এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: দেশান্তরে পৌঁছে যাবে খাম, খামের উপর ঝলমলে এক নীলাম্বরী শাড়ি। বালুচরী। বাংলা আর বাঙালির ঐতিহ্য, ভালবাসা আর আবেগ। সব মিলিয়ে বাংলার এই বিখ্যাত শিল্পকে আরও একটু বিশ্বজনীন করে তুলতে এগিয়ে এল ভারতীয় ডাক বিভাগ।
স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ উপলক্ষে সোমবার বাঁকুড়া শহরের এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল হলে 'ভার্চুয়াল ডাক টিকিট প্রদর্শনী'র মাধ্যমে এই বিশেষ খামের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। ডাক বিভাগ সূত্রে খবর, বাঁকুড়ার পাঁচমুড়ার টেরাকোটার তৈরি হাতি, ঘোড়া-সহ অন্য সামগ্রী এবং বিষ্ণুপুরের বালুচরি শাড়ির কদর বিশ্বজুড়ে। বছরের বিভিন্ন সময় দেশ বিদেশ থেকে পর্যটকরা আসেন বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়ায়। তাঁদের অন্যতম আগ্রহের বিষয় টেরাকোটা ও বালুচরি শিল্প। আর সেই কারণেই বাঁকুড়ার বিখ্যাত হস্তশিল্পকে আরও বেশি করে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতেই এই উদ্যোগ বলে জানা গিয়েছে।
স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ উপলক্ষে ভারতীয় ডাক বিভাগ এ ধরনের প্রদর্শনীর আয়োজন করছে। রাজ্যের মধ্যে একমাত্র বাঁকুড়াতেই এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। যদিও দেশের গণ্ডী ছাড়িয়ে বিশ্বের যে কোনও প্রান্ত থেকেই অলনাইনে দু'দিনের এই প্রদর্শনী দেখা যাবে।
তবে এই প্রথম নয়। এর আগেও বিষ্ণুপুরের শ্যামরায়ের মন্দির, শিল্পী যামিনী রায়ের শিল্পকর্ম নিয়ে ডাক টিকিট প্রকাশিত হয়েছে ডাক বিভাগের তরফে। এ বার পাঁচমুড়া ও বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্যবাহী শিল্প এবং তার পাশাপাশি মাদুর ও পটচিত্র নিয়েও ডাকবিভাগ বিশেষ কভার তৈরি করেছে। এই বিশেষ খাম বাঁকুড়া মুখ্য ডাকঘর ও কলকাতা GPO-তে পাওয়া যাবে বলে জানান হয়েছে। তা ছাড়া অনলাইনের মাধ্যমে বরাত দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে বলে জানা গিয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গ বিভাগের পোস্টমাস্টার জেনারেল শশীশালিনী কুজুর বলেন, ‘সারা বিশ্বে বাঁকুড়ার পোড়ামাটি আর বালুচরীর কদর রয়েছে। এতে GI-ও রয়েছে। GI থাকলে একটি বিশেষ অঞ্চলকে আন্তর্জাতিক ভাবে চিহ্নিত করতে সুবিধা হয়। আর ভারতীয় ডাক বিভাগের এই উদ্যোগের ফলে এই অসাধারণ শিল্পগুলি বিশ্বের সর্বত্র পৌঁছে যাবে। এরপর আমরা মাদুর এবং বাংলার পটচিত্র নিয়েও খাম প্রকাশ করব।’
বাঁকুড়া শহরের স্ট্যাম্প সংগ্রাহক সংগঠনের সদস্য শৌভিক রায় বলেন, ‘এ ধরনের প্রদর্শনী শহরে প্রথম নয়। এ শহরে উৎসাহী মানুষের সংখ্যা প্রচুর। এ ভাবে এগিয়ে গেলে শিল্প বিপণনেও সুবিধা হয়।’
এ দিনের 'ভার্চুয়াল ডাক টিকিট প্রদর্শনী'তে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ বঙ্গের জেনারেল পোষ্টমাস্টার শশীশালিনী কুজুর, ডিরেক্টর অব পোস্টাল সার্ভিস অশোক পাল, অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রলয় চৌধুরী, সুপারিন্টেন্ডেন্ট অব পোষ্ট (বাঁকুড়া) মধুসূদন রায়, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।