অ্যাপশহর

সুচ ফুটিয়ে শিশুর নিগ্রহে মঙ্গনাকে জড়াল সনাতন

জেরার মুখে শেষপর্যন্ত দোষ কবুল৷ তিন বছরের শিশুকন্যার দেহে সুচ ফুটিয়ে দেওয়ার দুষ্কর্ম স্বীকার করল পুরুলিয়ার নদীয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা সনাতন পাঠক৷

Ei Samay 7 Aug 2017, 10:36 am
এই সময়, পুরুলিয়া: জেরার মুখে শেষপর্যন্ত দোষ কবুল৷ তিন বছরের শিশুকন্যার দেহে সুচ ফুটিয়ে দেওয়ার দুষ্কর্ম স্বীকার করল পুরুলিয়ার নদীয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা সনাতন পাঠক৷ শিশুর মা মঙ্গলা গোস্বামীর যোগসাজশও সামনে এসেছে পুলিশকে দেওয়া তার বয়ানে৷ হেফাজতে নেওয়ার চার দিন পর রবিবার পুলিশ তার মুখ থেকে দোষ কবুল করাতে পেরেছে৷ ফলে নিজের সন্তানকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার পিছনে মঙ্গলার সম্মতি প্রমাণ করা সহজ হবে বলে পুলিশ মনে করছে৷ যদিও সুচ ফোটানোর পিছনে যুক্তি দাঁড় করিয়েছে সনাতন৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে যে সে বলেছে , তন্ত্রসাধনার স্বার্থেই মঙ্গলার শিশুকন্যার দেহে ৭টি সুচ ফোটানো হয়েছিল৷
EiSamay.Com the daughter was the barrier in the marriage life of sanatan
সুচ ফুটিয়ে শিশুর নিগ্রহে মঙ্গনাকে জড়াল সনাতন


পুলিশের কাছে সনাতনের বক্তব্য, তন্ত্রসাধনার পদ্ধতি মেনেই শিশুটির উপর নির্যাতন করা হয়েছে৷ কারণ মরে গেলে শিশুটির দেহ সাধনার কাজে আসত৷ পুলিশ অবশ্য এই যুক্তিকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করছে না৷ নদীয়াড়া গ্রামে সনাতনের পরিবার ও প্রতিবেশীরাও জানিয়েছেন , তন্ত্রসাধনার সঙ্গে তার কোনদিন কোনও সম্পর্ক ছিল না৷ তবে সনাতনের নিজের দোষ কবুল ও মঙ্গলার যোগসাজশ স্বীকার করাকে বড় সাফল্য বলে মনে করছেন পুলিশকর্তারা৷ তাঁরা এখন নিশ্চিত আরও কয়েক ঘণ্টা টানা জেরা করলে সনাতনের মুখ থেকে আরও বিস্তারিত জানা সম্ভব হবে৷ এর পরেই মঙ্গলার মুখোমুখি বসিয়ে দু’জনকে একসঙ্গে জেরা করার পরিকল্পনা আছে পুলিশের৷ মঙ্গলবার ফের আদালতে তোলা হবে সনাতনকে৷ সেদিনই সনাতন ও মঙ্গলা, দু’জনকেই ফের হেফাজতে চাইবে পুলিশ৷

পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি সিদ্ধান্ত ও অনুমান সঠিক বলে প্রমাণিত হচ্ছে৷ গোটা অপরাধটি একদিনে ঘটেনি৷ এখন এর বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে৷ সনাতনের দুই পুত্রবধূর সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে যে সে কোনদিন তন্ত্রসাধনা করত না৷’ দোষ কবুল করলেও এখনও পুলিশকে বিভ্রান্ত করার জন্য সনাতন তন্ত্রসাধনার গল্প ফাঁদছে বলে মনে করা হচ্ছে৷ শিশুটি সঙ্কটজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর সে পালিয়ে গিয়েছিল৷ কলকাতায় এসএসকেএমে শিশুটি মারা যাওয়ার পর তাকে উত্তরপ্রদেশ থেকে পুলিশ ধরে এনেছিল৷ প্রথম দিকে সে সুচ ফোটানোর দায় নিজের বড় ছেলের স্ত্রীর ঘাড়ে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করে৷ লকআপে কখনও গান করে, কখনও এটা-ওটা বলে পুলিশের জেরা এড়ানোর নানা চেষ্টাও সে করেছে৷

কিন্ত্ত রবিবারই প্রথম সে অনেকটা ভেঙে পড়ে৷ এরই মধ্যে সনাতনের আর একটি দুষ্কর্মের সম্ভাবনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে৷ বছর খানেক আগে সনাতনের স্ত্রীর মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল কিনা , তা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ৷ সনাতনের গ্রামের লোকেরাই অভিযোগ তুলছেন যে মঙ্গলাকে পাওয়ার জন্য সনাতন তার স্ত্রীকে খুন করেছে৷ মঙ্গলার এর আগে দু’বার বিয়ে হয়েছিল৷ তার পর সনাতন তাকে ঠাঁই দেয় নিজের বাড়িতে৷ পরিচারিকা হিসাবে পরিচয় দেওয়া হলেও দু’জনে স্বামী -স্ত্রীর মতোই জীবনযাপন করত৷ ধরা পড়ার পর সে জানিয়েছিল, মঙ্গলা তার স্ত্রী৷

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল