অ্যাপশহর

বাজি ব্যবসায় ক্ষুব্ধ মেদিনীপুর

বাড়িতে মজুত বারুদের মশলায় আগুন লাগায় মেদিনীপুরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৷ ওই ঘটনায় ঝলসে যাওয়া মামনি বিবির মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু হয় বৃহস্পতিবারই গভীর রাতে৷

EiSamay.Com 16 Sep 2017, 11:59 am
এই সময়, মেদিনীপুর: বাড়িতে মজুত বারুদের মশলায় আগুন লাগায় মেদিনীপুরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৷ ওই ঘটনায় ঝলসে যাওয়া মামনি বিবির মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু হয় বৃহস্পতিবারই গভীর রাতে৷ মামনি বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিক শেখ শাহজাদা৷ তাকে বৃহস্পতিবার রাতেই পুলিশ গ্রেন্তার করেছিল৷ ওই বিস্ফোরণে আর এক মৃত মমতাজ বেগম মেদিনীপুর শহরের বিবিগঞ্জ ধুনুরি বস্তিতে শেখ শাহজাদার প্রতিবেশী৷ বিস্ফোরণের তীব্রতা এত ছিল যে মমতাজের একটি হাত ছিটকে বাড়ি থেকে প্রায় ৩০ ফুট দূরে গিয়ে পড়ে৷ দু’জনের মৃত্যুর পর বাজির ব্যবসা নিয়ে কার্যত ফুঁসে উঠেছে মেদিনীপুর৷ ১৯৯৯ থেকে একের পর এক বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ও আগুন লাগলেও এই ব্যবসা বন্ধ করতে পুলিশ কোন পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ করছেন শহরবাসী৷
EiSamay.Com the number of dead increased in midnapore due to fire accumulated in the house
বাজি ব্যবসায় ক্ষুব্ধ মেদিনীপুর


বিশেষ করে বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনাটি মেদিনীপুর থানার নাকের ডগায় হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা৷ পুলিশকে মাসোহারা দিয়েই এই বেআইনি কারবার চলে বলেও অভিযোগ উঠেছে৷ মৃত মমতাজের দিদি শাহনাজ খাতুন বলেন , ‘পুলিশ টাকা নিয়ে চলে যায়৷ কাল যা ঘটল , তাতে ওদের আর কী ক্ষতি ? সর্বনাশ তো যা হওয়ার , আমাদের হল৷ শুনছি , পুলিশ বলছে , এখানে বাজি কারখানা ছিল না৷ কথাগুলি পুলিশকর্তারা এখানে এসে বলুন৷ ছিল কী ছিল না , এলাকার বাসিন্দারা বুঝিয়ে দেবেন৷ ’ মেদিনীপুরের শিক্ষক প্রণবেশ মাইতি বলেন , ‘বলার মতো ভাষা নেই৷ এই বেআইনি কারবার নিয়ে প্রশাসন চোখ বুঁজে আছে৷ যাচ্ছে তাই কাণ্ড চলছে৷ ’ পুলিশ অবশ্য এই ধরনের অভিযোগে বিরক্ত৷ তারা এর মধ্যে রাজনীতি আছে বলে মনে করছে৷

পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ ধুনুরি বস্তির ওই বাড়িতে বাজি তৈরি কারখানার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন , ‘বাজির ছোটখাটো ব্যবসা করত শেখ শাহজাদা৷ তার স্ত্রী রান্না করার সময় ওই বাড়িতে আগুন লাগায় এই ঘটনা ঘটেছে৷ ’ স্থানীয় বাসিন্দারা যে বাজি কারখানার অভিযোগ করছেন ? পুলিশ সুপারের জবাব , ‘এলাকার বাসিন্দারা এমন কথা কেউ বলছেন না৷ ওই এলাকার কংগ্রেস কাউন্সিলরের লোকজন এমন কথা প্রচার করে গোলমাল বাঁধাতে চাইছে৷ ওখানে কোন বাজির কারখানা ছিল না৷ ’ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ , বাজি কারখানার প্রমাণ লোপাট করতে মরিয়া পুলিশ৷ স্থানীয় বাসিন্দা চায়না খাতুন বলেন , ‘রাতভর দু’টি গাড়ি ভর্তি করে বাজি ও বারুদ সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ৷ ’ শেখ মাসেম বলেন , ‘পুলিশ প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছে বটে , কিন্ত্ত এখনও শেখ শাহজাদার বাড়ির ছাদে জলের শুকনো ট্যাঙ্কে প্রচুর বাজি ও বারুদ মজুত রয়ে গিয়েছে৷

ওগুলি পুলিশের নজরে পড়েনি৷ ’ শেখ ইসমাইল -সহ কয়েক জন এলাকাবাসী শুক্রবার ছাদে নিয়ে গিয়ে ওই মজুত ভাণ্ডার দেখান৷ অভিযোগ , এর পরই পুলিশ গোটা এলাকাটি ঘিরে ফেলে৷ কাউকে আর বাড়ির কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছে না৷ ফরেন্সিক পরীক্ষার কোন উদ্যোগ শুক্রবার দেখা যায়নি৷ সেই কারণে মেদিনীপুরের শহরবাসী মনে করছেন , জেলায় ইতিপূর্বে ঘটে যাওয়া বেশ কিছু ঘটনার মতো ধুনুরি বস্তির বিস্ফোরণও ধামাচাপা পড়ে যাবে৷ তাই ১৮ সেপ্টেম্বর জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে ডেপুটেশন দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ সেই মর্মে শুক্রবার এলাকায় পোস্টারও পড়েছে৷ যদিও এমন অভিযোগে বিরক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন , ‘সব ঘটনার সঙ্গে পিংলাকে জুড়ে দেবেন না৷ ওখানে বাজি কারখানা ছিল৷ আর এখানে কারখানা ছিল না৷ ছোটখাটো ব্যবসা করত৷ শেখ শাহজাদার বাজি বিক্রির লাইসেন্সও আছে৷ ’

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল