অ্যাপশহর

রানাঘাটে রূপালির ভোট ময়দানে ‘খাদ্যমন্ত্রী’ চম্পা

মা ডাকটা শুনলেই রূপালি বুঝতে পারেন দেড় বছরের ছেলে সৌম্যজিতের খিদে পেয়েছে। একই ভাবে মা ডাক শুনলেই রূপালির মা চম্পাও বুঝতে পারছেন রূপালি ক্ষুধার্ত। রূপালি বিশ্বাস। কৃষ্ণগঞ্জের নিহত তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের স্ত্রী। এ বারের লোকসভায় রানাঘাটের তৃণমূল প্রার্থী। একজন পথে প্রান্তে মায়ের ব্যস্ততার কোনও মর্ম না বুঝে মা ডাকছে সরল স্বভাবে। অন্য জন প্রচারের ব্যস্ততা সামলে বাড়িতে ফিরে নিজের মাকেও ডাকছেন একই সুরে।

EiSamay 25 Mar 2019, 2:12 pm
গৌতম ধোনি, কৃষ্ণনগর
EiSamay.Com trinamool congress (tmc) lok sabha election candidate rupali biswas in ranaghat vote campaign
মা চম্পার হাতে মাখা ভাত খেয়েই প্রচারে বেরোচ্ছেন রূপালি- ইন্দ্র কুণ্ড‌ু ধোনি


মা ডাকটা শুনলেই রূপালি বুঝতে পারেন দেড় বছরের ছেলে সৌম্যজিতের খিদে পেয়েছে। একই ভাবে মা ডাক শুনলেই রূপালির মা চম্পাও বুঝতে পারছেন রূপালি ক্ষুধার্ত। রূপালি বিশ্বাস। কৃষ্ণগঞ্জের নিহত তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের স্ত্রী। এ বারের লোকসভায় রানাঘাটের তৃণমূল প্রার্থী। একজন পথে প্রান্তে মায়ের ব্যস্ততার কোনও মর্ম না বুঝে মা ডাকছে সরল স্বভাবে। অন্য জন প্রচারের ব্যস্ততা সামলে বাড়িতে ফিরে নিজের মাকেও ডাকছেন একই সুরে।

হাঁসখালির ফুলবাড়ি গ্রামের বাড়ি থেকে রবিবার সকালে প্রচারে বের হওয়ার আগে অনেকগুলো ফোন ধরতে হচ্ছিল রূপালিকে। এ দিকে কর্মীদের তাড়া, ন'টার মধ্যে বগুলা-১ নম্বরের বড় মুড়াগাছায় পৌঁছতে হবে। খাবার সময়টাও পাচ্ছিলেন না। শেষে দেখা গেল এক হাতে স্মার্ট ফোন কানে মাঝে মধ্যেই মাথাটা নীচু করে মায়ের হাত থেকে ভাত মুখে নিচ্ছেন। আলু ও কয়েকটা সব্জি-সিদ্ধ সহ গরম ভাত মেখে মেয়ের মুখে তুলে দিচ্ছিলেন রূপালির মা চম্পা হালদার। মেয়েকে ভোট যুদ্ধের প্রচারে রওনা করিয়ে দেওয়ার পর চম্পা বলেন, 'রাতে বাড়ি ফেরার পরেও ওকে খাইয়ে দিতে হচ্ছে। স্কুলে যখন পড়ত, তখন পরীক্ষা থাকলে এ ভাবেই ওকে খাইয়ে দিতে হত। একে সদ্য স্বামীহারা অল্পবয়সি মেয়ে। তারপর এত বড় ভোট যুদ্ধ। তাই দু'বেলা ওকে ভাত মেখে মুখে তুলে দিয়েই নতুন পরীক্ষায় পাঠাচ্ছি।' তাঁর পরামর্শ, রাস্তায় প্রচারের মাঝে লেবু-চিনি জল, বা ডাবের জল খেতে। সঙ্গে গ্লুকোজ। তবে তাঁর আক্ষেপ, মেয়েটা রোদে ঘুরে এসে মেয়েটা তেমন কিছুই খেতে চাইছে না রাতে। মন্ত্রী রত্না ঘোষ অন্য দিন তাঁর প্রচারের সঙ্গী হলেও এ দিন থাকতে পারেননি।

সত্যজিৎ খুন হওয়ার পর থেকেই মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে রয়েছেন চম্পা। ছেলের শোকে সত্যজিতের মা অঞ্জনা অসুস্থ। চম্পা জানালেন, মেয়েকে প্রার্থী ঘোষণার আগে দু'তিন দিনের জন্য বাড়ি যেতে পেরেছিলেন। এখন সেখানেই থাকছেন। ভোট না মেটা পর্যন্ত।

এ দিনও দামাল ছেলে কার কোলে গেল, কোন গাড়িতে রয়েছে, ভোট প্রচারে বেরিয়ে সে দিকে কড়া নজর রাখছিলেন রূপালি। রোড শোয়ের সময় দলের কর্মী, সমর্থক কিংবা সাধারণ ভোটার সবার দিকে তাকিয়ে হাত না নাড়লে কেউ ভুল বুঝবে কি না, সে দিকেও নজর রাখছিলেন। সকালে দলের লোকজনের ফোন ধরার ফাঁকে ছেলেকে কাঠের ঘোড়ায় চাপিয়ে সঙ্গও দিতে হচ্ছে। এর মধ্যে চৈত্রের রোদে পুড়ে রোড শো। রবিবার সকালে হুড খোলা গাড়িতে উঠেই মাথায় কাপড় জড়ালেন রূপালি। গাড়ির রডে যেখানে হাত রাখবেন, সেখানেও জড়িয়ে নিলেন তোয়ালে। ছেলে কার কোলে খোঁজ নেওয়ার ফাঁকেই ছোট দেওর সুমিত তাঁর বৌদিকে মনে করিয়ে দিলেন বড় মুড়াগাছা থেকে বগুলার দিকে যেতে হবে। তাড়াতাড়ি করা দরকার। প্রচারে চললেন রূপালি।

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল