সঞ্জয় চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি লোকে বলে ভবানী পাঠকের কালী মন্দির। পরিচিতও সেই নামেই।
বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাসে ভবানী পাঠক চরিত্রের বাস্তবে কোনও অস্তিত্ব রয়েছে কি না তা নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। তবে উপন্যাসেই ইঙ্গিত ছিল, অষ্টদশ শতাব্দীতে সন্ন্যাসী বিদ্রোহের সময়ে ভবানী পাঠক না কি তিস্তা লাগোয়া বোদাগঞ্জে আত্মগোপন করেছিলেন। সেই সময়েই তিনি এখনকার শিকারপুর চা বাগানের জমিতে অস্থায়ী কালী মন্দির গড়ে পুজো করতেন বলে মানুষের বিশ্বাস।
উপন্যাসের সেই চরিত্রের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ নিয়ে যত বিতর্কই থাক না কেন, স্থানীয় বাসিন্দারা ভবানী পাঠকের অস্তিত্বে কেবল বিশ্বাসীই নন, তাঁর প্রতিষ্ঠিত কালী মন্দিরের মূর্তি গড়ে আজও পুজো করেন তাঁরা। ওই কালী মন্দির চত্বরেই প্রায় একশো বছর ধরে দুর্গা পুজোও হচ্ছে। মন্দিরে অগ্নিকাণ্ড, করোনা অতিমারির সংক্রমণও বাসিন্দাদের দেবীর পুজো থেকে নিরস্ত করতে পারেনি।
এ বছর এই মন্দিরের দুর্গা পুজো ৯৬ বছরে পা দিল। ২০১৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রহস্যজনক এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মন্দিরটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। রাজ্য সরকার সেই মন্দির গড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরে এখনও সংস্কারের কাজ চলছে। কিন্তু তারজন্য জন্য পুজো বন্ধ রাখেননি স্থানীয়রা। গত বছর করোনা সংক্রমণের জেরে নাকাল হলেও পুজো বন্ধ হয়নি। এ বারও দেবী মায়ের পুজোর আয়োজন চলছে।
জলপাইগুড়ির বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ উমেশ শর্মা স্থানীয় মানুষের বিশ্বাসকেই সমর্থন করেন। তিনি বলেন, 'বঙ্কিমচন্দ্র নিছক কল্পনার আশ্রয় নিয়ে ভবানী পাঠকের চরিত্র সৃষ্টি করেছেন বলে আমারও মনে হয় না। কেননা, তিনি রংপুরে একটা সময়ে চাকরিসূত্রে এসেছিলেন। তা ছাড়া, ষাটের দশকে ভবানী পাঠকের মন্দিরের বিপরীতের মেলায় মাঠে প্রচুর ত্রিশূল পাওয়া গিয়েছিল। ফলে মানুষের বিশ্বাসকে একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।'
শিকারপুর চা বাগানের এই শারদোৎসবের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক চা বাগান কর্তৃপক্ষ। চা বাগানের শ্রমিক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা পুজোর উদ্যোক্তা। তবে পুজোয় আগের মতো তেমন জাঁকজমক নেই। এখন মন্দির চত্বরের উল্টোদিকের মাঠে একটি মেলা হয়। সেই মেলায় ভিড় জমান আশপাশের কয়েক হাজার বাসিন্দা। শিকারপুর চা বাগানের বড়বাবু ফণীন্দ্রনাথ দাস বলেন, 'আমার ছোটবেলা থেকেই ভবানী পাঠকের মন্দিরে দুর্গা পুজো দেখে আসছি। স্থানীয়রাই পুজো করেন। আমরা চা বাগান থেকে কিছু অর্থ সাহায্য করি।'
রাজ্য সরকার মন্দিরটির সংস্কারের দায়িত্ব নেওয়ার পরে স্থানীয় বিধায়ক খগেশ্বর রায় নিয়মিত মন্দিরের খুঁটিনাটি বিষয়ে খোঁজখবর রাখেন। গজলডোবায় রাজ্য সরকার পর্যটন হাব তৈরির পরে জল্পেশের সঙ্গে এই মন্দিরটিকেও পর্যটকদের আগ্রহের কথা মাথায় রেখে ঢেলে সাজা হচ্ছে।
বিধায়কের কথায়, 'স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস নিয়ে কথা বলতে চাই না। এসব ইতিহাসবিদদের বিষয়। তবে আমাদের লক্ষ্য মন্দিরটির ঐতিহ্যকে রক্ষা করে ফের নির্মাণ করে দেওয়া। কাজ অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। কালী পুজোর আগে মূল মন্দিরের কাজ সম্পূর্ণ করা হবে। দুর্গা পুজো এবং কালী পুজোর জন্য এই মন্দিরটি যাতে সরকারি অনুদান পায় সেই ব্যাপারেও উদ্যোগী হয়েছি।'
মন্দিরটিকে তার আগের চেহারায় ফিরিয়ে দিতে রাজস্থান থেকে আনা হচ্ছে লাইম স্টোন। ভবানী পাঠক সহ দশটি মূর্তি তৈরি করতে ব্যবহার করা হচ্ছে মেহগনি কাঠ। মন্দিরের চারপাশে দেওয়ালও তুলে দেওয়া হবে যাতে ভবিষ্যতে বহিরাগতদের উৎপাত ঠেকানো যায়।
বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাসে ভবানী পাঠক চরিত্রের বাস্তবে কোনও অস্তিত্ব রয়েছে কি না তা নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। তবে উপন্যাসেই ইঙ্গিত ছিল, অষ্টদশ শতাব্দীতে সন্ন্যাসী বিদ্রোহের সময়ে ভবানী পাঠক না কি তিস্তা লাগোয়া বোদাগঞ্জে আত্মগোপন করেছিলেন। সেই সময়েই তিনি এখনকার শিকারপুর চা বাগানের জমিতে অস্থায়ী কালী মন্দির গড়ে পুজো করতেন বলে মানুষের বিশ্বাস।
উপন্যাসের সেই চরিত্রের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ নিয়ে যত বিতর্কই থাক না কেন, স্থানীয় বাসিন্দারা ভবানী পাঠকের অস্তিত্বে কেবল বিশ্বাসীই নন, তাঁর প্রতিষ্ঠিত কালী মন্দিরের মূর্তি গড়ে আজও পুজো করেন তাঁরা। ওই কালী মন্দির চত্বরেই প্রায় একশো বছর ধরে দুর্গা পুজোও হচ্ছে। মন্দিরে অগ্নিকাণ্ড, করোনা অতিমারির সংক্রমণও বাসিন্দাদের দেবীর পুজো থেকে নিরস্ত করতে পারেনি।
এ বছর এই মন্দিরের দুর্গা পুজো ৯৬ বছরে পা দিল। ২০১৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রহস্যজনক এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মন্দিরটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। রাজ্য সরকার সেই মন্দির গড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরে এখনও সংস্কারের কাজ চলছে। কিন্তু তারজন্য জন্য পুজো বন্ধ রাখেননি স্থানীয়রা। গত বছর করোনা সংক্রমণের জেরে নাকাল হলেও পুজো বন্ধ হয়নি। এ বারও দেবী মায়ের পুজোর আয়োজন চলছে।
জলপাইগুড়ির বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ উমেশ শর্মা স্থানীয় মানুষের বিশ্বাসকেই সমর্থন করেন। তিনি বলেন, 'বঙ্কিমচন্দ্র নিছক কল্পনার আশ্রয় নিয়ে ভবানী পাঠকের চরিত্র সৃষ্টি করেছেন বলে আমারও মনে হয় না। কেননা, তিনি রংপুরে একটা সময়ে চাকরিসূত্রে এসেছিলেন। তা ছাড়া, ষাটের দশকে ভবানী পাঠকের মন্দিরের বিপরীতের মেলায় মাঠে প্রচুর ত্রিশূল পাওয়া গিয়েছিল। ফলে মানুষের বিশ্বাসকে একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।'
শিকারপুর চা বাগানের এই শারদোৎসবের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক চা বাগান কর্তৃপক্ষ। চা বাগানের শ্রমিক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা পুজোর উদ্যোক্তা। তবে পুজোয় আগের মতো তেমন জাঁকজমক নেই। এখন মন্দির চত্বরের উল্টোদিকের মাঠে একটি মেলা হয়। সেই মেলায় ভিড় জমান আশপাশের কয়েক হাজার বাসিন্দা। শিকারপুর চা বাগানের বড়বাবু ফণীন্দ্রনাথ দাস বলেন, 'আমার ছোটবেলা থেকেই ভবানী পাঠকের মন্দিরে দুর্গা পুজো দেখে আসছি। স্থানীয়রাই পুজো করেন। আমরা চা বাগান থেকে কিছু অর্থ সাহায্য করি।'
রাজ্য সরকার মন্দিরটির সংস্কারের দায়িত্ব নেওয়ার পরে স্থানীয় বিধায়ক খগেশ্বর রায় নিয়মিত মন্দিরের খুঁটিনাটি বিষয়ে খোঁজখবর রাখেন। গজলডোবায় রাজ্য সরকার পর্যটন হাব তৈরির পরে জল্পেশের সঙ্গে এই মন্দিরটিকেও পর্যটকদের আগ্রহের কথা মাথায় রেখে ঢেলে সাজা হচ্ছে।
বিধায়কের কথায়, 'স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস নিয়ে কথা বলতে চাই না। এসব ইতিহাসবিদদের বিষয়। তবে আমাদের লক্ষ্য মন্দিরটির ঐতিহ্যকে রক্ষা করে ফের নির্মাণ করে দেওয়া। কাজ অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। কালী পুজোর আগে মূল মন্দিরের কাজ সম্পূর্ণ করা হবে। দুর্গা পুজো এবং কালী পুজোর জন্য এই মন্দিরটি যাতে সরকারি অনুদান পায় সেই ব্যাপারেও উদ্যোগী হয়েছি।'
মন্দিরটিকে তার আগের চেহারায় ফিরিয়ে দিতে রাজস্থান থেকে আনা হচ্ছে লাইম স্টোন। ভবানী পাঠক সহ দশটি মূর্তি তৈরি করতে ব্যবহার করা হচ্ছে মেহগনি কাঠ। মন্দিরের চারপাশে দেওয়ালও তুলে দেওয়া হবে যাতে ভবিষ্যতে বহিরাগতদের উৎপাত ঠেকানো যায়।