অ্যাপশহর

কফিনবন্দি হয়ে গ্রামে ফিরছেন বীর সন্তান

গ্রামে আসছে বীর শহিদের দেহ। প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে। শনিবার পুলিশ, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিরা দফায় দফায় আসেন। গ্রামের সন্তানকে শ্রদ্ধা জানাতে তৈরি সকলে। এ দিনও বাড়ির সামনে জানা-অজানা মানুষের ভিড়।

EiSamay.Com 28 Jun 2020, 1:18 pm
এই সময়, মেদিনীপুর: গ্রামে আসবে বীর শহিদের দেহ। প্রস্তুতি চলছে তাই জোর কদমে। শনিবার পুলিশ, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিরা দফায় দফায় এসেছেন। গ্রামের সন্তানকে শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত সকলে। এ দিনও বাড়ির সামনে জানা-অজানা মানুষের ভিড়। এখনও কথা বলার শক্তি ফিরে পাননি বাবা-মা। শ্যামলের বাবা বাদল দে কিছুটা সামলে ওঠার চেষ্টা করলেও, শুক্রবার দুপুরের পর থেকে বেসামাল মা।
EiSamay.Com Martyred jawans body who was died during Kashmir encounter returned home in West Bengal
বীর সন্তানকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য গ্রামের স্কুল মাঠে চলছে প্রস্তুতি।


প্রতিবেশী অশোক মান্না বলেন, ‘শুক্রবার থেকে একবিন্দু জল খাওয়ানো যায়নি। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিকিৎসক রাখা হয়েছে পর্যবেক্ষণের জন্য। এ দিন দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খড়্গপুর) কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ, বিধায়ক গীতা ভুঁইয়া, রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়ারা শ্যামলের মাকে অনেক বোঝানোর পর একটু গ্লুকোজের জল খেয়েছেন তিনি।’

সবংয়ের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে দেশরক্ষার কাজে গিয়েছিলেন শ্যামলকুমার দে। সিআরপিএফের ৯০ নম্বর ব্যাটেলিয়নে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তাঁর পোস্টিং কাশ্মীরের অনন্তনাগে। তিন বছর আগে ২০১৭ সালের ৩ জুন কাশ্মীরের অনন্তনাগে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন সবংয়ের মনসা গ্রামের দীপক মাইতি। তখনও অনন্তনাগ থেকে শ্যামল তাঁর বাবা মাকে ফোন করে জানিয়েছিলেন, ‘ভয় পেয়োনা। আমরা ঠিক আছি।’

তবুও সন্তানের জন্য উৎকন্ঠায় থাকতেন বাবা-মা। উত্তেজনাপ্রবণ এলাকা হওয়ায় প্রতিদিন দু’তিনবার নিয়ম করে ছেলেকে ফোন করে খোঁজও নিতেন তাঁরা। প্রতিবারই বাবা-মাকে আশ্বস্ত করতেন শ্যামল। বলতেন, ‘ভয় পেয়োনা। তোমাদের ছেলে সতর্ক আছে। দেশরক্ষা করতে এসেছে।

শহিদ হওয়া গর্বের ব্যাপার।’ সেই গর্বের কথা গ্রামের বন্ধুদেরও বলতেন শ্যামল। বলতেন দেশভক্তির কথা। অনুপ্রাণিত করতেন। সেই গর্ব, সেই অনুপ্রেরণা নিয়ে শহিদকে বরণ করতে প্রস্তুত সবং।

রবিবার সকালে গ্রামে পৌঁছাবে শহিদের দেহ। তাঁকে দেখার অপেক্ষায় সবংবাসী। গ্রামের স্কুলের মাঠে বীর শহিদকে শ্রদ্ধা জানানো হবে। হাজার হাজার মানুষের ভিড় হতে পারে ভেবে সব রকমের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে। রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়া বলেন, ‘বীর সন্তানকে সকলে যাতে দেখতে পান, শ্রদ্ধা জানাতে পারেন, তার সবরকম ব্যবস্থা থাকছে। দীপক মাইতির পর শ্যামল দে, দেশের
বীর সন্তানের স্বীকৃতি পেল। শ্যামলের মা হলেন, শহিদের মা।’

পরের খবর