অ্যাপশহর

করোনার অ্যান্টিবডির স্থায়িত্ব কি ৩ মাসেরও কম, দাবি গবেষণায়

একবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হলেও তার স্থায়িত্ব খুব বেশি দিন হয় না। একাধিক গবেষণায় আগেই উঠে এসেছে এমনই তথ্য। ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনের সাম্প্রতিক গবেষণাও একই দাবি করল।

EiSamay.Com 23 Jul 2020, 10:14 am
এই সময়: একবার করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হলেও তার স্থায়িত্ব খুব বেশি দিন নয়। এর আগে একাধিক গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য। ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনের সাম্প্রতিক গবেষণা সেই তালিকায় নবতম সংযোজন। ফলে করোনার বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে ওঠা ইমিউনিটি যে খুব দীর্ঘস্থায়ী নয়, তার প্রমাণ ক্রমেই জোরালো হচ্ছে চিকিৎসাবিজ্ঞানে।
EiSamay.Com antibodies of coronavirus stays less than 3 months in human body, claims study
প্রতীকী ছবি।


সাম্প্রতিক গবেষণায় ৩৪ জন এমন ব্যক্তিকে বাছা হয়েছিল, যাঁরা করোনা আক্রান্ত হলেও উপসর্গ ছিল মৃদু। ভেন্টিলেশন বা অক্সিজেন সাপোর্ট ছাড়াই সুস্থ হয়ে উঠেছেন তাঁরা। এই ৩৪ জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে চলে অ্যান্টিবডি টেস্ট। প্রথম নমুনা সংগৃহীত হয় উপসর্গ দেখা দেওয়ার ৩৭ দিনের মাথায়, আর দ্বিতীয়টি ৮৬ দিনের মাথায়। তাতে দেখা গিয়েছে, প্রথমবার শরীরে যে পরিমাণ অ্যান্টিবডি উপস্থিত ছিল, দ্বিতীয় বার পরীক্ষার সময় তা কমে গিয়েছে অনেকটাই। যার অর্থ, তিন মাসের মধ্যেই মারাত্মক ভাবে কমে যাচ্ছে ইমিউনিট। এবং যে হারে কমছে, তাতে হয়তো, কিছু দিনের মধ্যেই তা তলানিতে চলে আসবে।

করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়ে যখন সারা দেশে গবেষণা চলছে, তখন অ্যান্টিবডির স্থায়িত্ব নিয়ে এই রিপোর্ট স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে, ভ্যাকসিনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তা হলে কতদিন স্থায়ী হবে? কেউ করোনার মোকাবিলা করে সুস্থ হয়ে ওঠার পর ফের কি সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকছে?

এই প্রশ্নে এখনই নিরাশ হতে নারাজ ইমিউনোলজি বিশেষজ্ঞ দিপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, 'অ্যান্টিবডি ২-৩ মাসে কমে যাচ্ছে মানেই দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে, এমনটা কিন্তু নয়। বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে শক্তিশালী টি-সেল মেমোরি তৈরি হয়, সুতরাং অ্যান্টিবডি ছাড়া ইমিউন সিস্টেম কোনও প্রতিরোধ দিতে পারবে না, তা ভাবা উচিত নয়। গত সাত মাসে চিন থেকে রি-ইনফেকশনের রিপোর্ট নেই, ধরেই নেওয়া যায় অন্তত সাত মাস এই প্রতিরোধ থাকছে।' আর এই টি-লিম্ফোসাইট মেমোরি বাড়ানোর উপরই জোর দিচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-চিকিৎসক সিদ্ধার্থ জোয়ারদার। তাঁর কথায়, 'বিভিন্ন গবেষণা অ্যান্টিবডির স্থায়িত্ব নিয়ে এমন তথ্য দিচ্ছে বলেই আমাদের টি-সেল ভ্যাকসিনের কথা ভাবতে হবে। অর্থাৎ, এমন ভ্যাকসিন, যা দেহের টি-লিম্ফোসাইট মেমোরিকে বাড়াবে, আর সেটাই ভবিষ্যতে এই রোগ মোকাবিলায় কার্যকর হবে।'

বিজ্ঞানীরাও এখনই এই গবেষণার ভিত্তিতে কোনও উপসংহারে আসতে নারাজ। সম্প্রতি সুইডেনের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও জানিয়েছেন, একবার করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর অন্তত ছ'মাসের জন্য সংক্রমণের সম্ভাবনা নেই। আর তাঁদের এই বক্তব্য টি-সেল মেমোরির স্থায়িত্বের উপর ভিত্তি করেই। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন গবেষকরাও টি-সেল নিয়ে আশার কথা শুনিয়েছেন। ফলে, অ্যান্টিবডি হ্রাসেই নিরাশ হতে রাজি নন বিশেষজ্ঞরা।

পরের খবর

Worldসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল