অ্যাপশহর

সমুদ্রের জল শোধনে উদ্বেগ

এর বাইরে আরও একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। ডিস্যালাইনেশন প্লান্টগুলি ঘন লবণ জল (ব্রাইন) উৎপন্ন করছে। এই ব্রাইন আরও একবার ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে সমুদ্রে। গবেষকরা বলছেন, এমন ১৬ হাজার ডিস্যালাইনেশন প্লান্ট সারা পৃথিবীতে রোজ উৎপন্ন করছে টক্সিক স্লাজ বা বিষাক্ত কাদা।

EiSamay.Com 13 Dec 2019, 12:35 pm
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: এই মুহূর্তে জলের জন্য ওমানের মানুষ নির্ভর করছেন ডিস্যালাইনেশন প্লান্টের উপর। অর্থাৎ যেখানে সাগরের নোনা জল শোধন করে পানীয় জল তৈরি হয়। ওমান ছাড়া অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলির বিস্তীর্ণ এলাকা খটখটে রুক্ষ মরুভূমিতে ভর্তি। ফলে সমুদ্র থেকে পানীয় জল পাওয়া প্রায় মশা মারতে কামান দাগার মতো অবস্থা। বিপুল খরচ এবং পরিবেশের পক্ষেও অনুকূল নয়। মাস্কটের দক্ষিণে সুর শহরের বাসিন্দাদের জন্য এবং বাণিজ্যিক কারণে প্রয়োজনীয় জল আসছে বিশাল ডিস্যালাইনেশন প্লান্ট থেকে। এই প্লান্ট ৬ লক্ষ মানুষকে পানীয় জল জোগান দিচ্ছে। স্থানীয় এক বয়স্ক বাসিন্দা জানালেন, ‘আগে জীবন ছিল যন্ত্রণার। আমাদের কুয়ো ছিল, কিন্তু সেই কুয়োয় জল আসত ট্রাকে করে। ১৯৯০ সালের পর থেকে জল আসছে পাইপের মাধ্যমে। আর আমাদের জলের কোনও রেশনিং করতে হচ্ছে না।’
EiSamay.Com D3
সমুদ্রের জল শোধনে উদ্বেগ


কিন্তু জলের এই সুবিধা পেতে গিয়ে প্রভূত পরিমাণে কার্বন নির্গমন করতে হচ্ছে যা বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

এর বাইরে আরও একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। ডিস্যালাইনেশন প্লান্টগুলি ঘন লবণ জল (ব্রাইন) উৎপন্ন করছে। এই ব্রাইন আরও একবার ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে সমুদ্রে। গবেষকরা বলছেন, এমন ১৬ হাজার ডিস্যালাইনেশন প্লান্ট সারা পৃথিবীতে রোজ উৎপন্ন করছে টক্সিক স্লাজ বা বিষাক্ত কাদা। প্রতি ১ লিটার স্বচ্ছ জল পাওয়ার বিনিময়ে সমুদ্রে ফেলা হচ্ছে দেড় লিটার এমন বিষাক্ত লবণাক্ত কাদা। এই অতিরিক্ত লবণ সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার জলের তাপমাত্রা বাড়িয়ে তোলে এবং বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এর ফলে তৈরি হয় ‘ডেড জোন’ বা মৃত অঞ্চল।

এই অতিরিক্ত লবণাক্ত কাদা আরও বেশি টক্সিক হয়ে পড়ে সমুদ্রের জলকে লবণহীন করার সময় ব্যবহৃত রাসায়নিকের কারণে। ওমান-এর প্রতিবেশী দেশগুলি বেশি পরিমাণে ব্রাইন উৎপন্ন করে। সৌদি আরব (২২ শতাংশ), সংযুক্ত আরব আমিরশাহী (২০ শতাংশ), কুয়েত এবং কাতারের পরিমাণ এর চেয়ে কম। এই এলাকার উৎপাদিত সামগ্রিক ব্রাইনের পরিমাণ সারা বিশ্বের ৫৫ শতাংশ। রাষ্ট্রসঙ্ঘের ‘ইনস্টিটিউট অফ ওয়াটার এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হেলথ’ জানিয়েছে এই তথ্য। জানা গিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে পরিবেশের ক্ষতি বৃদ্ধি যেন আর না হয় তার জন্য নতুন পন্থা নিতে চলেছে এই সব ডিস্যালাইনেশন প্লান্ট।

পরের খবর

Worldসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল