অ্যাপশহর

সিঙ্গুরের জেলা থেকে শুভেন্দুর সভায়, হস্তক্ষেপ স্বয়ং মমতার

রাজ্যে ২০১১-র পরিবর্তনে অনুঘটক যে দুই জমি-আন্দোলন, সেই দুই গড়ে যুগপৎ দলীয় অন্তর্বিরোধে ভোটের আগে অস্বস্তিতে তৃণমূল। নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর বিদ্রোহের আভাসে জল্পনা চলছিলই। এ বার জুড়ল সিঙ্গুরও। পরিস্থিতি এমনই যে স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে।

EiSamay.Com 12 Nov 2020, 9:02 am
এই সময়, হুগলি: রাজ্যে ২০১১-র পরিবর্তনে অনুঘটক যে দুই জমি-আন্দোলন, সেই দুই গড়ে যুগপৎ দলীয় অন্তর্বিরোধে ভোটের আগে আচমকাই অস্বস্তিতে তৃণমূল। নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর বিদ্রোহের আভাসে জল্পনা চলছিলই। এ বার জুড়ল সিঙ্গুরও। হুগলিতে দলের নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা নিয়ে একাধিক নেতা-বিধায়কের বিদ্রোহে আবার যুক্ত হয়েছে নন্দীগ্রাম-শুভেন্দুও। হুগলির 'বিদ্রোহী'রা অনেকে মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর সভায় হাজির হওয়ার পর পরিস্থিতি এমনই যে স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। তার পরেও শুভেন্দুর মতো সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের এক নেতা ও বিধায়কও দল ছাড়ার ভাবনার কথা ছড়িয়েছেন ঘনিষ্ঠ মহলে।
EiSamay.Com after subhendu adhikari in nandigram new worry is singur, mamata banerjee herself intervened
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


মঙ্গলবার হুগলির একাংশ নেতাকর্মী নন্দীগ্রামে হাজির হতেই তৃণমূলে তোলপাড় শুরু হয়। বুধবার তৃণমূলনেত্রী সিঙ্গুর জমি-আন্দোলনের এক নেতা তথা বিধায়ককে ফোন করে জেলা কমিটিতে এক ব্লক সভাপতিকে বহাল রাখার নির্দেশ দেন। কিন্তু নেত্রীর নির্দেশেও অনড় থাকেন সেই নেতা। এর পরেই ওই নেতা ঘনিষ্ঠ মহলে বিধায়ক ও দলীয় সব পদ ছাড়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। বিধানসভা ভোটের মুখে দলে বিদ্রোহে যে স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে, এতেও বিড়ম্বনা আরও বেড়েছে তৃণমূল শিবিরে। বিপরীতে উল্লসিত বিরোধীরা।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলির নতুন জেলা কমিটি নিয়ে অনেক নেতা-কর্মীর অসন্তোষের খবর পান মমতা। সিঙ্গুর থেকে পান্ডুয়া ও আরামবাগে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। তার উপর 'বিদ্রোহী'রা শুভেন্দুর কর্মসূচিতে যাওয়ায় বিপদ টের পান নেতৃত্ব। শুভেন্দুকে নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে সিঙ্গুরের জেলাতেও বিদ্রোহ বাড়ুক--কিছুতেই চান না মমতা। তাই বুধবার জেলার কয়েক জন বিধায়ক ও নেতাকে ফোন করেন। নতুন জেলা কমিটি ঘোষণার পর প্রথম বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন সিঙ্গুরের বিধায়ক মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। সিঙ্গুর ব্লক সভাপতির পদ থেকে তাঁর অনুগামী মহাদেব দাসকে কোনও কারণ ছাড়াই সরিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে সাংবাদিক বৈঠক করে তেমন হলে দল ছাড়ারও হুমকি দেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, নেত্রীর নির্দেশে বুধবার রাতে প্রবীণ রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে বৈঠকে বসেন হুগলি জেলা সভাপতি। কিন্তু সিঙ্গুর আন্দোলনেরই আর এক নেতাকে নিয়ে সমস্যা বেধেছে।

মঙ্গলবার পান্ডুয়াতেও ব্লক সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে দলের নেতাকর্মীরা সাংবাদিক বৈঠকে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতির একাধিক সদস্যও জানিয়ে দেন, কমিটিতে বদল না-হলে চরম সিদ্ধান্ত নেবেন। এই আবহেই আরামবাগ, হরিপাল, তারকেশ্বর, উত্তরপাড়া, ডানকুনি থেকে অনেকে নন্দীগ্রামে যাওয়ায় দলে উত্তেজনা বেড়েছে। হুগলি জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ সমীরণ মিত্রও নন্দীগ্রামে গিয়েছিলেন। তাঁর অবশ্য দাবি, 'শুভেন্দু আমার দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক সহকর্মী। উনি এখনও তৃণমূলেই রয়েছেন। আমাদের যেতে বাধা কোথায়?' সর্বশেষ খবর, অসিত-সমীরণদেরও মানভঞ্জনের চেষ্টা হচ্ছে।

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল