অ্যাপশহর

৩০ বছর ধরে শিকলে বাধা, অবশেষে মুক্তির স্বাদ পেল অসুস্থ গজরাজ

দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে পায়ে শিকল বাধা থাকায় হাতিটি মানসিক দিক থেকেও অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। হাতির শরীর ও মন কোনওটাই বোঝার মতো অবস্থায় ছিল না কর্তৃপক্ষ। চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ানোর জন্য ওই হাতিটির উপর বছরের পর বছর ধরে নির্মমভাবে অত্যাচার চালানো হয়েছে। কম্বোডিয়ার ২৫০০০ একর বিশাল পশু সংরক্ষণ কেন্দ্রে তাকে নিয়ে যাওয়া হবে। পরের মাসেই হাতিটি নতুন জীবন শুরু করতে পারবে বলে জানা গিয়েছে।

EiSamay.Com 20 Aug 2020, 5:34 pm
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: অবশেষে স্বাধীনতা কী, মুক্তির আনন্দ কী, তার স্বাদ পেতে চলেছে প্রায় ৩৫ বছর পর। বছরের পর বছর পায়ে লোহার শিকল বাধা থাকত গজরাজের। বেঁচে থেকেও না বাঁচার জীবন কাটিয়েছে জীবনের ৩০টা বছর। এবার তার নতুন ঠিকানায় নতুন জীবন শুরুর পালা।
EiSamay.Com Jumbo
ছবিটি প্রতীকী


পাকিস্তানের ইসলামাবাদে চিড়িয়াখানায় শিকল দিয়ে বাধা থাকত কাভান। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের ঔদাসীন্য ও অমানবিক মনোভাবকে কটাক্ষ করে বহু পশুপ্রেমী হাতির মুক্তি নিয়ে মামলা দায়ের করেছিলেন। দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে পায়ে শিকল বাধা থাকায় হাতিটি মানসিক দিক থেকেও অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। হাতির শরীর ও মন কোনওটাই বোঝার মতো অবস্থায় ছিল না কর্তৃপক্ষ। চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ানোর জন্য ওই হাতিটির উপর নির্মমভাবে অত্যাচার চালানো হয়েছে। পরিচর্চা বলতেও যত্‍সামান্য। ঘাস-পাতা ছাড়া ওই হাতির কপালে কিছুই জোটেনি। অবহেলায়, পর্যাপ্ত যত্ন না পেয়ে হাতিটি শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

অবস্থার আরও অবনতি হয় যখন ওই হাতির সঙ্গিনী মারা যায়। কয়েকবছর আগেই তার একমাত্র সঙ্গিনীর মৃত্যু হয়। এরপর থেকে হাতির মুক্তির দাবিতে ও চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের অমানবিক আচরণকে তুলে ধরে আদালত পিটিশন জমা হতে থাকে। সেই পিটিশনের পরই গত মে মাসে আদালত ওই হাতির মুক্তির নির্দেশ দেয়। বলা হয়, হাতিটিকে মুক্ত করে কোনও বনাঞ্চলে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হোক। যেখানে ওই বৃহত্‍ প্রাণীটি সঠিক আহার পাবে, পরিচর্চা পাবে, খোলামেলা জায়গায় বিচরণ করতে পারবে, এমন জায়গায় তাকে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হোক। সেই মতো, কম্বোডিয়ার ২৫০০০ একর বিশাল পশু সংরক্ষণ কেন্দ্রে তাকে নিয়ে যাওয়া হবে। পরের মাসেই হাতিটি নতুন জীবন শুরু করতে পারবে বলে জানা গিয়েছে।

পাকিস্তানের চিড়িয়াখানায় শিকলে বাধা গজরাজ



৫০ বছর পায়ে শিকল, প্রায় পাগল অসুস্থ বন্দি হাতির অবশেষে মুক্তি


ফ্রি দ্য ওয়াইল্ড কো ফাউন্ডার গিনা নেল্থোরপ জানিয়েছেন, গত পাঁচ বছর ধরে লাগাতার প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছিল ফ্রি দ্য ওয়াইল্ড ও কাভান। এই হাতিটিই ছিল পাকিস্তানের শেষ এশিয়ান হাতি। কিন্তু শুধুমাত্র পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে নয়, একটি প্রাণী হিসেবে কাভানের মুক্তির দরকার ছিল। বর্তমানে তারাই হাতিটির পরিচর্চার দায়িত্ব নিয়েছে।

পাকিস্তানের ঘটনা বর্তমান বিশ্বকে নাড়িয়ে দিলেও, এমন ঘটনা ভারতেও ঘটেছে। মধ্যপ্রদেশের সাতারার যমুনা দেবী মন্দিরের কাছে, জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট স্পট শ্রী ভবানী মিউজিয়ামে, লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল ৬৩ বছরের বুড়ো গজরাজকে। PETA-র একটি আবেদনে ও বনমন্ত্রীর উদ্যোগে তাঁকে নরক থেকে উদ্ধার করা গিযেছে। মথুরার হাতি সংরক্ষণ ও সেবা কেন্দ্রে ঠাঁই হয়েছে গজরাজের। ৫০ বছর পর সে মুক্তির স্বাদ নিয়েছে। সংরক্ষণ কেন্দ্রের সহস্যদের সেবায় মানসিক দিক থেকে অনেকটাই উন্নতি করেছে সে। সুস্থ জীবনের স্বাদ পেয়ে শান্তিতে রয়েছে পাগলপ্রায় এই বৃহত্‍ প্রাণীটি।

পরের খবর

Worldসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল