অ্যাপশহর

ম্যানগ্রোভই বাঁচাবে, সুন্দরবনে বার্তা মন্ত্রীর

ম্যানগ্রোভই পারে সুন্দরবনকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করতে। দ্বিতীয় পর্যায়ে সোমবার গোসাবার কুমিরমারি গ্রাম পঞ্চায়েতে সারষা নদীর চরে স্থানীয় মহিলাদের সঙ্গে রীতিমতো কাদায় নেমে ম্যানগ্রোভের চারা লাগালেন রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্ত্রী কুমিরমারি থেকে তিনি চলে যান সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের বসিরহাট রেঞ্জের অফিসঝিলায়।

EiSamay 15 Sep 2020, 8:18 am
এই সময়, গোসাবা: উম্পুন ঘূর্ণিঝড়ের দগদগে ক্ষত এখনও পুরোপুরি মেটেনি। রাক্ষুসে ঘূর্ণিঝড়ে ঘরবাড়ি, বিদ্যুতের খুঁটি, গাছপালা উপড়ে সুন্দরবনে বিভীষিকা নেমে এসেছিল। ধীরে ধীরে মানুষ সেই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি কাটিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে। দুর্গত মানুষজনকে সরকারি ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণেও জোর দিয়েছে রাজ্য সরকার। উম্পুন আছড়ে পড়ার পরপরই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, সুন্দরবন জুড়ে পাঁচ কোটি ম্যানগ্রোভের চারা লাগানো হবে। কারণ, ম্যানগ্রোভই পারে সুন্দরবনকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করতে। ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসন, বন দপ্তরের উদ্যোগে সুন্দরবনের বাদাবনে ম্যানগ্রোভ চারা লাগানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে সোমবার গোসাবার কুমিরমারি গ্রাম পঞ্চায়েতে সারষা নদীর চরে স্থানীয় মহিলাদের সঙ্গে রীতিমতো কাদায় নেমে ম্যানগ্রোভের চারা লাগালেন রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
EiSamay.Com mangrove trees
বৃক্ষ রোপন


এ দিন মন্ত্রী সড়কপথে কলকাতা থেকে গদখালি আসেন। এরপর নদীপথে সোজা গোসাবার ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত কুমিরমারি গ্রাম পঞ্চায়েতে। এখানেই মন্ত্রী নদীর চরে নেমে হরেক রকমের ম্যানগ্রোভের চারা লাগান। বনমন্ত্রী বলেন, 'একমাত্র ম্যানগ্রোভই পারে সুন্দরবনকে প্রাকৃতিক ঝড়-ঝঞ্ঝা থেকে রক্ষা করতে। শুধু তাই নয় ম্যানগ্রোভের প্রাচীর নদীবাঁধের ভাঙনও আটকায়। তাই মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী সেই কাজকে অগ্রাধিকার দিতেই ইতিমধ্যে সুন্দরবনে দু'কোটি ম্যানগ্রোভ চারা গাছ লাগানো হয়েছে। বাকি তিন কোটি ম্যানগ্রোভ চারাও আগামী ডিসেম্বর মধ্যে লাগিয়ে দেওয়া হবে।' সুন্দরবনের গোসাবা, বাসন্তী, ক্যানিং, কুলতলি, রায়দিঘি জুড়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর ম্যানগ্রোভের জঙ্গল কেটে মাছের ভেড়ি তৈরির বিষয়টি আধিকারিকদের খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

এ দিন মন্ত্রী কুমিরমারি থেকে তিনি চলে যান সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের বসিরহাট রেঞ্জের অফিসঝিলায়। সেখানে দুই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহযোগিতায় সুন্দরবনের নদী-খাঁড়িতে মাছ-কাঁকড়া ধরতে যাওয়া মৎস্যজীবীদের হাতে রান্নার গ্যাস ও ওভেন তুলে দেন। কারণ, অনেকেই জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে প্রাণের মায়া ত্যাগ করে জঙ্গলে ঢোকেন। এ দিন একশো জনের হাতে গ্যাস ওভেন তুলে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবীদের গ্রামের পুকুরে দেশি মাছ চাষ করার জন্য তিন কেজি করে মাছের পোনা দেওয়া হয়। সোমবার বসিরহাট রেঞ্জ অফিসের একটি পুকুরে মন্ত্রী নিজের হাতে সেই মাছের পোনা ছাড়েন।

এ দিন বনমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বনবল শীর্ষ) রবিকান্ত সিনহা, সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা তাপস দাস, উপ ক্ষেত্র অধিকর্তা দীপক এম, সহ ক্ষেত্র অধিকর্তা অনিন্দ্য গুহ ঠাকুরতা ও ব্যাঘ্র বাঁচাও আন্দোলনের মুখ জয়দীপ কুণ্ডু।

রাজ্যে হাতির মৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মন্ত্রী জানান,আগামী সপ্তাহেই তিনি এ নিয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক বসবেন। যেখানে ট্রেনের ধাক্কায় অথবা বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর বিষয়গুলি গুরুত্ব সহকারে আলোচনা হবে। বিকল্প সমাধানের পথ খোঁজা হবে। সেই কাজে জার্মানি, আমেরিকা কিংবা কানাডার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে।

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল