এই সময়: শুক্রবার সকাল সাড়ে এগারোটা। লকডাউন বলবৎ পুরোদমে। সুনসান হাওড়া ব্রিজ। কলকাতার দিকে পুলিশের নাকা চেকিংয়ে থামানো হল হাওড়া থেকে আসা একটি বাইক। আরোহীর গায়ে রক্তের দাগ। অতএব, কলকাতা পুলিশের কর্তব্যরত কর্মীরা একটু বেশিই সজাগ হলেন। এবং হলেন বলেই শুক্রবার রক্ত পেল থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত একটি কিশোর। গঙ্গার পুব ও পশ্চিম পাড়ের দুই শহরকে জুড়ে দিল মানবিকতার এক অদৃশ্য সেতু, যার কারিগর একজন সিভিক ভলান্টিয়ার।
থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এগারো বছরের ছেলের জন্য রক্ত আনতে হাওড়ার মালিপাঁচঘড়া থেকে কলকাতার পদ্মপুকুরে একটি ব্লাড ব্যাঙ্কে আসছিলেন শুভেন্দু ভুক্ত। কুড়ি দিন অন্তর ব্লাড ট্রান্সফিউশনের প্রয়োজন পড়ে তাঁর ছেলের। কিন্তু করোনার জন্য রক্তদাতা পাওয়া রীতিমতো কঠিন হয়ে পড়েছে। শুক্রবার শুভেন্দুর ছেলে সুপ্রিয়র ব্লাড ট্রান্সফিউশনের দিন ছিল। রক্তদাতা না-পেয়ে শুভেন্দু ঠিক করেন নিজেই রক্ত দেবেন। ব্লাড ব্যাঙ্কে নিজের রক্ত দিয়ে ছেলের জন্য প্রয়োজনীয় গ্রুপের রক্ত আনবেন। লকডাউনের মধ্যে বেরিয়ে হাওড়া ব্রিজে ওঠার মুখেই দুর্ঘটনায় পড়েন। ভিজে রাস্তায় বাইকের চাকা কোনও ভাবে পিছলে যায়। চোট লাগে শুভেন্দুর। কেটে-ছড়ে যায় শরীরের নানা জায়গায়।
কিন্তু বাবা তিনি! তাই চোটের পরোয়া করার অবকাশ তাঁর নেই। সেই অবস্থাতেই বাইক তুলে ফের স্টার্ট দিয়েছেন। নাকা চেকিংয়ে তাঁকে আটকান পুলিশকর্মীরা। সব শোনার পরে হাওড়া ব্রিজ ট্র্যাফিক গার্ডের এক সিভিক ভলান্টিয়ার এগিয়ে আসেন রক্ত দিতে। পেশায় গেঞ্জির কারখানার শ্রমিক শুভেন্দুর কথায়, 'দুর্ঘটনার পরে মাথা ঘুরছিল। অসুস্থ বোধ করছিলাম। রক্ত দেওয়ার মতো অবস্থায় ছিলাম না। এই লকডাউনের মধ্যে কোথায় রক্তদাতা পাব, তা-ও বুঝতে পারছিলাম না। এই পুলিশকর্মীরা না-থাকলে ছেলেকে হয়তো রক্তই দেওয়া যেত না।' করোনার মধ্যে অনেকেই রক্ত দিতে কোথাও যেতে চাইছেন না। আর শুভেন্দুর ছেলের জন্য যিনি রক্ত দিলেন, সেই মহম্মদ নিয়াজের বক্তব্য, 'একজন বাবা তাঁর ছেলের জন্য মরিয়া হয়ে রক্তের খোঁজ করছেন। সে কথা জানার পরে রক্তদান করব কি না, তা নিয়ে দ্বিতীয় কিছু ভাবার জায়গা ছিল না। একজন মানুষ হিসেবে কর্তব্য পালন করেছি।'
শুভেন্দু জানান, তাঁর ছেলে এক বছর বয়স থেকে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত। নিয়মিত ট্রান্সফিউশন করাতে হয়। আগে স্থানীয় ক্লাবে মাঝেমধ্যে রক্তদান শিবির হতো। ফলে সেখান থেকে রক্তের কার্ড পেতেন। সেই কার্ড দেখিয়ে ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত পাওয়া যেত। সে সব এখন বন্ধ। এর উপরে করোনার ভয়ে অধিকাংশ দাতা হাসপাতালে গিয়ে রক্তদানে রাজি হচ্ছেন না। শুভেন্দু বলেন, 'এই অবস্থায় কখনও আমি বা আমার স্ত্রী, কখনও কোনও আত্মীয়- এ ভাবেই রক্ত জোগাড় করছি।' শুক্রবার নিয়াজ যখন রক্ত দিতে এগিয়ে আসেন, তখন নাকা চেকিংয়ের উপস্থিত অফিসারেরা তাঁকে শুভেন্দুর সঙ্গে যাওয়ার অনুমতি দিতে দেরি করেননি। পদ্মপুকুরে ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে 'এ পজিটিভ' রক্ত দেন নিয়াজ। পরিবর্তে ছেলের জন্য 'ও পজিটিভ' রক্ত নিয়ে হাওড়ার হাসপাতালে ফেরেন শুভেন্দু।
মানবিকতার কোনও লকডাউন নেই।
এই সময় ডিজিটাল এখন টেলিগ্রামেও। সাবস্ক্রাইব করুন, থাকুন সবসময় আপডেটেড। জাস্ট এখানে ক্লিক করুন।
থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এগারো বছরের ছেলের জন্য রক্ত আনতে হাওড়ার মালিপাঁচঘড়া থেকে কলকাতার পদ্মপুকুরে একটি ব্লাড ব্যাঙ্কে আসছিলেন শুভেন্দু ভুক্ত। কুড়ি দিন অন্তর ব্লাড ট্রান্সফিউশনের প্রয়োজন পড়ে তাঁর ছেলের। কিন্তু করোনার জন্য রক্তদাতা পাওয়া রীতিমতো কঠিন হয়ে পড়েছে। শুক্রবার শুভেন্দুর ছেলে সুপ্রিয়র ব্লাড ট্রান্সফিউশনের দিন ছিল। রক্তদাতা না-পেয়ে শুভেন্দু ঠিক করেন নিজেই রক্ত দেবেন। ব্লাড ব্যাঙ্কে নিজের রক্ত দিয়ে ছেলের জন্য প্রয়োজনীয় গ্রুপের রক্ত আনবেন। লকডাউনের মধ্যে বেরিয়ে হাওড়া ব্রিজে ওঠার মুখেই দুর্ঘটনায় পড়েন। ভিজে রাস্তায় বাইকের চাকা কোনও ভাবে পিছলে যায়। চোট লাগে শুভেন্দুর। কেটে-ছড়ে যায় শরীরের নানা জায়গায়।
কিন্তু বাবা তিনি! তাই চোটের পরোয়া করার অবকাশ তাঁর নেই। সেই অবস্থাতেই বাইক তুলে ফের স্টার্ট দিয়েছেন। নাকা চেকিংয়ে তাঁকে আটকান পুলিশকর্মীরা। সব শোনার পরে হাওড়া ব্রিজ ট্র্যাফিক গার্ডের এক সিভিক ভলান্টিয়ার এগিয়ে আসেন রক্ত দিতে। পেশায় গেঞ্জির কারখানার শ্রমিক শুভেন্দুর কথায়, 'দুর্ঘটনার পরে মাথা ঘুরছিল। অসুস্থ বোধ করছিলাম। রক্ত দেওয়ার মতো অবস্থায় ছিলাম না। এই লকডাউনের মধ্যে কোথায় রক্তদাতা পাব, তা-ও বুঝতে পারছিলাম না। এই পুলিশকর্মীরা না-থাকলে ছেলেকে হয়তো রক্তই দেওয়া যেত না।' করোনার মধ্যে অনেকেই রক্ত দিতে কোথাও যেতে চাইছেন না। আর শুভেন্দুর ছেলের জন্য যিনি রক্ত দিলেন, সেই মহম্মদ নিয়াজের বক্তব্য, 'একজন বাবা তাঁর ছেলের জন্য মরিয়া হয়ে রক্তের খোঁজ করছেন। সে কথা জানার পরে রক্তদান করব কি না, তা নিয়ে দ্বিতীয় কিছু ভাবার জায়গা ছিল না। একজন মানুষ হিসেবে কর্তব্য পালন করেছি।'
শুভেন্দু জানান, তাঁর ছেলে এক বছর বয়স থেকে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত। নিয়মিত ট্রান্সফিউশন করাতে হয়। আগে স্থানীয় ক্লাবে মাঝেমধ্যে রক্তদান শিবির হতো। ফলে সেখান থেকে রক্তের কার্ড পেতেন। সেই কার্ড দেখিয়ে ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত পাওয়া যেত। সে সব এখন বন্ধ। এর উপরে করোনার ভয়ে অধিকাংশ দাতা হাসপাতালে গিয়ে রক্তদানে রাজি হচ্ছেন না। শুভেন্দু বলেন, 'এই অবস্থায় কখনও আমি বা আমার স্ত্রী, কখনও কোনও আত্মীয়- এ ভাবেই রক্ত জোগাড় করছি।' শুক্রবার নিয়াজ যখন রক্ত দিতে এগিয়ে আসেন, তখন নাকা চেকিংয়ের উপস্থিত অফিসারেরা তাঁকে শুভেন্দুর সঙ্গে যাওয়ার অনুমতি দিতে দেরি করেননি। পদ্মপুকুরে ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে 'এ পজিটিভ' রক্ত দেন নিয়াজ। পরিবর্তে ছেলের জন্য 'ও পজিটিভ' রক্ত নিয়ে হাওড়ার হাসপাতালে ফেরেন শুভেন্দু।
মানবিকতার কোনও লকডাউন নেই।
এই সময় ডিজিটাল এখন টেলিগ্রামেও। সাবস্ক্রাইব করুন, থাকুন সবসময় আপডেটেড। জাস্ট এখানে ক্লিক করুন।