অ্যাপশহর

ঘরের টান, ডানায় ভর করে ১৬টি দেশ পেরিয়ে নিজের ঠিকানায় পৌঁছল পরিযায়ী কোকিল!

ওনন নামের কোকিলের ডানায় ‘প্ল্যাটফর্ম ট্রান্সমিটেড টার্মিনাল’ ব্যাকপ্যাক লাগিয়ে ২০১৯ সালে জুন মাসে মঙ্গোলিয়া থেকে ছেড়ে দেয় বিজ্ঞানীরা। কাকের বাসায় ডিম পাড়ার জন্য তার কুখ্যাতিরও শেষ নেই। কিন্তু সেই কোকিলেরও থাকে ঘরে ফেরার টান?

EiSamay.Com 11 Sep 2020, 8:34 pm

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: বসন্ত। কথাটি শুনলেই ফুলের ঘ্রাণ এসে দোলা দেয় মনে। মনে হয় ফুলেলময় দিনের কথা। আর যার কথা মনে আসে তা হল কোকিল। বসন্তে যে কোকিল ডেকে ডেকে মাতিয়ে তোলে চারপাশ, বসন্তের পর কোথায় যায় তারা? ওদের তো নির্দিষ্ট কোনও বাসা নেই, কাকের বাসাতে ডিম পাড়ে। সমধুর কণ্ঠস্বর ছাড়া আর কিছুই তেমন থাকে না কোকিলের। তাই কোকিলকে নিয়ে সেভাবে মাথাব্যথা নেই কারোর। তবে এক অদ্ভুত ঘটনার সাক্ষী রইল মঙ্গোলিয়ার বিজ্ঞানীরা।
EiSamay.Com Cuckoo
কোকিল


ওনন নামের কোকিলের ডানায় ‘প্ল্যাটফর্ম ট্রান্সমিটেড টার্মিনাল’ ব্যাকপ্যাক লাগিয়ে ২০১৯ সালে জুন মাসে মঙ্গোলিয়া থেকে ছেড়ে দেয় বিজ্ঞানীরা। তখন তার গলায় পড়ানো ছিল ছোট্ট একটি ট্র্যাকার যন্ত্র। উপগ্রহ সংযোগের মাধ্যমে তার গতিবিধি পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন বিজ্ঞানীরা। সেখানে ধরা পড়ে ১৬টি দেশের সীমানা পার করেছে এই ওনন। এমনকি গত বসন্তে ভারতের গুজরাতেও প্রবেশ করেছে সে। ট্রাক্যারে দেখা গিয়েছে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারতেই ছিল সে। তার পর যায় পাকিস্তান ইথিওপিয়া। শেষ পর্যন্ত জুনের ২৭ তারিখ আবারও মঙ্গোলিয়ায় ফিরে গেল ওনন। আর এই ঘটনাতেই রীতিমতো চমকে গিয়েছেন প্রাণী বিশেষজ্ঞরা।

কোকিল যে একটি পরিযায়ী গোত্রের পাখি, একথা সকলেই জানি। কাকের বাসায় ডিম পাড়ার জন্য তার কুখ্যাতিরও শেষ নেই। কিন্তু সেই কোকিলেরও থাকে ঘরে ফেরার টান? অন্তত এই ঘটনায় সেরকমই দেখলেন বিজ্ঞানীরা। ফিরে আসার টান অগ্রাহ্য করতে পারেনি সে। অবশ্য ওননের সঙ্গে আরও অনেক কোকিলের গলায় ট্র্যাকার লাগানো হয়েছিল, তাদের কোনও সন্ধান নেই এখনও পর্যন্ত। তবে এক্ষেত্রে কোনোও প্রাকৃতিক দুর্যোগে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে পারে। অথবা কোনোও কারণে তাদের মৃত্যুও হতে পারে। এই ঘটনা কোকিলের চরিত্র নিয়ে আবারও গবেষণার সুযোগ এনে দিল বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

প্রসঙ্গত, গত বছর রাজাভাতখাওয়া থেকে পাকিস্তান ঘুরে এসেছিল ছয় শকুন। শকুন সংরক্ষণ কেন্দ্র থেকে ছাড়া ছ’টি হিমালয়ান গ্রিফণ প্রজাতির শকুনরা বহিরাগতদের নিয়ে ঘরে ফেরায় উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন বনকর্তারা। গত বছর ১৭ ডিসেম্বর বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের রাজাভাতখাওয়া শকুন সংরক্ষণ কেন্দ্র থেকে উন্মুক্ত করা ওই শকুনরা বহিরাগত শকুনদের খাদ্য ভাণ্ডারের খোঁজ দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছে। উন্মুক্ত হওয়া ওই ছ’টি শকুনের মধ্যে দুটির ডানায় ‘প্ল্যাটফর্ম ট্রান্সমিটেড টার্মিনাল’ ব্যাকপ্যাক লাগানো ছিল। উপগ্রহ সংযোগের মাধ্যমে তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়।দেখা যায় কখনও নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ আবার কখনও সুদূর পাকিস্তান অথবা কাজাকিস্তানে উড়ে গিয়ে দলবল নিয়ে তারা ফিরে এসেছে বক্সা অথবা জলদাপাড়ায়।

এই সময় ডিজিটাল এখন টেলিগ্রামেও। সাবস্ক্রাইব করুন, থাকুন সবসময় আপডেটেড। জাস্ট এখানে ক্লিক করুন

খবরটি ইংরেজিতে পড়ুন

পরের খবর