অ্যাপশহর

আদিবাসীদের মন ছুঁয়ে কালই নয়া জেলার স্বীকৃতি ঝাড়গ্রামের

বাম শাসনের মধ্যগগনেও , পশ্চিমাঞ্চলের দুই -একটি বিধানসভা আসনে জয়ী হতো ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম )৷

EiSamay.Com 3 Apr 2017, 9:57 am
এই সময় : বাম শাসনের মধ্যগগনেও , পশ্চিমাঞ্চলের দুই -একটি বিধানসভা আসনে জয়ী হতো ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম )৷ জেএমএম নেতা শিবু সোরেনের ডাকা বন্ধে থমকে যেত পুরুলিয়া , পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কিছু এলাকা৷ যার মধ্যে রয়েছে ঝাড়গ্রাম মহকুমা এলাকাও৷ গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে যখন গর্জে উঠেছিল দার্জিলিং পাহাড় , তখন ডুয়ার্সে তাদের জন্য স্বশাসিত পর্ষদ গঠনের দাবি তুলেছিল আদিবাসী বিকাশ পরিষদও৷
EiSamay.Com west bengal chief minister mamata banerjee announced that jhargram will be given the status of new districts
আদিবাসীদের মন ছুঁয়ে কালই নয়া জেলার স্বীকৃতি ঝাড়গ্রামের


যদিও তাদের সেই দাবি মানেনি বিগত বাম সরকার৷ অথচ , স্থানীয় মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে যেমন ওই এলাকার মানুষের হূদয় ছুঁতে পেরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এ বার পৃথক জেলা হিসাবে ঝাড়গ্রামের স্বীকৃতির মাধ্যমে নিঃসন্দেহে তিনি আরও একবার জিতে নিচ্ছেন আদিবাসীদের মন৷ কিছু দিন আগেই ঘোষিত জেলা আলিপুরদুয়ার এবং প্রস্তাবিত ঝাড়গ্রাম জেলার দু’টিতেই বড় সংখ্যায় রয়েছেন আদিবাসী সম্প্রদায়৷ তৃণমূল সরকারের এই উদ্যোগকে কিন্ত্ত স্বাগত জানাচ্ছেন রাজ্যের বিরোধী বাম শিবির থেকে আদিবাসী সমাজ নিয়ে ওয়াকিবহাল ব্যক্তি থেকে লোক সংস্কৃতি গবেষকরাও৷ সংখ্যালঘু মন জয়ে এর আগে একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়েছেন মমতা৷ যার সুফল মিলেছে ভোটেও৷ আগামিকাল , মঙ্গলবারই চালু হতে চলেছে নতুন ঝাড়গ্রাম জেলা৷

২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী , প্রস্তাবিত এই জেলাটির ১১ লাখ ৩৭ হাজার জনসংখ্যার মধ্যে ৩ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ আদিবাসী৷ জেলার চারটি বিধানসভার মধ্যে দু’টি সাধারণ এবং দু’টি তফসিলি উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত৷ জনসংখ্যার হিসাবে ঝাড়গ্রামকে আদিবাসী প্রধান জেলা বলা না -গেলেও , জেলার প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষই আদিবাসী৷ দীর্ঘ দিন ধরেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সব স্তরের ভোটেই প্রায় একাধিপত্য ছিল সিপিএমের৷ কিন্ত্ত আদিবাসীদের ওই দাবি কখনও মানেনি তারা৷ সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা দীর্ঘদিন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সভাধিপতি পুলিনবিহারী বাস্কের বক্তব্য , ‘আমাদেরও এমন একটি প্রস্তাব ছিল৷ যদিও তা হয়ে ওঠেনি৷ অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা যখন ভাগ হয় , তখনও এমন একটি প্রস্তাব ছিল আমাদের৷ এখন ঝাড়গ্রাম পৃথক জেলা হলে ভালোই হবে৷ ’ দীর্ঘ দিন ধরে লোক সংস্কৃতির ওপর গবেষণা চালাচ্ছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷ তাঁর মতে , ‘বিহার ভেঙে ঝাড়খণ্ড তৈরি হলেও , সেখানের আদিবাসীদের জীবনে বিরাট কোনও পরিবর্তন হয়নি৷ তবে , ঝাড়গ্রাম পৃথক জেলা হওয়ায় আমরা আশাবাদী৷ আদিবাসী উন্নয়ন এবং লোক ও আদিবাসী সংস্কৃতি রক্ষায় এই পদক্ষেপ সহায়ক হবে৷ ’এর ফলে বিভিন্ন কাজে যেমন ৫০ কিলোমিটার দূরে মেদিনীপুরে যেতে হবে না ঝাড়গ্রাম থেকে , তেমনই ঝাড়গ্রাম জেলার অধীনস্থ ব্লকগুলির উন্নয়নের কাজটিও ত্বরান্বিত হবে৷ আলিপুরদুয়ার শহর থেকেও জলপাইগুড়ির দূরত্ব ৯৪ কিলোমিটার৷ পৃথক জেলা হিসাবে গড়ে ওঠায় এখন সেই সমস্যা আর নেই৷ এমনকি উন্নয়নের কাজেও অনেক বেশি নজর দেওয়া যাচ্ছে কালচিনি , কুমারগ্রাম , আলিপুরদুয়ার -২, বীরপাড়া -মাদারিহাটের মতো আদিবাসী প্রধান ব্লকগুলিতে৷ একই রকম ভাবে ঝাড়গ্রাম জেলা হওয়ায় কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারি প্রকল্পে ঝাড়গ্রামের অধীনস্থ ব্লকগুলির জন্য অনেক বেশি অর্থ যেমন মিলবে , তেমনই উন্নয়নের কাজেও নজরদারি চালানোর কাজটিও সহজ হবে বলে মনে করছে প্রশাসনিক মহল৷

এক সময় বস্তারে শঙ্কর গুহ নিয়োগীর সঙ্গে কাজ করেছেন দলিত সম্প্রদায়ের লেখক মনোরঞ্জন ব্যাপারি৷ ছিলেন মহাশ্বেতা দেবীর অত্যন্ত স্নেহভাজন৷ শাসকদলের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন , ‘এটি আদিবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবির স্বীকৃতি৷ ’ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বাসিন্দা হলেও , মহাশ্বেতা দেবীর খেড়িয়া -শবরদের নিয়ে কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সোমনাথ দাস অধিকারীও৷ তাঁর মতে , ‘প্রশাসন সংবেদনশীল হলে এবং সদিচ্ছার অভাব না -ঘটলে এই উদ্যোগে লাভবান হবেন আদিবাসীরা৷ ’

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল