অ্যাপশহর

দেশের মধ্যে প্রথম, বক্সায় 'রেড হেডেড' শকুন প্রজনন কেন্দ্র

দেশের মধ্যে প্রথম রেড হেডেড শকুন প্রজনন কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের রাজাভাতখাওয়া শকুন প্রজনন কেন্দ্রে। আগামী বছর থেকে শুরু হচ্ছে ওই বিশেষ ধরনের বাহারি শকুনের প্রজনন।

Ei Samay 10 Jan 2021, 1:59 pm
এই সময়, আলিপুরদুয়ার: দেশের মধ্যে প্রথম রেড হেডেড ভালচার প্রজনন কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের রাজাভাতখাওয়া শকুন প্রজনন কেন্দ্রে। আগামী বছর থেকে শুরু হবে ওই বিশেষ ধরনের বাহারি শকুনের প্রজনন। শনিবার বক্সা বার্ড ফেস্টিভ্যালের শেষদিনে বন দপ্তরের ওই নয়া পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিনহা। দেশের একমাত্র শকুন সংরক্ষণ সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী বিভুপ্রকাশের দাবি, 'বর্তমানে গোটা পৃথিবীতে মেরেকেটে মাত্র এক হাজার 'রেড হেডেড ভালচার' অবশিষ্ট রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে বর্তমান সময়ে 'রেড হেডেড' শকুনদের সংরক্ষণে উদ্যোগ নেওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। নাহলে দশ বছরের মধ্যে পৃথিবী থেকে অবলুপ্ত হতে পারে ওই বিশেষ ঝাড়ুদার পাখি।'
EiSamay.Com first in india red headed vulture breeding center at buxa tiger forest
ফাইল ছবি।


রাজ্যে তো নয়ই, দেশের মধ্যে উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও ওডিশায় সাকুল্যে 'রেড হেডেড' শকুনের অস্তিত্ব রয়েছে। ওই ধরনের শকুনের বিশেষত্ব হলো, তারা কখনই পৃথিবীর আর পাঁচটা প্রজাতির শকুনের মতো দলে থাকতে পছন্দ করে না। বরং একান্তে জোড়ায় জোড়ায় থাকে। অন্য শকুনদের যেমন মাদি-পুরুষের তফাত করাটা খালিচোখে অসম্ভব, কিন্তু 'কিং ভালচার' প্রজাতির দেহের আকৃতি ও রং-এর প্রভেদে মাদি বা পুরুষ সহজেই চিহ্নিত করা যায়। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিনহার দাবি, 'আমাদের ওই প্রকল্প চালু হলে শুধু দেশের মধ্যে নয়, সারা পৃথিবীতে 'রেড হেডেড' শকুন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটা নয়া দিগন্ত খুলে যাবে।'

শনিবারই রাজভাতখাওয়া থেকে দ্বিতীয় বার বিপন্ন প্রজাতির এক জোড়া 'হোয়াইট ব্যাকড' প্রজাতির শকুনকে 'প্ল্যাটফর্ম ট্রান্সমিটার টার্মিনাল' প্রতিস্থাপন করে প্রকৃতিতে উন্মুক্ত করা হয়েছে। সঙ্গে ২০১৯ সালের পর ফের ছ'টি হিমালয়ান গ্রিফন প্রজাতির শকুনকেও ছাড়া হয়েছে। তবে এশিয়ার মধ্যে নেপাল সর্বপ্রথম 'হোয়াইট ব্যাকড' শকুন আকাশে উন্মুক্ত করেছিল ২০১৭ সালে। শনিবার পঞ্চমবর্ষীয় বক্সা বার্ড ফেস্টিভ্যালের শেষ দিনে আরও একটি খুশির খবর শুনিয়েছে বনদপ্তর। রাজ্যের বন্যপ্রাণ শাখার প্রধান মুখ্য বনপাল বিনোদ কুমার যাদব বলেন, 'পাখি উৎসবের তিন দিনে বক্সার জঙ্গলে যে ২১৭ প্রজাতির পাখির ছবি লেন্সবন্দি হয়েছে, তার মধ্যে এগারোটি প্রজাতি একেবারেই নতুন। যা বক্সার পাখি বৈচিত্রের সম্ভারকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।' তিনি বলেন, 'ওই তালিকায় নেপাল হাউস মার্টিন, ইন্দো-চাইনিজ রোলার, হিমালয়ান সুইফ্টলেট, থিক বিল্ড ওয়ার্বলার, হিউমস্ ওয়ার্বলার, গ্রেট ময়না, রোজি পিপিট, হিমালয়ান বাজার্ড, রুফাস রাম্পড গ্রাসবার্ড, হোয়াইট রাম্পড স্পাইন টেইল ও ফায়ার ক্যাপড টিট-এর মতো বিরল দর্শন পাখি রয়েছে।'

বক্সার পাখি উৎসবের ওই সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনদিনের মহানন্দা বার্ড ফেস্টিভ্যাল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বনদপ্তর।

পরের খবর