অ্যাপশহর

হারিয়ে যাওয়া খেলা 'কিতকিত' ফিরিয়ে আনল স্কুল

সমাজ ব্যবস্থার ক্রমবিকাশের সঙ্গে আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে গিয়েছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী অনেক খেলা। গ্রামের বয়স্করাও এখন ভুলে গিয়েছেন বহু খেলার নাম। এক সময় গ্রামের শিশু, কিশোর ও যুবকরা লেখাপড়ার পাশাপাশি কিতকিত, চিনিবিস্কুট, লুকোচুরি, কানামাছি, গাদি, নুনধাপসার মতো অনেক খেলায় অংশ নিত।

EiSamay.Com 18 Nov 2019, 3:23 pm
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: সমাজ ব্যবস্থার ক্রমবিকাশের সঙ্গে আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে গিয়েছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী অনেক খেলা। গ্রামের বয়স্করাও এখন ভুলে গিয়েছেন বহু খেলার নাম। এক সময় গ্রামের শিশু, কিশোর ও যুবকরা লেখাপড়ার পাশাপাশি কিতকিত, চিনিবিস্কুট, লুকোচুরি, কানামাছি, গাদি, নুনধাপসার মতো অনেক খেলায় অংশ নিত। আধুনিক সভ্যতায় হারিয়ে যেতে বসেছে সেই সব প্রাচীন খেলা। স্মৃতি থেকেই ফিকে হয়ে যাওয়া গ্রামীন খেলাগুলিকে এখনকার শিশু-কিশোরদের কাছে তুলে ধরতে অভিনব উদ্যোগ নিল পশ্চিম মেদিনীপুরের পলাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৪ নভেম্বর শিশু দিবসে কিত কিত খেলার আয়োজন করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৌম্যসুন্দর মহাপাত্র বলেন, ‘এখনকার ছেলেমেয়েরা এরকম অনেক খেলার নামই জানে না। গ্রামের ঐতিহ্যবাহী এ সব খেলা সম্পর্কে সম্যক ধারণা তৈরি করতে এই ধরনের উদ্যোগ’। মেদিনীপুর সদর ব্লকের পলাশি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাত্রছাত্রীদের আকৃষ্ট করার জন্য সব সময় অভিনব উদ্যোগ নিয়ে থাকে। স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের জন্মদিন পালন, পড়ুয়াদের পাসবুক তৈরি, স্বল্প মূল্যে শিক্ষা সামগ্রী বিক্রি ইত্যাদি সারা বছর ধরে চলে স্কুলে। এই উদ্যোগে খুশি ছাত্রছাত্রী থেকে অভিভাবক-অভিভাবিকারাও। স্কুলের শিক্ষক- শিক্ষিকাদের কথায়, ‘বর্তমান সমাজে ছোট ছোট শিশুদের আমরা একটা প্রতিযোগিতার মুখে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছি। খেলাধুলা করার সময় পাচ্ছে না। সব সময় একটা মানসিক চাপ,বইয়ের বোঝা ইত্যাদিতে ক্লান্ত। তাই লেখাপড়ার পাশাপাশি মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য কিছু খেলাধূলা প্রয়োজন। যেখানে তারা মন খুলে খেলতে পারবে। তাই শিশু দিবসে এমন কিছু খেলার আয়োজন করেছিলাম।’
EiSamay.Com Kitkit, which game forgotten by everyone, was turned back in school
কিতকিত খেলছে ছাত্রীরা।


পলাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৌম্যসুন্দর মহাপাত্র বলেন, ‘স্কুলের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৯৪ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ৪৫। ৩ জন স্থায়ী শিক্ষক ও ২ জন পার্শ্ব শিক্ষক আছেন। নানা রকম ভাবে ছেলে মেয়েদের স্কুলমুখী করে রাখার চেষ্টা করি। সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা সহযোগিতা করেন বলেই এই ধরণের উদ্যোগ সম্ভব হয়।’

অভিভাবিকা কৃষ্ণা ঘোষ, সবিতা সিংহরা বলেন, ‘এক সময় পাড়াগাঁয়ে কিত কিত, লাফদড়ি, কাবাডি, কানামাছি, চিনিবিস্কুট, লুকোচুরি, গাদি, নুনধাপসা প্রভৃতি খেলার প্রচলন ছিল। আমরাও খেলেছি। এখন গ্রামবাংলা থেকে আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে এসব খেলাধুলা। গ্রাম গঞ্জের ঐতিহ্যবাহী এসব খেলা এখন আর তেমন কোথাও চোখে পড়ে না বললেই চলে। নতুন প্রজন্মের কাছে এগুলো এখন শুধুই গল্প।’ শিক্ষকদের এই উদ্যোগে খুশি সুপ্রিয়া হাসদাঁ, সুমিতা হেমব্রমরা। তাদের কথায়, আমরা এখন থেকে নিজের গ্রামেও এসব খেলা আবার খেলব। সবাই শুধু ক্রিকেট খেলতে চায়। তাদেরও বলব এই খেলায় অংশ নিতে।

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল