অ্যাপশহর

জলদাপাড়ায় আবারও গন্ডার হত্যা, গায়েব শৃঙ্গ

জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের পশ্চিম রেঞ্জের পঞ্চাশ ফুট বিটের জেপি ৫ কম্পার্টমেন্টের গভীর জঙ্গলে একটি পূর্ণবয়স্ক মাদি গন্ডারের শৃঙ্গহীন মৃতদেহ উদ্ধার হয়। গন্ডারের মৃতদেহের ময়নাতদন্তের পর সেটির খুলি এবং কপালে দু’টো বুলেট মিলেছে।

EiSamay.Com 1 Nov 2019, 8:32 am
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: উৎসব মিটতেই জঙ্গলে থাবা চোরাশিকারিদের। ২০১৮-র পর ফের গন্ডার নিধন জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে। বৃহস্পতিবার ভোরে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের পশ্চিম রেঞ্জের পঞ্চাশ ফুট বিটের জেপি ৫ কম্পার্টমেন্টের গভীর জঙ্গলে একটি পূর্ণবয়স্ক মাদি গন্ডারের শৃঙ্গহীন মৃতদেহ উদ্ধার হয়। গন্ডারের মৃতদেহের ময়নাতদন্তের পর সেটির খুলি এবং কপালে দু’টো বুলেট মিলেছে। এগুলি স্বয়ংক্রিয় রাইফেল থেকে ছোড়া বলে জানা গিয়েছে।
EiSamay.Com jaldapara


জলদাপাড়া বনবিভাগের ডিএফও কুমার বিমল বলেন, ‘বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিট নাগাদ বন্দুকের তীব্র আওয়াজে কেঁপে ওঠে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান। সেই সময় আমি জলদাপাড়াতেই উপস্থিত ছিলাম। কিছু একটা বিপদ ঘটেছে, আঁচ করেই সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গলে চিরুনি তল্লাশিতে বেরিয়ে পড়ি। বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ জঙ্গলের মধ্যে গন্ডারটির নিথর মৃতদেহ উদ্ধার হয়।’

২০১৫ সালের ৮ আগস্ট জলদাপাড়া পশ্চিম রেঞ্জের হলং বিটে একটি গন্ডারকে হত্যা করে শৃঙ্গ কেটে নিয়ে পালিয়েছিল চোরাশিকারিরা। গত বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি কোদালবস্তি রেঞ্জে শেষ বারের মতো গন্ডার চোরাশিকারের ঘটনা ঘটে। প্রতি বছরই উৎসবের মরসুমে চোরাশিকারিদের তৎপরতা নিয়ে বন দপ্তরকে আগাম সতর্ক করে গোয়েন্দা দপ্তর। এ বারও তার কোনও ব্যতিক্রম হয়নি। কারণ ওই সময়ে সাধারণ মানুষ ও পুলিশ-প্রশাসনের ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে সক্রিয় হয়ে ওঠে চোরাশিকারিরা।

তবে বন দপ্তর নিশ্চিত যে, ওই গন্ডার হত্যার ছক একদিনের নয়। স্থানীয় বনবস্তিতে গা ঢাকা দিয়ে গন্ডারটির উপর নজর রাখছিল চোরাশিকারিরা। গন্ডার তিন মাস ধরে একই জায়গায় মলত্যাগ করে। এ তথ্য চোরাচালান চক্রের ভালো করেই জানা। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে গন্ডারটির আনাগোনার সময় ও গতিবিধির উপর নজর রাখা হয়েছিল। তবে স্থানীয় বনবস্তিবাসীদের সহায়তায় যে গন্ডার নিধনের ব্লু প্রিন্ট তৈরি হয়েছিল, সে ব্যাপারে বনকর্তারা নিশ্চিত। কারণ ঠিক যে এলাকায় গন্ডারটিকে হত্যা করা হয়েছে, সেখান থেকে খাঁউচাঁদপাড়া ও ময়রাডাঙায় পৌঁছনোর দু’টি সহজ বনপথ রয়েছে। হত্যাস্থলের পাশেই মিলেছে গন্ডারের মলের উঁচু ঢিবি। তার থেকেই প্রমাণিত যে, মৃত গন্ডারটি ওই নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়মিত ভাবে মলত্যাগ করতে আসত । গন্ডার হত্যার ওই ষড়যন্ত্রের পেছনে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের চোরাশিকারিদের যোগসাজশ উড়িয়ে দিচ্ছে না বন দপ্তর।

চোরাশিকারিদের চিহ্নিত করতে ইতিমধ্যেই তদন্তে নামানো হয়েছে বন দপ্তরের দুই গোয়েন্দা কুকুর করিম ও রানিকে। গন্ডারটির মৃতদেহে পচন না ধরায় প্রমাণিত হয়েছে যে, মৃত গন্ডারটি একেবারেই টাটকা শিকার। গন্ডার হত্যার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের বন্যপ্রাণ শাখার প্রধান মুখ্যবনপাল রবিকান্ত সিনহা। ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে তদন্ত সামাল দিচ্ছেন উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণ শাখার মুখ্য বনপাল উজ্জ্বল ঘোষ ও জলদাপাড়া বন বিভাগের ডিএফও কুমার বিমল। রবিকান্ত সিনহা বলেন, ‘বনকর্মীরা সজাগ থাকা সত্ত্বেও নিশ্চয় কোনও বড় ফাঁক তৈরি হয়েছিল। না হলে একটি গন্ডারকে ওই ভাবে হত্যা করা সম্ভব নয়। তদন্ত শুরু হয়েছে। গাফিলতি প্রমাণিত হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল