অ্যাপশহর

অবহেলায় রামায়ণের গ্রন্থাগার

নদিয়ার ফুলিয়ায় বয়রা গ্রামে মস্ত বটগাছটি কৃত্তিবাসের রামায়ণ রচনার সাক্ষী। এই গাছের ছায়ায় বসে তিনি বাংলায় রামায়ণ রচনা করেছিলেন বলে লেখা আছে ফলকে। কয়েক পা এগোলে তাঁর অস্থি সমাধির স্মারক। দু’য়ের মাঝে কৃত্তিবাস স্মারক গ্রন্থাগার ও সংগ্রহশালা।

EiSamay.Com 19 Jan 2019, 9:33 am
গৌতম ধোনি ■ ফুলিয়া
EiSamay.Com 7-1---Copy


নদিয়ার ফুলিয়ায় বয়রা গ্রামে মস্ত বটগাছটি কৃত্তিবাসের রামায়ণ রচনার সাক্ষী। এই গাছের ছায়ায় বসে তিনি বাংলায় রামায়ণ রচনা করেছিলেন বলে লেখা আছে ফলকে। কয়েক পা এগোলে তাঁর অস্থি সমাধির স্মারক। দু’য়ের মাঝে কৃত্তিবাস স্মারক গ্রন্থাগার ও সংগ্রহশালা। বাংলা সাহিত্যের আদিকবি কৃত্তিবাসের জন্মভিটের এক বিঘের বেশি জমিতে রয়েছে স্মারকগুলো। বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত, হিন্দি, অসমিয়া, মৈথিলি, ওডিয়া, গুজরাটি, এমনকি ত্রিপুরা ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষাতেও লেখা রামায়ণের সংগ্রহ আছে এই গ্রন্থাগারে। রামায়ণ ও রামায়ণ বিষয়ক বইয়ের সংখ্যা ২০০০-এর বেশি। দেশে-বিদেশে রামায়ণ নিয়ে বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত প্রায় ৩০০ ইংরেজি প্রবন্ধও গ্রন্থাগারটির সম্পদ। কৃত্তিবাসী রামায়ণের আদি পুঁথি অবশ্য নেই। তবে প্যারিসের জাতীয় গ্রন্থাগারে রাখা ১৭৯৪-এ অনুলিপিত কৃত্তিবাসী রামায়ণ পুঁথির মাইক্রো ফিল্ম ও জেরক্স আছে এই সংগ্রহশালায়।

রামায়ণের বিভিন্ন কাহিনীর দুষ্প্রাপ্য ম্যুরালও আছে ৩৬ টি। কৃত্তিবাস গ্রন্থাগার ও সংগ্রহশালার প্রাক্তন গ্রন্থাগারিক কেশব লাল চক্রবর্তীর তবু আক্ষেপ, ইতিহাসের এত উপাদান ও স্মারক থাকলেও বাইরের মানুষ ফুলিয়াকে বইয়ের পাতাতেই চেনেন। আকর্ষণই বা হবে কী করে? অভিযোগ, পর্যাপ্ত কর্মীর অভাবে ধুঁকছে গ্রন্থাগারটি। গ্রন্থাগারিকের পদ শূন্য। নৈশপ্রহরী পতিতপাবন মিশ্র নিজের দায়িত্ব সামলে গ্রন্থাগার সামলান দিনের বেলায়। তিনি বলেন, ‘২০০৮-এ গ্রন্থাগারিক অবসর নিয়েছেন। শান্তিপুরের গ্রন্থাগারিক এখন এর অতিরিক্ত দায়িত্বে। তিনি সপ্তাহে তিন দিন আসেন। তৃতীয় কোন কর্মী নেই।’ সরকার অনুমোদিত গ্রন্থাগার হলেও নজর রাখে কৃত্তিবাস স্মৃতিরক্ষা কমিটি। সেই সংস্থার সম্পাদক রিক্তা কুণ্ডু এখন নদিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি। তিনি বলেন, ‘আসলে সংরক্ষণের আধুনিক ব্যবস্থা ও বাইরে থেকে যাঁরা আসেন, ফুলিয়ায় তাঁদের থাকার ব্যবস্থা থাকা জরুরি।’

সেজন্য পর্যটক আবাস, সংগ্রহশালায় বাতানুকূল ব্যবস্থা, ডিজিটাল মাধ্যমে রামায়ণের পুঁথিগুলির সংরক্ষণের কিছু প্রস্তাব রূপায়ণের দিকে তাঁরা এগোচ্ছেন বলে জানালেন সভাধিপতি।’ কৃষ্ণনগরের শিক্ষক প্রদীপ বাগচি বলেন, ‘বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এমন গুরুত্বপুর্ণ জায়গা ও গ্রন্থাগার যেভাবে অবহেলায় পড়ে আছে, তাতে আমাদেরই লজ্জা লাগে।’ কৃত্তিবাস স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোবিন্দ মুখোপাধ্যায় বলেন, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখন্ড থেকেও বহু মানুষ এখানে আসেন। কিন্তু তাঁদের জন্য এখানে কোন ব্যবস্থাই নেই।’

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল