অ্যাপশহর

বৃহস্পতি সন্ধ্যায় কাঁপন নেপালেও!

এই ঘটনায় এখনও কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি। ভারতেও কোনও আতঙ্ক ছড়ায়নি বলেই খবর। প্রতিবছর ৪০-৫০ মিমি হারে হিমালয় এলাকায় ভারত ও ইউরেশিয়া প্লেটের সংঘাত হয়। এর জেরেই এই কম্পন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

EiSamay.Com 26 Sep 2019, 10:25 pm
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: বৃহস্পতিবার দুপুরেও ফের একবার কেঁপেছে পাক অধিকৃত কাশ্মীর। সন্ধ্যায় কম্পন কাঁপিয়ে দিয়ে গেল নেপালকেও। যদিও, রিখটার স্কেল জানান দিচ্ছে, কম্পনের তীব্রতা মৃদুই ছিল। মৌসম ভবন জানাচ্ছে, হিমালয়ের এই দেশটিতে এদিন সন্ধে ৬টা ৩৪ মিনিটে ৪.৩ কম্পাঙ্কের তীব্রতা ধরা পড়েছে। এখনও পর্যন্ত কোনও ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির খবর জানা যায়নি।
EiSamay.Com Nepal


বৃহস্পতিবার দুপুরে মৃদু কম্পনে কেঁপে ওঠে ভারত-পাক সীমান্ত। এদিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ এই কম্পন টের পাওয়া যায়। রিখটার স্কেলে ৪.৭ মাত্রার কম্পন ধরা পড়ে। যার জেরে জম্মুর বিস্তীর্ণ এলাকা ছাড়াও পঞ্জাব ও নয়াদিল্লিতে কম্পন অনুভূত হয়। আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভে জনিয়েছে, এদিনের ভূমিকম্পের উত্‍সস্থলও ছিল মিরপুর। গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার।

এই ঘটনায় এখনও কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি। ভারতেও কোনও আতঙ্ক ছড়ায়নি বলেই খবর। প্রতিবছর ৪০-৫০ মিমি হারে হিমালয় এলাকায় ভারত ও ইউরেশিয়া প্লেটের সংঘাত হয়। এর জেরেই এই কম্পন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

২০১৫ সালের এপ্রিলে নেপালের ভূমিকম্প আক্ষরিক অর্থেই ছিল ভয়াভব। নেপালের সময় অনুযায়ী, সকাল ১১.৫৬ মিনিটে ভূমিকম্প আঘাত হানে। মারা গিয়েছেন ৯০০০মানুষ। আহত হয়েছিলেন ২২ হাজারেরও বেশি।

ইন্দোনেশিয়ায় জোরালো ভূমিকম্প, মৃত কমপক্ষে ২০

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু ও পোখারার মাঝখানে লামজুং এলাকায় ছিল ভুমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭.৯। নেপাল ছাড়াও সমগ্র উত্তর ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ জুড়ে এই ভূকম্পন অনুভুত হয়েছিল।

ইউরোপের নীচে আস্ত এক মহাদেশ! দাবি গবেষণাপত্রে

রাজধানী কাঠমান্ডুর বিখ্যাত ধারাহারা টাওয়ার-সহ বহু ভবন ধ্বংস হয়। বিপর্যয়ের কারণে বন্ধ করে দিতে হয়েছিল রাজধানীর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। জানা যায়, হিমালয়ের এভারেস্ট শৃঙ্গে অন্তত আট জন নিহত হয়েছেন। হিমালয় অভিযানে যাওয়া পর্বতারোহীদের একটি 'বেস ক্যাম্পের একাংশ বরফের ধসে চাপা পড়েছিল। ভূমিকম্পের কারণেই জমাট বাঁধা এই বরফে ধস শুরু হয়। নেপালের এই ভূমিকম্পের জেরে ভারতের নানা স্থানে অন্তত ৩০ জন এবং বাংলাদেশে অন্তত ২ জন মারা যান।

বাড়ছে সমুদ্রতল, রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টে উদ্বেগ

নেপালের তথ্যমন্ত্রী মীনেন্দ্র রিজ্জাল বিপর্যয়ের মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহায়তা চাইতে বাধ্য হন। পাশে দাঁড়ায় ভারতের মতো বন্ধু দেশ।

কেন নেপালে ভূমিকম্প ভয়াবহ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূকম্পন প্রবণ অবস্থানের কারণে নেপালে ভূমিকম্প ‘আকস্মিক’ কোনও ঘটনা নয়। তবে ২০১৫ সালের ভূমিকম্পে নেপালে যে প্রাণহানি হয়েছে, অতীতে সে নজির নেই। হাজারে হাজারে লোক মারা যায়। ‘ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ দরবার স্কয়্যার বিধ্বস্ত হয়ে মিশে যায় মাটির সঙ্গে। বিখ্যাত ধারাহারা টাওয়ারের উপরের ছাদটি ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।

পাক কম্পনে মৃত বেড়ে ৩৭

সংবাদ সংস্থা বিবিসি সূত্রে খবর, মধ্য এশিয়ার ভারতীয় টেকটনিক প্লেটের সঙ্গে চাইনিজ প্লেটের ক্রমাগত সংঘর্ষের ফলে উৎপন্ন হয়েছে নেপালে অবস্থিত পর্বতগুলোর। পৃথিবী ভূ-ত্বকের বিশাল স্ল্যাব দুটি এখনও বছরে ৪ থেকে ৫ সেন্টিমিটার করে নিজেদের কাছাকাছি সরে আসছে।

নেপালে বারবার ভূমিকম্প নিয়ে ব্রিটিশ ওপেন ইউনিভার্সিটির ভূতত্ত্ববিজ্ঞানের অধ্যাপক ডেভিড রথেরি জানান, হিমালয় পর্বতমালা ক্রমাগত ভারতীয় প্লেটটিতে ধাক্কা খাচ্ছে, ফলে সৃষ্টি হয়েছে দুই থেকে তিনটি বিরাট খাদ। আর এই খাদগুলোর কোনও একটির স্থানচ্যুতির কারণেই ঘটেছে এই ভূমিকম্প।

রিখটার স্কেলে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্পের জন্যই শুধু নয়, ভূমি থেকে কম্পন উৎপন্ন কেন্দ্র মাত্র ১০-১৫ কিলোমিটার হওয়ায় নেপালের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পটি ধারণ করেছে আরও ভয়াবহ রূপ। প্রথম ভূমিকম্পের পর রেকর্ড করা হয়েছে আরও ১৪টির মতো ‘আফটারশক’। এর কোনো কোনোটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে চার থেকে পাঁচের মধ্যে। এরমধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী আফটারশকটি ছিল রিখটার স্কেলে ৬.৬ মাত্রার।

প্রথম ভূমিকম্পের পরই নেপালের ভূ-পৃষ্ঠতল নাজুক হয়ে পড়ে। মূল ভূমিকম্পে নেপালের দালানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পরবর্তী আফটারশকগুলোতে একেবারে ধসে পড়ে। বিশেষ করে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।

হিমালয় ঘেঁষা এলাকাগুলোয় ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ভূমিকম্পগুলো হল- ১৯৩৪ সালের এম ৮.১, বিহার ইভেন্ট, ১৯০৫ সালের এম ৭.৫ কাংগ্রা ট্রেমর এবং ২০০৫ সালের এম ৭.৬ কাশ্মীর। তবে, শেষ দুটি ভূমিকম্প ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। সবমিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছিল এক লাখেরও বেশি। বাস্তুহারা হয়েছিলেন ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ।

পরের খবর

Worldসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল