অ্যাপশহর

কাশ্মীরে জঙ্গি হানায় হত মুর্শিদাবাদের দুই জওয়ান

ভাই মাহবুব হাসান বলেন, ‘ইফতারের জন্য দাদা ফল কিনতে গিয়েছিল দোকানে। সেখানেই জঙ্গিরা গুলি করে। ওখানেই দাদা মারা যায় বলে আমাদেরকে জানানো হয়েছে। দাদার পুরো পরিবারটা শেষ হয়ে গেল।’

EiSamay.Com 22 May 2020, 11:56 am
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: ইফতারের জন্য ফল কিনতে গিয়ে কাশ্মীরে জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হল মুর্শিদাবাদের দুই বিএসএফ জওয়ানের। বুধবার বিকেলে কাশ্মীরের পানচেডের কাছে জওয়ানরা দোকানে ফল কেনার সময় বাইকে করে এসে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় জঙ্গিরা। এর পর জওয়ানদের কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রগুলি ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায় তারা। ঘটনাস্থলেই নিহত হন মুর্শিদাবাদের রেজিনগর থানার জিয়াউর হক(৩৩)। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় জলঙ্গি থানার রানা মণ্ডল (২৮)-এর। বুধবার রাতে দুই পরিবারের কাছে মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই শোকের ছায়া নেমে আসে গ্রাম জুড়ে।
EiSamay.Com jawans killed in kashmir
সন্ত্রাসবাদী হামলা


ঈদের ছুটিতে তাঁদের ফেরার আশায় ছিল দু’জনেরই পরিবার। একদিকে লকডাউন, অন্য দিকে, উম্পুনের তাণ্ডব সামাল দিতে যখন ব্যস্ত পরিবারের লোকেরা, ঠিক তখনই এল দুঃসংবাদ।

মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির সাহেবরামপুরে বাড়ি রানা মন্ডলের। বছর সাতেক আগে তিনি বিএসএফের চাকরিতে যোগ দেওয়ায় খানিক স্বচ্ছলতা এসেছিল অভাবের সংসারে। পরিবারে বৃদ্ধ বাবা-মা ছাড়াও স্ত্রী ও ছয় মাসের সন্তান রয়েছে। ঘটনার কিছুক্ষণ আগেও স্ত্রী জেসমিনের সঙ্গে কথা বলেন রানা। ডিউটি করতে করতেই কিছুটা দূরে ইফতারের জন্য ফল কিনতে গিয়েছিলেন তিনি।

জেসমিনা বলেন, ‘ইফতার হয়ে যাওয়ার পর আমাকে ফোন করেন স্বামী। পরে কিছুতেই যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। বারবার ফোন করছিলাম। উত্তর না পেয়ে ওঁর এক বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ করি। তখন জানতে পারি এই দুর্ঘটনার কথা। আমাদের সব শেষ হয়ে গেল।’ ছয় মাসের কন্যাসন্তানকে কোলে করে নিয়ে নিজের ভাগ্যকে দোষারোপ করে চলেছেন তিনি। মৃতের বাবার রুপচাঁদ মন্ডল বলেন, ‘সকালেও কথা হয়েছিল। ঈদে বাড়ি ফিরে আসার কথা বলছিল। ট্রেন চলাচল করলেই ফিরবে বলেছিল। ও আসবে কিন্তু বাবা বলে আর ডাকবে না।’

সন্তানের এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না মা সানোয়ারা বিবি। তিনি বলেন, ‘ছেলে চাকরি পাওয়ায় একটু সুখের মুখ দেখেছিলাম। আল্লাহ সেটা আর সহ্য করতে পারল না। কেড়ে নিলো আমার ছেলেকে। আমরা কী নিয়ে বাঁচব আর?’ মৃত্যুর খবর পেয়ে জেলা পরিষদের সদস্য রাফিকা সুলতানা গিয়েছিলেন পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে। তিনি বলেন, ‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। রোজা চলছে। তার মধ্যে এই খবরে গোটা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’

মুর্শিদাবাদের রেজিনগরের শোকে বিহ্বল গোটা গ্রাম। জিয়াউর হকের বাড়ি রেজিনগরের গোপালপুর গ্রামে। পরিবারে বৃদ্ধ মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। স্ত্রী থাকেন দুই মেয়েকে নিয়ে। বড়টি চার বছরের ও কোলেরটি দু’বছরের। বছর তেরো ধরে বিএসএফ-এ চাকরি করছেন জিয়াউর। আগে চণ্ডীগড়ে থাকলেও মাস তিনেক আগে কাশ্মীরে পোস্টিং হয়েছিল।

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল