অ্যাপশহর

নিয়ম ভেঙে বাড়তি টাকা নেয় সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলও

বেসরকারি স্কুলগুলিতে পড়াশুনোর লাগামহীন খরচে রাশ টানতে পদক্ষেপ করার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার৷

EiSamay.Com 7 Mar 2017, 12:50 pm
এই সময় : বেসরকারি স্কুলগুলিতে পড়াশুনোর লাগামহীন খরচে রাশ টানতে পদক্ষেপ করার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার৷ গত শুক্রবার বিধানসভায় এই ব্যাপারে তাঁর অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কিন্ত্ত দেখা যাচ্ছে , এই অভিযোগ থেকে মুক্ত নয় সরকার শিক্ষকদের বেতন -সহ নানা আর্থিক দায় বহন করে এমন স্কুলও৷ যদিও আইনত বছরে ২৪০ টাকার বেশি নেওয়ার কথা নয় তাদের৷ স্কুলের ম্যাগাজিন , বার্ষিক খেলাধূলা , ডায়েরি খরচ বাবদ এই টাকা ব্যয় করা যায়৷ কিন্ত্ত বহু স্কুলই দেড় -দু’হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে৷ ফলে অবৈতনিক শিক্ষার সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে লাখ লাখ পড়ুয়া।
EiSamay.Com school bill issue extra money it takes to break the rules
নিয়ম ভেঙে বাড়তি টাকা নেয় সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলও


এই অভিযোগের কথা মেনে নিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ সোমবার তিনি বলেন, ‘কোথাও কোথাও সরকার পোষিত স্কুলগুলির বিরুদ্ধে বাড়তি টাকা নেওয়ার অভিযোগ আমাদের কাছে আছে৷ এক বছর আগে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকদের আমরা বলছি , কী ভাবে এসব বন্ধ করা যায় তা নিশ্চিত করতে৷’ শিক্ষামন্ত্রী বলেন , ‘সরকারি সিদ্ধান্ত মতো পদক্ষেপ না করায় হাওড়ায় একজন বিদ্যালয় পরিদর্শককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে৷’ এ প্রসঙ্গে সর্বশিক্ষা প্রকল্পের কলকাতা জেলার চেয়ারম্যান কার্তিক মান্না বলেন, ‘এ নিয়ে প্রচুর অভিযোগ পাই৷ এবং তা এলেই সেটি শিশুসুরক্ষা কমিশনে পাঠিয়ে দেই৷ অনেকে টাকা ফেরতও পেয়েছেন৷ ’ পাশাপাশি , অল বেঙ্গল সেভ এডুকেশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক সাহা বলেন , ‘সরকারি শিক্ষার আর্থিক দায়ভার পুরোপুরি না নিলে এই সমস্যা থাকবেই৷ ’

শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়াশুনোর জন্য সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রান্ত স্কুল কোনও খাতেই অর্থ নিতে পারবে না৷ পশ্চিমবঙ্গে আবার বাম জমানার গোড়াতেই দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত টিউশন ফি মকুব করে দেওয়া হয়েছিল৷ স্কুলগুলি অন্যান্য প্রয়োজন মেটাতে বছরে পড়ুয়া পিছু সর্বোচ্চ ২৪০ টাকা নিতে পারবে বলে সরকারি অনুমতি রয়েছে৷ কিন্ত্ত বহু স্কুল ওই নির্দেশিকাকে অগ্রাহ্য করে শিক্ষার্থীদের থেকে নানা খাতে টাকা বিপুল অঙ্কের টাকা নিচ্ছে৷ সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারীদের কাছ থেকে ২৪০ টাকাও নেওয়া যায় না৷ স্কুলগুলির বক্তব্য , বহু খাতেই সরকার কোনও টাকা দেয় না৷ আবার নিয়ম মেনে যে টাকা ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া যায় তা নিয়ে খরচ সামাল দেওয়া অসম্ভব৷ ইলেকট্রিক বিল ছাড়াও অস্থায়ী শিক্ষক -শিক্ষাকর্মীদের বেতন স্কুলের নিজস্ব তহবিল থেকে দিতে হয়৷ যদিও শিক্ষক ও অভিভাবকদের একাংশের বক্তব্য , রোজগার করা নিয়ে স্কুলগুলির মধ্যে একপ্রকার অলিখিত প্রতিযোগিতা চলছে৷

পাড়ার ক্লাবগুলির মতোই স্কুলের অনুষ্ঠানেও জাঁকজমকের ঢেউ লেগেছে৷ সরস্বতী পুজো নিয়ে অনেক স্কুল প্রতিমা , প্যান্ডেল , খাওয়াদাওয়া নিয়ে লড়াইয়ে মেতে উঠেছে৷ সব খরচই আদায় করা হয় ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে৷ অনেক স্কুলই অভিভাবকদের সঙ্গে আলাপ -আলোচনা করেই চড়া হারে ফি আদায় করে থাকে৷ বেসরকারি স্কুলের তুলনায় তা কম হওয়ায় তেমন আপত্তি ওঠে না৷ সমস্যায় পড়ে গরিব পরিবারগুলি৷ তবে অনেক স্কুলই নিয়ম না মেনে ‘ফি ’ নিয়ে থাকে৷ যেমন বারাকপুর মহকুমার একটি স্কুল বছরে ডেভেলপমেন্ট ফি ৩৬ টাকা , ম্যাগাজিন ফি ৬ টাকা , ইলেকট্রিসিটি ফি ৬ টাকা , গেম ফি ৬ টাকা , পরীক্ষা ফি ১২ টাকা ও লাইব্রেরি ফি বাবদ ১২ টাকা নিয়ে থাকে৷ যদিও তারাই বাড়তি রোজগার করে এক্সট্রা পরীক্ষা ফি ও এক্সট্রা ইলেকট্রিসিটি বাবদ ৫০ টাকা ও ৭৫ টাকা নিয়ে থাকে৷ স্কুল কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা , কম্পিউটারের পরীক্ষা ও তা চালানোর জন্য বিদ্যুতের বিল স্কুলকে বহন করতে হয়৷ যা নেওয়া হয় পড়ুয়াদের থেকে৷

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল