অ্যাপশহর

Nadia News: ভিখারি গোবিন্দর জন্মদিনে দেহদান, অসহায় মানুষদের পাশে পাপিয়া

স্টেশনের ভিখারিদের নিজের হাতে খাবার খাইয়ে দেন। এবার নিজের হাতে খাইয়ে দেওয়া, পাতানো ভাই, রানাঘাট স্টেশনের ভিখারি গোবিন্দর জন্মদিনের উপহার হিসাবে নিজের দেহদানের শপথ নিয়েছেন ‘অন্নপূর্ণা সরাইঘর’-এর প্রতিষ্ঠাতা পাপিয়া কর। দেহদানের মতো মহৎ কর্মযজ্ঞে অন্যরাও যাতে এগিয়ে আসেন, সেই আহ্বান জানিয়ে ২৫ জুন নিজের বাড়িতে একটি ক্যাম্পও করছেন পাপিয়া কর।

Produced byShukla Bhattacharjee | Lipi 25 May 2022, 3:19 pm

হাইলাইটস

  • স্টেশনের ভিখারিদের নিজের হাতে খাবার খাইয়ে দেন।
  • রানাঘাট স্টেশনের ভিখারী গোবিন্দর জন্মদিনের উপহার হিসাবে দেহদানের শপথ নিলেন পাপিয়া কর।
  • আগামী দিনে অসহায় মানুষদের জন্য আশ্রম করারও পরিকল্পনা নিয়েছেন।
EiSamay.Com Papiya Kar and begger Govinda
গোবিন্দর জন্মদিনে দেহদান করবেন পাপিয়া কর।
স্টেশনে থাকা ভিখারিদের দেখলেই সাধারণত সকলে পাশ কাটিয়ে চলে যান। কিন্তু নদিয়ার মাজদিয়ার পাপিয়া কর পাশ কাটিয়ে যাওয়া দূরস্ত, ভিখারিদের নিজের হাতে খাবার খাইয়ে দেন। এবার আরও একধাপ এগিয়ে নিজের হাতে খাইয়ে দেওয়া, পাতানো ভাই, রানাঘাট স্টেশনের ভিখারী গোবিন্দর জন্মদিনের উপহার হিসাবে নিজের দেহদানের শপথ নিয়েছেন ‘অন্নপূর্ণা সরাইঘর’-এর প্রতিষ্ঠাতা পাপিয়া কর। শুধু নিজে নয়, তাঁর বৃদ্ধা মা-ও সেদিন দেহদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এছাড়া দেহদানের মতো মহৎ কর্মযজ্ঞে অন্যরাও এগিয়ে আসেন, সেই আহ্বান জানিয়ে নিজের বাড়িতে একটি ক্যাম্পও করছেন পাপিয়া কর।

দিন দুয়েক আগেই গোবিন্দর জন্মদিনে দেহদানের ইচ্ছা প্রকাশের কথা জানিয়ে ফেসবুক-এ একটি পোস্ট করেছেন পাপিয়া কর। ফেসবুক পোস্টটিতে সকলকে দেহদানের মতো মহৎ কাজে এগিয়ে আসার বার্তা দিয়ে তিনি লিখেছেন, "২৫ শে জুন গোবিন্দর জন্মদিন উপলক্ষ্যে আমি দেহ দান করছি। আমার কোনো বন্ধু বা পরিচিত যদি কেউ দেহদানে আগ্রহী হন, তাহলে ওই দিন একটা দেহদান উপলক্ষ্যে একটা ক্যাম্পের ব্যবস্থা করার ইচ্ছে আছে।" তবে কাউকে না পেলেও সেদিন তিনি নিজেই দেহদানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন বলেও জানিয়েছেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ পাপিয়া। তবে অনেককেই পাশে পাবেন বলে আশাবাদী অন্নপূর্ণা সরাইঘর-এর All in All.

Bankura-য় অবাক কাণ্ড! হোটেলে ঢুকে মাছ-ভাত চেটেপুটে সাফ করল বাঁদর
যদিও এই পরিকল্পনা বা দরিদ্র মানুষদের কাছে গিয়ে তাদের খাওয়ানোর জন্য অনেক আত্মীয়, বন্ধু পাপিয়ার থেকে দূরে চলে গিয়েছে। তবে তার জন্য তাঁর আক্ষেপ নেই। তাঁর কথায়, "আমি যেটা করছি, ভুল করছি না। কে পাশে থাক বা না থাক, দরকার নেই।" যদিও মা, স্বামী ও সন্তানকে পাশে পেয়েছেন তিনি। প্রতি বছরই ওই দিনটিতে গোবিন্দকে নতুন জামা-কাপড় দিয়ে, ভাল করে খাওয়ানোর পাশাপাশি বহু অসহায়, দরিদ্র মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেন পাপিয়া। গোবিন্দর জন্য সকলের কাছে আশীর্বাদও প্রার্থনা করে নেন তিনি। তবে এবছর তাঁর উদ্যোগ অভিনব। এবছর যে গোবিন্দর সঙ্গে তাঁর ভাই-বোনের সম্পর্ক ১৪ বছরে পড়ল।

Purulia News: তীব্র দাবদাহে শরীর ও মন জুড়াতে ধাবাতেও মিলছে পান্তা ভাত, দাম জানেন?
গোবিন্দর সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের পুরোনো স্মৃতিচারণা করে পাপিয়া বলেন, যেদিন রানাঘাটে অসহায় মানুষগুলোকে খাওয়াতে এলাম, দেখলাম গোবিন্দ নিজের হাতে ঠিকমতো খেতেও পারে না। খেতে গিয়ে হাত থেকে খাবার পড়ে যায়। ফলে পেট ভরে না। তাই আমি নিজের হাতে খাইয়ে দিই। সেদিনই গোবিন্দর সঙ্গে যেন আত্মিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন পাপিয়া। তারপর থেকে আজও নিয়মিত রানাঘাট স্টেশনে গিয়ে গোবিন্দকে নিজের হাতে খাইয়ে তবে নিজে খান পাপিয়া। শুধু তাই নয়, প্রতি বছর ভাইফোঁটায় গোবিন্দকে ফোঁটা দেন, রাখি উৎসবে রাখি পড়ান তিনি। গোবিন্দও দিদির বাড়িতে যায়। যেন পরিবারের এক সদস্য হয়ে উঠেছে গোবিন্দ। পাপিয়ার মা, স্বামী এবং সন্তানও গোবিন্দকে পরিবারের সদস্য হিসাবে মেনে নিয়েছেন। তাই এবছর গোবিন্দর জন্মদিনে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন পাপিয়া।

Amsatta: খেতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, আমসত্ত্ব নিয়ে মালদা থেকে কালীঘাটের পথে ৮ বছরের সায়ন্তিকা
তবে কেবল অসহায়, দরিদ্র মানুষগুলোর মুখে একবেলা অন্ন তুলে দিয়েই সন্তুষ্ট নন হস্তশিল্পী পাপিয়া কর। অসহায়, আশ্রয়হীন মানুষগুলোকে ঠাঁই দিতে একটি আশ্রমও গড়ে তোলার শপথ নিয়েছেন তিনি। আর তাঁর সেই শপথ বাস্তবায়িত করতে পাশে রয়েছেন পাপিয়ার স্বামী এবং সন্তান। আশ্রম তৈরির জন্য ইতিমধ্যে স্ত্রী-কে একটি জমি উপহার দিয়েছেন পাপিয়ার স্বামী। ধীরে-ধীরে বাকি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কয়েক বছরের মধ্যেই আশ্রম গড়ে তুলবেন বলে তিনি জানিয়েছেন। তবে এটা বৃদ্ধাশ্রমের মতো হবে না।

Litchi Fruit: বিশ্বখ্যাত আম-কে জোর টক্কর! এবার বিদেশেও পাড়ি দিচ্ছে মালদার লিচু, দামে কি প্রভাব পড়বে?
পাপিয়াদেবীর কথায়, "বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে হলে টাকা দিতে হয়। আমার আশ্রমে থাকার জন্য কোনও টাকা নেব না। যারা রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়, মাথার ছাদ নেই, তাদের জন্যই গড়ে তুলব আশ্রম।" একেবারে ধনুকভাঙা পণ করে পাপিয়া বলেন, "যদি বেঁচে থাকি অসহায় মানুষগুলোর জন্য আশ্রম করবই।"
লেখকের সম্পর্কে জানুন
Shukla Bhattacharjee

পরের খবর