অ্যাপশহর

কানাডাবাসী তামিমই কি গুলশান হানার মূল চক্রী?

গুলশান হামলার মূল চক্রীকে চিহ্নিত করে ফেলল বাংলাদেশ সরকার৷ কানাডার নাগরিক, জন্মসূত্রে বাংলাদেশি তামিম আহমেদ চৌধুরীকেই ওই নারকীয় হত্যালীলার মূল চক্রী বলে মনে করছে বাংলাদেশ সরকার৷

EiSamay.Com 30 Jul 2016, 11:18 am
এই সময়, নয়াদিল্লি: গুলশান হামলার মূল চক্রীকে চিহ্নিত করে ফেলল বাংলাদেশ সরকার৷ কানাডার নাগরিক, জন্মসূত্রে বাংলাদেশি তামিম আহমেদ চৌধুরীকেই ওই নারকীয় হত্যালীলার মূল চক্রী বলে মনে করছে বাংলাদেশ সরকার৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা এই আইএস জঙ্গির সন্ধানে ভারত সরকারের সহযোগিতাও চেয়েছে শেখ হাসিনার সরকার৷
EiSamay.Com master mind of gulshan attack
কানাডাবাসী তামিমই কি গুলশান হানার মূল চক্রী?


ঢাকার মিরপুরের মডেল থানায় গুলশান হত্যালীলার মূল ষড়যন্ত্রী তামিম ও আরও ৯ জন পলাতক জেএমবি জঙ্গির বিষয়ে একটি মামলাও করেছে বাংলাদেশ সরকার৷ গুলশানের ঘটনার পর বাংলাদেশ সরকারের তদন্তকারী আধিকারিকরা সৌম্যদর্শন তামিম সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য হাতে পান৷ জানা যায়, মূলত কানাডার অধিবাসী তামিম মাঝে মাঝেই বাংলাদেশে আসত৷ কানাডায় থাকাকালীন শেখ আবু ইব্রাহিম আল হানিফ নামে নিজেকে পরিচয় দিত তামিম৷ ২০১৩ সালে কানাডা থেকে উধাও হওয়ার পর বাংলাদেশ-সহ এশিয়ার কোন কোন দেশে তামিম গিয়েছে, সে বিষয়ে এখনও কোনও তথ্য হাতে পাননি গোয়েন্দারা৷ কানাডায় থাকাকালীন সেখানকার পুলিশ তাকে বার দুয়েক জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল৷ কানাডা থেকে সিরিয়ায় পালিয়ে গিয়ে জঙ্গি সংগঠন আইএসে যোগদান করা দুই ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক থাকার জেরে টরেন্টো শহরের পুলিশের জেরার মুখে পড়েছিল তামিম৷

গুলশানের হোলে আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস হত্যালীলার পরে হন্যে হয়ে যখন মূল চক্রীর সন্ধানে বাংলাদেশ সরকার হাতড়ে বেড়াচ্ছে, তখনই ইন্টারপোলের সূত্র ধরে তাদের কাছে এই তামিমের সঙ্গে বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাতুল -বাংলাদেশ বা জেএমবির যোগাযোগের প্রত্যক্ষ প্রমাণের তথ্য আসে৷ এরই মাঝে, গত মঙ্গলবার ঢাকার কল্যাণপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ৯ জন সন্দেহভাজন জঙ্গির মৃত্যুর পরে তামিম আহমেদই যে গুলশানের হামলার মূল চক্রী, সে বিষয়ে আরও বেশ কিছু প্রমাণ হাতে পায় বাংলাদেশ সরকার ৷

ঘটনাস্থল থেকে গুলিতে আহত হয়ে গ্রেন্তার জঙ্গি ও জেএমবির সক্রিয় সদস্য রাকিবুল হাসান ওরফে রেগানকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে তামিমের ভূমিকার কথা৷ পুলিশ এবং গোয়েন্দাদের জেরায় ধৃত রাকিবুল জানায় কানাডা থেকে নিয়মিত ঢাকায় যাতায়াত করত তামিম৷ কল্যাণপুরে জঙ্গিদের লুকনো ডেরাতেও প্রায়ই হাজিরা দিত সে৷ জেএমবিকে সব দিক থেকে আর্থিক সাহায্য করত তামিম, জেরায় জানিয়েছে রাকিবুল৷ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে চিকিত্সাধীন রাকিবুলকে লাগাতার জেরা করে তামিম সম্পর্কে আরও তথ্য হাতে পাওয়া যাবে মনে করছে বাংলাদেশ পুলিশ৷ বাংলাদেশের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, কিছুদিন আগেই জেএমবি দু-ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল৷ একটি শাখার নেতৃত্বে ছিল জেলে থাকা জঙ্গি ভাবধারার প্রচারক মৌলানা সইদুর রহমান৷ অপর শাখাটির নেতৃত্বে ছিল তামিম৷

এই দ্বিতীয় শাখাটিই গুলশান হামলার সঙ্গে জড়িত, এমন প্রমাণ পেয়েছেন গোয়েন্দারা৷ কল্যাণপুরে নিহত জঙ্গি শেহজাদ রাউফ ওরফে অর্ক গুলশানের হামলায় নিহত নিব্রাস ইসলামের বন্ধু ছিল বলেও জেনেছেন গোয়েন্দারা৷ তামিম ঢাকার কল্যাণপুরে জঙ্গিদের লুকনো ডেরায় গিয়ে জেএমবির সদস্যদের আইএসের ভাবধারায় জেহাদে উদ্বুদ্ধ করত বলেও জেরায় বলেছে রাকিবুল৷ তামিমের নেতৃত্বাধীন জেএমবির এই শাখাটির সঙ্গে আইএসের যোগাযোগের প্রকৃষ্ট প্রমাণ বাংলাদেশ সরকারের হাতে এসেছে৷ কিন্ত্ত সরকারি ভাবে তা এখনও সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়নি৷ মূলত দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা ভেবে, বাংলাদেশ সরকার আরও নিশ্চিত হয়ে এই বিষয়ে এগোতে চাইছে৷

পরের খবর

Worldসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল