অ্যাপশহর

ঠাঁই হল না কোথাও, ফের চিকিৎসা বিভ্রাটে মৃত্যু

১১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, 'আমিও শুক্লার পরিজনদের কাছ থেকে জেনেছি ওঁর করোনার উপসর্গ থাকলেও কোভিড পরীক্ষা করতে দেরি হয়েছে।' ঠিক কী হয়েছিল? জানুন বিস্তারিত...

Ei Samay 15 Jul 2020, 9:39 am
এই সময়: ফের চিকিৎসা বিভ্রাটের ঘটনা শহরে। তিনটি নার্সিংহোম, একটি বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে কোথাও ভর্তি হতে পারলেন না এক প্রৌঢ়া। শুক্রবার বিকেল থেকে চরম টানাপোড়েনের পর মধ্যরাতে বাইপাস লাগোয়া একটি নার্সিংহোমে কোনও রকমে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সোমবার সেখানেই মারা যান তিনি। তাঁর কোভিড পরীক্ষা করা হয়েছে, তবে এখনও রিপোর্ট আসেনি। শুক্লা নাগ (৫৮) নামে ওই প্রৌঢ়া কুদঘাটের বাসিন্দা। প্রাণিসম্পদ দপ্তরে কর্মরত ছিলেন তিনি।
EiSamay.Com deah of patient due to medical negligence
ফের চিকিৎসা বিভ্রাটে মৃত্যু


বৃহস্পতিবার অফিস থেকে ফিরে অসুস্থ বোধ করেন শুক্লা। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। ডায়েরিয়ার উপসর্গ থাকায় সেখানে তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা হয়। বাঙুরে রেফার করে বাঘাযতীন হাসপাতাল। তবে বাঙুর কোভিড হাসপাতাল হওয়ায় সেখানে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়নি। বাড়িতেই ছিলেন তিনি। শুক্রবার ফের তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। জ্বর, ব্যথা ছিল তাঁর। কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয় তীব্র শ্বাসকষ্ট। স্থানীয় ভাবে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করে তাঁকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁর পরিজন। খোঁজ পড়ে অ্যাম্বুল্যান্সের। সেই অ্যাম্বুল্যান্সের খোঁজ পেতেই নাজেহাল অবস্থা হয়। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় এক যুবকের সাহায্যে ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর বিশ্বজিৎ মণ্ডলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁর পরিজন। বিশ্বজিৎ একটি অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করে দেন। সেই অ্যাম্বুল্যান্সে শুক্লাকে নিয়ে টালিগঞ্জের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে ভর্তি করা যায়নি। সেখান থেকে তাঁরা যান চারু মার্কেটের একটি নার্সিংহোমে। ওই নার্সিংহোম জানিয়ে দেয়, বেড নেই। সেখান থেকে অ্যাম্বুল্যান্স আসে বাঘাযতীনের একটি নার্সিংহোমে। সেখান থেকে যাদবপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল। দু'জায়গা থেকেই জানিয়ে দেওয়া হয় ভর্তি নেওয়া যাবে না। শেষ পর্যন্ত বাইপাসের একটি নার্সিংহোমে কোনও রকমে ভর্তি করা হয় শুক্লাকে। শনিবার তাঁর কোভিড পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সোমবার ওই নার্সিংহোম ফোন করে জানায়, মারা গিয়েছেন শুক্লা। তাঁর ভাইঝি মধুমিতা গুহচৌধুরী বলেন, 'সোমবার হাসপাতাল থেকে ফোন করে জানানো হয় পিসি আর নেই। পাড়ার যে চিকিৎসককে আমরা প্রথম দেখিয়েছিলাম, তিনি উপসর্গ দেখেই পিসিকে কোভিড টেস্টের পরামর্শ দেন। সেই টেস্ট করাতে গিয়ে রীতিমতো নাজেহাল হতে হল আমাদের।' শুক্লার পরিজনের অভিযোগ ওই নার্সিংহোম দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। তবে কোভিড টেস্টের রিপোর্ট না-আসায় শুক্লার দেহ নিতে চাননি তাঁর পরিজন। যদিও ওই নার্সিংহোম এই অভিযোগ মানতে চায়নি। ওই নার্সিংহোমের তরফে নরেন্দ্র পোদ্দার বলেন, 'আমরা কখনওই করোনার উপসর্গ থাকা রোগীর রিপোর্ট আসার আগে দেহ ছাড়ি না। কোথাও একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।' বাঘাযতীন হাসপাতালের এক আধিকারিক জানান। ডায়েরিয়ার উপসর্গ থাকায় হাসপাতালে তার প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়েছিল। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে বাঙুরে রেফার করা হয়।

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল