অ্যাপশহর

নীতি রেখেই ইনফিকে চায় রাজ্য

বিনিয়োগ টানতে রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে যখন তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে তখন ইনফোসিসের পিছিয়ে যাওয়া সারা দেশে বাংলায় বিনিয়োগ নিয়ে নেতিবাচক বার্তা দিয়েছে বলে অভিযোগ অনেকেরই৷

EiSamay.Com 1 Jul 2016, 8:47 am
সময় : রাজ্যে শিল্প বিনিয়োগ হোক বা -হোক , তৃণমূল সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসেও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বা সেজ -অনুমতি মিলবে না , বৃহস্পতিবার সেটা পরিষ্কার করে দিলেন তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ব্রাত্য বসু৷ এ দিন বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রবীণ বিধায়ক অসিত মিত্র অভিযোগ করেন -সেজ এর অনুমতি না মেলায় ইনফোসিস আসছে না এবং তার ফলে কয়েক হাজার ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থানের পথ রুদ্ধ হয়েছে। জবাবে ব্রাত্য বলেন , সেজ এড়িয়ে কোনও ভাবে ইনফোসিসকে রাজ্যে নিয়ে আসা যায় কি না তা খতিয়ে দেখতে চান তিনি৷ মন্ত্রী বলেন , ‘ইনফোসিসের সঙ্গে কথা বলেই এই জট ছাড়ানোর চেষ্টা করবে সরকার৷ রাজ্যে সবাই স্বাগত৷ আমরা চাই সবাই এখানে আসুন , কাজ করুন৷ কথা বলে দেখব কোথায় সমস্যা রয়েছে৷ ’ তার পরই অসিতের উদ্দেশে বাত্য বলেন , ‘কথা বলতে আমরা সব সময় আগ্রহী। আপনি কথা বলিয়ে দিন , কথা বলব৷ ’সেজ নিয়ে তৃণমূল সরকারের অনড় অবস্থানের কারণে রাজারহাটে ৫০ একর জমি নিয়েও কাজ শুরু করেনি এই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা৷
EiSamay.Com no permission for sez in west bengal
নীতি রেখেই ইনফিকে চায় রাজ্য


বিনিয়োগ টানতে রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে যখন তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে তখন ইনফোসিসের পিছিয়ে যাওয়া সারা দেশে বাংলায় বিনিয়োগ নিয়ে নেতিবাচক বার্তা দিয়েছে বলে অভিযোগ অনেকেরই৷ এই পরিস্থিতিতে তথ্যপ্রযুক্তি দন্তরের দায়িত্ব নিয়ে ইনফোসিস জট কাটাতে চাইছেন ব্রাত্য৷ কিন্ত্ত , সমস্যা হল সেজ নিয়ে এখনও অবস্থান বদলায়নি মমতা সরকার৷ ২০১১ সালে তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তাহারে যতটা কঠোর অবস্থান ছিল ২০১৬ সালের ইস্তাহারে ততটা না থাকলেও , মমতা সেজ নিয়ে নরম হওয়ার কোনও ইঙ্গিত এখনও দেননি৷ ব্রাত্য এদিন বলেন , ‘সেজ নিয়ে সিদ্ধান্ত তথ্যপ্রযুক্তি দপ্তর নেয় না৷ তবু আমরা বৃহত্তর প্রেক্ষাপট থেকে বলছি যে পরিকাঠামো আমরা তৈরি করেছি তা আপনারা (ইনফোসিস ) গ্রহণ করুন৷ ’সেজের বিষয়টি তৃণমূল সরকারের মন্ত্রীদের কাছে অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ায় ইনফোসিস যদি সেজ নিয়ে অনড় থাকে তা হলে জট খোলার সম্ভবনা দূর অস্ত্৷ ব্রাত্যর কথায় সেই ইঙ্গিতও মিলেছে এ দিন৷

তিনি বলেন , ‘বিষয়টি হল , রাজ্য সরকার নির্দিষ্ট নীতির ভিত্তিতে কোনও সংস্থার সঙ্গে কথা বলবে না৷ সাধারণ ভাবে কথা বলবে৷ ’ দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে যখন কগনিজেন্ট , অ্যামাজনের মতো বিশ্ববিখ্যাত সংস্থার বিনিয়োগ আসছে সেখানে দেশীয় সংস্থা ইনফোসিসকে রাজ্যে আনতে হিমশিম পশ্চিমবঙ্গ৷ এই মলিন চিত্রকে ঢাকতে বেলুড় , বানতলা , কোচবিহারে কী ভাবে তথ্যপ্রযুক্তি তালুক তৈরির কাজ চলছে সেই ফিরিস্তি দেন ব্রাত্য৷ সম্প্রতি রাজ্যে দু’টি বড় তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা এসেছে বলেও দাবি করেন তিনি৷

রাজ্যে বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলি না এলে এখানে নতুন উদ্যোগপতি বা স্টার্টআপ সংস্থা তৈরি করা , বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে, অচিরেই মুখ থুবড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞমহল৷ এ রাজ্যে স্টার্টআপ তৈরির ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির সংগঠন ন্যাসকম যে ‘১০০০০ স্টার্টআপস ওয়্যারহাউস ’ উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমানে তার সাফল্য সংগঠনের বেঙ্গালুরুর ইনকিউবেশন সেন্টারের পরই৷ ২০১৫ সালে তৈরি হওয়া ন্যাসকমের কলকাতা ইনকিউবেশন সেন্টারে ৩৫টি সংস্থা প্রশিক্ষণ নেয় এবং তার মধ্যে ১৫টি সংস্থা ইতিমধ্যেই নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়েছে৷ এই সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে , এ বছর ইনকিউবেশন সেন্টারের সম্প্রসারণের কথাও ভাবছে ন্যাসকম৷

কিন্ত্ত , অদূর ভবিষ্যতে এই প্রচেষ্টা আদৌ কতটা সফল হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত একটা অংশ৷ এক তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার পদস্থ কর্তা বলেন , ‘স্টার্টআপ সংস্থাগুলি যাঁরা তৈরি করেন তাঁরা সাধারণত কোনও বড় সংস্থায় কিছুদিন কাজ করার পর সেই কাজ ছেড়ে নিজেদের সংস্থা তৈরি করেন৷ কিন্ত্ত , রাজ্যে যদি বড় সংস্থাই না আসে তা হলে এদের পাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না৷ ’ তাঁর কথায় , ‘স্টার্টআপ সংস্থাগুলিকে ব্যবসার পথ দেখানোর ‘মেন্টরিং ’-এর প্রশিক্ষণও দেয় এই বড় সংস্থাগুলি৷ কিন্ত্ত অন্য রাজ্যে কর্মরত হাই -এন্ড কাজে দক্ষ এমন কেউই কলকাতায় ফিরে আসতে চায় না৷ ’তবে ইনফোসিস রাজ্যে না এলেও তথ্যপ্রযুক্তিতে বিনিয়োগ থেমে থাকেনি বলে দাবি করেন ব্রাত্য৷

তাঁর সাফ কথা , ‘২০১৫ -১৬ অর্থ বর্ষে রাজ্যে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে বিনিয়োগ হয়েছে ২২১৯ .৭৫ কোটি টাকা৷ ২০১৪ -১৫ অর্থবর্ষে বিনিয়োগ হয়েছে ৭৪৯ কোটি টাকা৷ ২০১৩ -১৪ অর্থবর্ষে রাজ্যে ১২৬৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ এসেছে৷ ’ কিন্ত্ত , কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার কটাক্ষ , ‘রাজারহাটে হাজার হাজার স্কোয়ার ফিট ফাঁকা পড়েই থাকছে৷ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের নৌকা নিয়ে চলছে রাজ্য সরকার৷ জমি নিয়ে রাজ্য সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির বদল না হলে কোনও বিনিয়োগই আসবে না৷ ’

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল