংকংয়ের সুয়েন ওয়্যান জেলায় এক বিক্ষোভকারীর আহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই বাকি এলাকার যাঁরা প্রতিবাদ দেখাচ্ছিলেন, তাঁরাও কিছুক্ষণের জন্য বাকরুদ্ধ হয়ে যান। এর কিছুক্ষণেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে সেই ছবি যাতে দেখা যায় রাস্তায় শুয়ে গোঙাচ্ছেন এক জন। রক্তে ভিজে যাচ্ছে তাঁর শরীর। সঙ্গে কাতরোক্তি, ‘আমাকে কেউ দয়া করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন, বুকে অসহ্য যন্ত্রণা।’ হংকংয়ের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, এ দিনের সংঘর্ষের জেরে সব মিলিয়ে আহতের সংখ্যা ১৫।

চিনের কমিউনিস্ট শাসনের ৭০তম বর্ষপূর্তিকে উৎসবের দিন হিসেবে পালন করতে চায়নি হংকং। বরং তাদের কাছে এটি শোকের দিন। তাই চিনের ‘ন্যাশনাল ডে’-কে সে ভাবেই স্মরণ করতে পুলিশি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সেন্ট্রাল হংকংয়ে এ দিন মিছিল করেন হাজার হাজার মানুষ। শহরের বাকি প্রান্তেও ভিড় করেন হাজার হাজার মানুষ। রিচার্ড হাং নামে এক প্রযুক্তিকর্মী বলেন, ‘চিনা কমিউনিস্ট পার্টি ইতিমধ্যেই বহু লক্ষ লক্ষ মানুষকে হয় খুন করেছে নয়তো জখম করেছে। আজ যদি আমরা রাস্তায় না নামতাম তাহলে কোনও দিনই নামার সুযোগ হত না।’

সকালের দিকেই অবশ্য ইঙ্গিত মিলছিল এ দিনের অশান্তি কঠোর হাতেই দমন করবে প্রশাসন। আমজনতার জন্য নিষিদ্ধ সরকারের আনুষ্ঠানিক পতাকা-উত্তোলন কর্মসূচি যেখানে আয়োজন করা হয়েছিল, তার ঠিক বাইরে সকালে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন একদল প্রতিবাদকারী। তাঁদের দমন করতে তখন পেপার স্প্রে ব্যবহার করে পুলিশ। তবে পরে সেন্ট্রাল হংকংয়ে মূল মিছিল শুরু হওয়ার পর প্রথম কয়েক ঘণ্টা সব শান্তই ছিল। বহু পরিবারের কর্তা-গিন্নি তাঁদের সন্তানদের নিয়ে তাতে সামিল হন। টেরেন্স নামে এক কর্মীর হাত ধরা ছিল তাঁর মেয়ের হাতে। তিনি বলেন, ‘দেখুন আমরা কিন্তু কোনও বর্ম পরে নেই। আমরা শুধু স্বাধীনতা চাই, চিনে থাকতে চাই না।’

পুলিশ প্রথমে বলপ্রয়োগ শুরু করে ছোট মিছিলগুলির উপর। সেন্ট্রাল হংকংয়ের মিছিলে হিংসাত্মক পথ নেওয়ার ব্যবহার আরও পরে। প্রথম কাদাঁনে গ্যাস ও জলকামান ছোড়ে পুলিশ। জবাবে মলোটভ ককটেল ছোড়েন বিরোধীরা, ব্যারিকেডে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তার পরেই আগ্নেয়াস্ত্র চালায় পুলিশ।

পরের খবর