অ্যাপশহর

'স্কুল যাস না কেন?' নাবালকের জবাব, 'বাবা হ‌ইচু স্যার'

করোনার কারণে লকডাউন। বন্ধ স্কুল, পড়াশোনার সঙ্গেও সম্পর্ক ছিন্ন বহু পড়ুয়ায়। বছর দেড়েক বাদে স্কুল খোলার পর পড়ুয়াদের স্কুলে ফেরাতে গিয়ে একের পর এক তিক্ত অভিজ্ঞতায় উদ্বেগে শিক্ষক-শিক্ষিকারা

EiSamay.Com 29 Nov 2021, 8:35 pm
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক : করোনা কারণে প্রায় বছর দেড়েকেরও বেশি সময় বন্ধ স্কুল। অনলাইনে ক্লাস করার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে ট্যাব, স্মার্টফোনের ব্যবস্থা করা হলেও শেষ পর্যন্ত ভার্চুয়াল ক্লাসে হাজিরা মেলেনি অনেকেরই। ১৬ নভেম্বর থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্যে খুলেছে স্কুল। ক্লাসছুট পড়ুয়াদের স্কুলে ফেরাতে বাড়ি যেতেই চক্ষুচড়ক গাছ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।
EiSamay.Com child marriage


লকডাউনে স্কুলের সঙ্গে সম্পর্ক ঘোচায় পড়ার সঙ্গেও আড়ি অনেক পড়ুয়ার। কেউ কেউ এই দেড় বছরে বিয়ে করে ঘোর সংসারী। শুধু মেয়েরাই নয়, নাবালক ছেলেরাও। উদাহরণ হিসেবে ডেবরার এক ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন আধিকারিকরা। সেখানকার এক ব্লকে স্কুলছুট পড়ুয়ার খোঁজে গিয়ে শিক্ষককেরা দেখেন, দ্বাদশ শ্রেণীর নাবালক ছাত্র লকডাউনে বিয়ে করে রীতিমতো সন্তানের বাবা। শুধু তাই নয়, তার নাবালিকা স্ত্রী এক সন্তানের মা-ও স্কুলছুট। জিজ্ঞেস করতে জবাব আসে মাধ্যমিক পাশ।

এবিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চে রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারীর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ডেবরাতেই শুধু নয় লকডাউনে বাল্য বিবাহের ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। স্কুলছুটদের খোঁজে বাড়ি গিয়ে দেখা যাচ্ছে মেয়েদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছেলেরা পড়াশোনা ছেড়ে বাইরে বাইরে কাজে অথবা তারাও বিয়ে করে ঘোর সংসারী। দীর্ঘ সময়ের অনভ্যাসে পড়া থেকে শত যোজন দূরে তাদের দুনিয়া। কিঙ্করবাবুর কথায় ডেবরার ঘটনা বিচ্ছিন্ন নয়। বাল্য বিবাহ রোধে সব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এমন আরও অনেক ঘটনা তাদের নজরে এসেছে।

কখনও ঠোঁটে ঠৌঁট-কখনও সিগারেট, ধোঁয়া উড়িয়ে ক্লাসরুমেই উদ্দাম নাচ ছাত্রীদের!

এপ্রসঙ্গে এই সময়ে ডিজিটালকে সর্ব শিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক মোনালিসা তিরকে বলেন, 'জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) এই সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করছেন । রিপোর্ট আসার পরই কোনও মন্তব্য করা সম্ভব হবে।' বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে শিক্ষক মহলও। জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সন্দীপ দাসের সঙ্গে কথা হলে তিনি এই সময় ডিজিটালকে বলেন, 'বাল্যবিবাহ ঠেকাতে আমাদের যা যা করার আমরা সবকিছু করেছে। তুলনামূলকভাবে এবছর আমাদের রিপোর্টে সেরকম কিছু নেই। আমরা অবশ্যই বিষয়টির খোঁজ নিয়ে দেখব।'
শিক্ষাব্যবস্থাকে ছন্দে ফেরাতে সমস্ত ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা দফতর। কিন্তু, বাল্য বিবাহের এমন কিছু ঘটনা পড়ুয়াদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে প্রশাসনের কপালেও। নাবালিকা মেয়ের বিয়ে আটকাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে। রাজ্যে রয়েছে কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতো প্রকল্প। যা সমাদৃত-সম্মানিত রাষ্ট্রসঙ্ঘেও। তা সত্ত্বেও রাজ্য বাল্য বিবাহের হার বাড়ার খবরে চিন্তিত প্রশাসন খতিয়ে দেখছে গোটা বিষয়টি।

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল