অ্যাপশহর

বাঁধেই ঘর বানভাসিদের

কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে নাকাল সাধারণ মানুষ। বানভাসি পরিস্থিতি West Midnapore-এর একাধিক এলাকা। দুর্ঘটনা এড়াতে ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন এলাকার উঁচু বাঁধের উপর ত্রিপলের তাঁবুতে।

Ei Samay 23 Sep 2021, 11:26 am

হাইলাইটস

  • নদী বাঁধই এখন ঘর, বানভাসি সবংয়ের দুর্গত মানুষজনের।
  • কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ভাসছে পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশকিছু এলাকা।
  • কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ভাসছে পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশকিছু এলাকা।
EiSamay.Com Heavy Rain
প্রতীকী ছবি
সমীর মণ্ডল, সবং:
নদী বাঁধই এখন ঘর, বানভাসি সবংয়ের দুর্গত মানুষজনের। ঘরবাড়ি ছেড়ে উঁচু বাঁধের উপর ত্রিপলের তাঁবুতে আশ্রয় নিতে হয়েছে এলাকার কয়েক হাজার মানুষকেঅবস্থা কবে ঠিক হবে তা জানা নেই কারও।

কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ভাসছে পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশকিছু এলাকা। যার মধ্যে সবং, পিংলার অবস্থা ভয়াবহ। সবং ব্লকের ১৩টি অঞ্চলের প্রায় দু'লক্ষ মানুষ জলবন্দি। পিংলার পাঁচটি অঞ্চল জলমগ্ন। সেখানেও জলে আটকে রয়েছেন প্রায় এক লাখ মানুষ। অবিরাম বৃষ্টির জলে আতঙ্কিত বাঁধে আশ্রয় নেওয়া মানুষজন।

গত কয়েক বছরে সবংয়ের মানুষ বন্যা ভুলে গিয়েছিলেন, কিন্তু বন্যা ভোলেনি তাঁদের। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, '২০০৮ সালে শেষবার বড় বন্যা হয়েছিল। তারপর কেলেঘাই, কপালেশ্বরী, বাগুই, চন্ডিয়া নদী সংস্কারের ফলে আর সেভাবে বন্যা হয়নি এলাকায়। দীর্ঘ ১২ বছর পর নদী বাঁধ ভেঙে ফের জলমগ্ন হয়েছে সবং, পিংলা। ৪ নম্বর দশগ্রাম পঞ্চায়েতের কোপ্তিপুর এলাকায় প্রতিটি বাড়ি জলের তলায়। কারও বাড়ির সামনে চার ফুট, কোথাও পাঁচ ফুট, সাত ফুট জল জমে রয়েছে এখনও।

টানা বৃষ্টিতে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু শিশুকন্যার
কোপ্তিপুরের ভগবৎ করণ, মামনি করণ'রা ঘর বেঁধেছেন নদী বাঁধের উপর। প্রশাসনের তরফে দেওয়া ত্রিপল টাঙ্গিয়ে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁবুতে। একই অবস্থা সুকুমার তুঙ্গ, মিতা তুঙ্গ'দের। ত্রাণে পাওয়া ত্রিপল আর বাঁশ দিয়ে রাস্তার উপর তাঁবু তৈরি করছেন মাথা গোঁজার জন্য। মিতা বলেন, '৯ মাসের বাচ্চাকে নিয়ে কোনও রকমে উঠে এসেছি। খেতে না পাই, বেঁচে তো আছি!'

বাঁধের উপর সারি সারি ত্রিপলের তাঁবু। তার তলায় গোরু-বাছুর, ছাগলের সঙ্গে আশ্রয় নিতে হয়েছে মানুষকেও! এভাবেই দিন কাটছে অনাদি আদক, অঞ্জলি আদক, মামনি দাস, অর্চনা মান্নাদের। গ্রামে প্রায় ৩০০ পরিবার। অধিকাংশই আশ্রয় নিয়েছেন বাঁধের উপর। মামনি, অর্চনারা বলেন, 'ত্রিপল, শুকনো খাবার, একদিন খিচুড়ি পেয়েছি। কিন্তু এভাবে অবিরাম বৃষ্টির মধ্যে ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে ত্রিপলের তলায় কতদিন থাকব? সন্ধ্যা হলে অন্ধকার, সাপের ভয়, প্রাণ হাতে করে নিয়ে রাত কাটাতে হচ্ছে অস্থায়ী ঝুপড়িতে। সবচেয়ে বড় সমস্যা কোথাও শৌচাগার নেই। এতগুলো মানুষ বিশেষ করে মহিলারা যাবেন কোথায়?'

নদীবাঁধে দাঁড়িয়ে আদিত্য মান্না, হীরেন্দ্র নাথ ভক্ত বলেন, 'নদী সংস্কারের পর থেকে আমরা বন্যার কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। ভাবলাম, নদী সংস্কার হয়েছে,বাঁধ এত উঁচু এবং তার উপর পাকা রাস্তা হয়েছে ফলে বন্যা হয়তো আর হবে না। আবার যে বন্যা হবে তা স্বপ্নেও ভাবিনি।'

পুজোর মুখে টান, নিষিদ্ধ ইলিশ শিকার
বুধবার মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার সঙ্গে প্রাক্তন বিধায়ক গীতা ভূঁইয়া, বিডিও সবং তুহিন শুভ্র মহান্তি বন্যা কবলিত এলাকা ঘুরে দেখেন। মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন,'যা পরিস্থিতি তাতে সবং ব্লকের জন্য আরও ২০ হাজার এবং পিংলার জন্য ১০ হাজার ত্রিপল প্রয়োজন। জেলাশাসক রশ্মি কমলের কাছে আবেদন করেছি, যেন দ্রুত ত্রিপল ও ত্রাণ সামগ্রীর পাঠানো হয়।'

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল