অ্যাপশহর

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে ফ্রান্সে কড়া কারফিউ, লঙ্ঘনে অর্থদণ্ড

ইউরোপে ফের জাঁকিয়ে বসছে করোনা। নতুন করে সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত। পরিস্থিতি পর্যালোচনার পরপরই গোটা দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাকরন। সেইসঙ্গে প্রতিরাতে জারি কারফিউ।

EiSamay.Com 15 Oct 2020, 1:49 am
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত হারে বাড়তে থাকায় ফ্রান্সে কারফিউ জারি করলেন প্রেসিডেন্ট এমমানুয়েল ম্যাকরন। ফরাসি প্রেসিডেন্টের ঘোষণা অনুযায়ী প্যারিস ছাড়াও আরও আটটি শহরে রাতের বেলায় কারফিউ জারি থাকবে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতিদিন রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত কারফিউ বলবত্‍‌ থাকবে। সামনের শনিবার (১৭ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়ে যাবে কারফিউ। কমপক্ষে চার সপ্তাহ এ ভাবেই চলবে। টেলিভিশন সাক্ষাত্‍‌কার কারফিউ ঘোষণা করে ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রত্যেককে কঠোর ভাবে সরকারি এই নির্দেশ মেনে চলতে হবে। রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত কেউ-ই বাড়ির বাইরে বেরোতে পারবেন না। শুধু কারফিউ নয়, সেইসঙ্গে জরুরি অবস্থাও ঘোষণা করেছেন ম্যাকরন।
EiSamay.Com thumbs_b_c_14c8604cd8d1613fad4bf4a9a9ea41af
ফ্রান্সে ফের সংক্রমণ


ইউরোপ জুড়ে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হেনেছে। যে কারণে ইউরোপের দেশগুলিতে দ্রুত হারে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। ইতালি থেকে ফ্রান্স, স্পেন থেকে নেদারল্যান্ড-- সর্বত্র এক চিত্র। ফ্রান্সে গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার) ২২,৯৫১টি পজিটিভ কেস ধরা পড়ে।

করোনার এই দ্বিতীয়ে সুনামির মোকাবিলায় ইউরোপের দেশগুলি নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করতে শুরু করেছে। নেদারল্যান্ডে আংশিক লকডাউন হচ্ছে। রোজ রাত ১০টা থেকে লকডাউন হচ্ছে। ক্যাফে থেকে রেস্তোরাঁ ১০টার আগেই সব বন্ধ। কোভিড নতুন করে মাথাচাড়া দেওয়ায় স্পেনের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল কাতালোনিয়ায় আগামী ১৫ দিনের জন্য পানশালা, রেস্তোরাঁ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) থেকেই এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।

সংক্রমণ বাড়ায় চেক প্রজাতন্ত্রে ফের স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ সেখানকার পানশালও। একটানা দু-সপ্তাহ ধরে ইউরোপের দেশগুলিতে সর্বোচ্চ হারে সংক্রমণ হচ্ছে। প্রতি এক লক্ষে পজিটিভ কেস ৫৮১.৩। গোটা ইউরোপে সংক্রমণের হার বাড়ছে। বুধবার রাশিয়ায় ১৪,৩২১ পজিটিভ কেস ধরা পড়ে। একদিনে করোনায় মারা গিয়েছেন আরও ২৩৯ জন।

আরও পড়ুন: টার্গেট ভারত? চিনা সেনাবাহিনীকে যুদ্ধ-প্রস্তুতির নির্দেশ প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের

প্রেসিডেন্ট ম্যাকরন টেলিভিশন ভাষণে বলেন, করোনাভাইরাসের এই ঢেউ সম্পূর্ণ আলাদা। কারণ, নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে সংক্রমণ সীমাবদ্ধ নেই। গোটা দেশে প্রতিটি কোনায় সংক্রমণ ছড়িয়েছে। প্যারিস ছাড়াও রাতে কারফিউ থাকবে মার্সিলে, লিয়ন, লিলি, সেন্ট-এটিন, রুউন, টুলাউস, গ্রেনোবল এবং মন্টপিলিয়ারে। ফরাসি প্রেসিডেন্টের ইঙ্গিত প্রয়োজনে কারফিউয়ের মেয়াদ ছ-সপ্তাহ পর্যন্ত বাড়তে পারে। ম্যাকরন পরিষ্কার জানিয়ে দেন, খুব প্রয়োজন ছাড়া কারফিউয়ের সময় কেউ বাড়ির বাইরে পা রাখতে পারবেন না। তার আগে প্রয়োজনীয় যাবতীয় কাজ সেরে ফেলতে হবে। তবে, দিনে লোকজন এক অঞ্চল থেকে আর এক অঞ্চলে যেতে পারবে। সে ক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে না। খোলা থাকবে স্কুলও।

আরও পড়ুন: হাইওয়েতে গাড়ির মধ্যেই পুড়ে মৃত্যু এনসিপি নেতার! কী ভাবে হল এমন?

কারফিউ ঘোষণার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে একটা ব্রেক দরকার। তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত। নির্দেশ লঙ্ঘন করলে আর্থিক জরিমানার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। জরিমানার অঙ্ক ১৩৫ ইউরো বা ১২১ পাউন্ড। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১১,৬৩০ টাকা। সেইসঙ্গে আরও অনেক বিধিনিষেধও আরোপ হয়েছে। খুব বড় বাড়ি ছাড়া ছ-জনের বেশি জড়ো হওয়া যাবে না।

প্রেসিডেন্টের বার্তা, 'সমাধান খুঁজতে আপনাদের প্রত্যেককে আমার দরকার। আমাদের একে অপরকেও দরকার রয়েছে। সম্মিলিত ভাবেই আমরা সমাধানের রাস্তা পাব।' জানা গিয়েছে, ফ্রান্সে এখনও ৯,১০০ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। জুনের পর এত সংখ্যক কোভিজড রোগী হাসপাতালে ছিল না।

এই সময় ডিজিটাল এখন টেলিগ্রামেও। সাবস্ক্রাইব করুন, থাকুন সবসময় আপডেটেড। জাস্ট এখানে ক্লিক করুন

পরের খবর