অ্যাপশহর

মৃত্যু ১, জখম বহু, রক্তপাতেও দমছে না মায়ানমারের আন্দোলন

মৃত্যু রক্তপাত সত্ত্বেও দেশে গণতন্ত্র পুনরায় স্থাপনের জন্য লড়াইয়ের পথ থেকে সরছেন না আন্দোলনকারীরা...প্রতিবাদীদের সঙ্গে সেনার এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য বলে জানিয়েছে UN

EiSamay.Com 10 Feb 2021, 9:45 am
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: রক্তপাত সত্ত্বেও স্বৈরাচারী সেনার বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত আন্দোলনকারীদের। জনগণের ভোটে নির্বাচিত, গণতান্ত্রিক সরকারকে উপড়ে ফেলে মায়ানমারের ক্ষমতার দখল নিয়েছে সেনাবাহিনী। এই সামরিক অভ্যুত্থানে সেনার হাতে বন্দি হন নেত্রী আং সান সুচিকে (Aung San Suu Kyi ) ও তাঁর অনুগামীরা। গণতন্ত্রের এমন অপমানে সরব সাধারণ জনগণ।
EiSamay.Com myanmar anti coup
বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান থেকে গুলি


বুধবার গণতন্ত্রের ইতিহাসে সবথেকে হিংসাত্মক দিন দেখল মায়ানমার। বিক্ষোভ রুখতে ৩০ শহরে কার্ফু জারি করেছে সেনা। নিষিদ্ধ ফেসবুক, টুইটার-সহ সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ। তা সত্ত্বেও বন্ধ হয়নি প্রতিবাদের মুখ। সুচির মুক্তির দাবি নিয়ে বার্মিজ সেনার স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রাজধানী নে পি দ্য-এর পথে নামেন লাখ লাখ মানুষ। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান থেকে গুলি সবই ব্যবহার করে পুলিশ। সংবাদ সংস্থা সূত্রে, মাথায় গুলি লেগে মৃত্যু হয়েছে এক বিক্ষোভকারীর, জখম বেশ কয়েকজন। তা সত্ত্বেও গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে প্রতিবাদের পথ থেকে এক চুলও সরছেন না আন্দোলনকারীরা তা স্পষ্ট।

জানা গিয়েছে, বুধবার সাধারণ মানুষের সঙ্গে সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ১০০-এরও বেশি সরকারি কর্মচারী আইন অমান্য কর্মসূচিতে অংশ নেন। মিছিলে ছিলেন সরকারি চিকিৎসক, শিক্ষক থেকে রেলের কর্মী সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষ। রাজধানী নে পি দ্য-এ সেই মিছিলকে ছত্রভঙ্গ করতে হাওয়ায় গুলি চালায় পুলিশ। সেই গুলিই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে এক আন্দোলনকারীর মাথায় লাগলে তৎক্ষণাৎ মৃত্যু হয় তাঁর। প্রত্যক্ষদর্শী এক সরকারি চিকিৎসক জানিয়েছেন, পুলিশের চালানো রবারের গুলিকেও অনেকে জখম হয়েছেন।

শুধু নে পি দ্য-এ নয়, মায়ানমারের ম্যান্ডেলে সহ বাকি শহরেও গণতন্ত্রকামী মানুষের আন্দোলন রুখতে একই পন্থা নিয়েছিল সেনা। কোথাও কোথাও থেকে আন্দোলনকারীদের তরফেও পাল্টা পাথর ও ইঁট ছোড়ার খবর মিলেছে। গণতন্ত্রের দাবিতে চলা আন্দোলনকে যে পথে দমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ।

‘রবীন্দ্রনাথের চেয়ারে বসিনি’, সংসদে সাফাই শাহের

আন্তর্জাতিক মঞ্চে এক ঘরে মায়ানমার সেনা। সে দেশের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা করেছে নিউজিল্যান্ড। মায়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউসও। সেনাকে অবিলম্বে হিংসার পথ বন্ধ করে দেশে গণতন্ত্রের শাসন ফেরানোর কথা বলেছে আমেরিকা। চিন ছাড়া সমস্ত দেশই সু চি-র মুক্তির দাবি জানায়।

পয়লা ফেব্রুয়ারি ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (NLD) নেত্রী আং সান সুচিকে (Aung San Suu Kyi ) আটক করে মায়ানমারের দখল নেয় 'জুন্টা'। বন্দি প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টও। নভেম্বর মাসে নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয় সুচির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির। কিন্তু, ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলে সোচ্চার হয় সেনাবাহিনী। এ নিয়ে শাসকদল বনাম সেনা দ্বন্দ্ব বাধে। এরপরই সে দেশে সেনা অভ্যুত্থানের আশঙ্কা করা হচ্ছিল। শেষমেশ সেই আশঙ্কাই সত্যি হয় ।

'উপরওয়ালা খুশি হবেন', সন্তানের গলার নলি কেটে বললেন মা!

উল্লেখ্য, নোবেলজয়ী ৭৫ বছর বয়সী সুচি বিপুল ভোটে জিতে ২০১৫ সালে ক্ষমতায় আসেন। গতবছর নির্বাচনে মায়ানমার সংসদের দুই কক্ষ মিলিয়ে মোট ৪৭৬টি আসনের মধ্যে ৩৯৬টি আসনই দখল করে শাসকদল।

এই সময় ডিজিটাল এখন টেলিগ্রামেও। সাবস্ক্রাইব করুন, থাকুন সবসময় আপডেটেড। জাস্ট এখানে ক্লিক করুন

পরের খবর