অ্যাপশহর

করোনাকালে কালীপুজো, প্রতিযোগিতা এবার পাশে দাঁড়ানোর

বারাসত ও মধ্যমগ্রামে এ বছর কালীপুজো হচ্ছে, তবে সেই জাঁকজমক নেই। দুর্গাপুজোর পর করোনা এ বার থাবা বসিয়েছে কালীপুজোর আনন্দেও। মণ্ডপ, প্রতিমা থেকে আলোকসজ্জায় টেক্কা দেওয়ার প্রতিযোগিতায় নেই বারাসত বা মধ্যমগ্রামের কোনও পুজোই।

EiSamay.Com 13 Nov 2020, 11:41 am
এই সময়, বারাসত: বারাসত এবং মধ্যমগ্রামে এ বছর কালীপুজো হচ্ছে ঠিকই, তবে সেই জাঁকজমক নেই। দুর্গাপুজোর পর করোনা এ বছর থাবা বসিয়েছে কালীপুজোর আনন্দেও। মণ্ডপ, প্রতিমা থেকে আলোকসজ্জায় টেক্কা দেওয়ার প্রতিযোগিতায় এ বার নেই বারাসত বা মধ্যমগ্রামের কোনও পুজোই। প্রতিযোগিতা বরং দুঃস্থদের পাশে দাঁড়ানোয়। দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে অনেকেরই নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়। নিম্নবিত্ত পরিবারগুলিকে কিছুটা স্বস্তি দিতে কোনও কোনও পুজো কমিটি এ বছর আলু, পেঁয়াজ বা অন্যান্য সবজি বিতরণ করবে। আবার কেউ হাসপাতালে মুমূর্ষু রোগীর হাতে খাবার তুলে দেবে। কেউবা বাচ্চাদের জন্য খাবারের প্যাকেট দেবে। কোথাও আবার ইটভাটার শ্রমিকদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ করা হবে। সব মিলিয়ে এ বার মানুষের পাশে দাঁড়ানো নিয়ে প্রতিযোগিতা চলছে বারাসত এবং মধ্যমগ্রামের বিভিন্ন পুজো কমিটির মধ্যে।
EiSamay.Com kalipujo during corona period, organisers trying to help poor people
কালিপুজোর উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী।


বারাসতের কেএনসি রেজিমেন্টের কালীপুজো এ বার ৬১ বছরে পড়েছে। বড় বাজেটের পুজো করার নামডাক আছে ক্লাবের। এ বছর সাধারণ নাটমন্দিরের আদলে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। মাতৃপ্রতিমা সাবেকি। পুজোর বাজেট গতবারের তুলনায় সিকি ভাগ। পুজো উপলক্ষে সমস্ত ধরণের অনুষ্ঠান এ বছর বন্ধই রাখছেন উদ্যোক্তারা। জাঁকজমকের বদলে প্রায় তিন হাজার মানুষের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হবে। এ ছাড়া দুঃস্থদের বস্ত্র বিতরণ-সহ অন্যান্য সামগ্রী বিলি করা হবে। পুজো কমিটির সম্পাদক তথা বারাসত পুরসভার প্রশাসক কমিটির সদস্য অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, 'করোনা পরিস্থিতিতে উৎসবের জৌলুস মানায় না। তাই আমরা মানুষের পাশে থাকতে সামাজিক কাজের উপরেই জোর দিয়েছি।'

বারাসতের সন্ধানীর কালীপুজো এ বছর ৬০ বছরে পড়ল। বড় বাজেটের পুজোর মধ্যে অন্যতম। কিন্তু করোনাকালে জাঁকজমক এড়িয়ে দুঃস্থদের সেবায় জোর দিয়েছেন উদ্যোক্তারা। পুজো কমিটির সম্পাদক বিপুল রায় বলেন, 'এ বছর বাজেটের বেশিরভাগ অর্থই খরচ করব নিম্নবিত্ত পরিবারের সাহায্যে। খাদ্যদ্রব্য বিলি করার পাশাপাশি শীতবস্ত্রও বিলি করা হবে।'

বিদ্রোহী ক্লাবের কালীপুজো এবার ৫৪ বছরে পা দিয়েছে। করোনা আবহে বাজেট কমিয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। রাজবাড়ির আদলে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। ক্লাবের সম্পাদক মানিক দত্ত বলেন, 'করোনা সঙ্কটের পাশাপাশি মূল্যবৃদ্ধির জেরে মানুষ চরম বিপদে পড়েছেন। তাই আমরা এ বার পুজোর চার দিন এলাকার দুঃস্থ মানুষদের আলু, পেঁয়াজ,শাক ও সবজি বিলি করব। এ ছাড়া শুকনো খাবার ও শীতবস্ত্র তুলে দেওয়া হবে।'

নবপল্লির আমরা সবাই শ্যামাপুজো কমিটি পরিচালিত পুজো এ বার চার বছরে পা দিয়েছে। নবপল্লি বয়েজ স্কুল মাঠ সংলগ্ন নাট্যমঞ্চে মায়ের পুজো করা হবে। খরচ বাঁচাতে মণ্ডপ করা হচ্ছে না। মা আসবেন সাবেকি রূপে। পুজো কমিটির সম্পাদক অরুণ ভৌমিক বলেন, 'প্রায় সাত হাজার মানুষকে বিভিন্ন ধরণের তাঁতের শাড়ি, চুড়িদার, জিন্সের প্যান্ট, জামা, চাদর-সহ হাল ফ্যাশনের দামি বস্ত্র দেওয়া হবে। এ ছাড়া বাচ্চাদের জন্য বিস্কুট ও বেবি ফুড দেওয়া হবে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষদের জন্য ট্রাই সাইকেল, দুঃস্থ পরিবারকে গ্যাসের সংযোগ ও ওভেন-সহ অন্যান্য সামগ্রী বিলি করা হবে।'

নবপল্লি অ্যাসোসিয়েশন পুজো এ বার ৪৯ বছরে পড়েছে। নাটমন্দিরের আদলে মণ্ডপে মাতৃপ্রতিমা থাকবেন সাবেকি রূপে। পুজো কমিটির সম্পাদক চম্পক দাস বলেন, 'চার হাজারের বেশি মানুষকে বস্ত্র বিতরণ করা হবে। বারাসত জেলা হাসপাতালের রোগীদের ফল ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।'

তরুছায়া ক্লাবের পুজো ৫১ বছরে পা দিয়েছে। শিবের মহিমা মণ্ডপে ফুটিয়ে তোলা হবে। থিমের নাম দেওয়া হয়েছে মহাকাল। পুজো কমিটির পক্ষ থেকে এ বছর ইটভাটার শ্রমিকদের নতুন জামাকাপড় বিতরণ, পথ শিশুদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল