অ্যাপশহর

রাজ্য়ের পথে ব্ল্যাক স্পট খোঁজায় নতুন করে উদ্যোগী হচ্ছে প্রশাসন

হাঁসখালির মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় চিহ্নিত করা হচ্ছে black spot বা দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা। রাজ্যে black spot-এর সংখ্যা ৭৯৪।

Ei Samay 1 Dec 2021, 2:17 pm
এই সময়: শনিবার ভোররাতে নদিয়ার হাঁসখালিতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পরে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা বা ব্ল্যাক স্পট চিহ্নিত করতে নেমে পড়ল প্রশাসন। রাস্তার খারাপ অবস্থা, গাড়ির বেপরোয়া গতি বা মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর মতো বিভিন্ন কারণের পাশাপাশি শীতের সময়ে কুয়াশার জেরে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়াতেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। সে-সব কথা মাথায় রেখেই নতুন করে ব্ল্যাক স্পট খোঁজার কাজ চলছে। রাজ্য ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে রাজ্যে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা বা ব্ল্যাক স্পটের সংখ্যা ৭৯৪। তবে এর বাইরেও নতুন করে কিছু এলাকা দুর্ঘটনাপ্রবণ বলে নজরে আসছে প্রশাসনের। সেগুলিকেও তালিকাভুক্ত করে বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা হবে।
EiSamay.Com black spot
প্রতীকী ছবি


নদিয়ার জেলা প্রশাসনের বক্তব্য, ওই জেলায় ৫০টি এ রকম ব্ল্যাক স্পট রয়েছে। এর মধ্যে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলাতেই ৩৬টি। জাতীয় সড়কেই বেশি সংখ্যায় দুর্ঘটনাপ্রবণ স্পট রয়েছে। এই সংখ্যা কতটা বেড়েছে, তা নিয়ে পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, মালদা, পূর্ব বর্ধমান এবং পূর্ব মেদিনীপুরেও বহু ব্ল্যাক স্পট রয়েছে। এ জন্যে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ বহু এলাকায় রেলওয়ে ওভারব্রিজ বা ফ্লাইওভার তৈরিরও প্রস্তাব দিয়েছে।
রাজ্য পুলিশ সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে ৭৯৪টি ব্ল্যাক স্পটের মধ্যে জাতীয় সড়কেই রয়েছে ৫৩১টি। রাজ্য সড়কে ১৯৮টি। এর বাইরে পূর্ত দপ্তরের নিয়ন্ত্রণে থাকা গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় রয়েছে আরও ৬৫টি ব্ল্যাক স্পট। রাজ্য পুলিশের বক্তব্য, এটা তিন বছর আগেকার তথ্য। এর মধ্যে নতুন করে ব্ল্যাক স্পটের সংখ্যা বেড়েছে। আবার পুরনো অনেক স্পট নিয়ন্ত্রিতও হয়েছে।

হাঁসখালির পথ দুর্ঘটনার জেরে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী নতুন করে ব্ল্যাক স্পট চিহ্নিত করার কাজ শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন। যা নিয়ে মঙ্গলবারই পরিবহণ ও পূর্ত দপ্তরের আধিকারিকরা প্রায় প্রতিটি জেলায় জেলাপ্রশাসনকে নিয়ে নতুন করে পর্যালোচনা শুরু করেছেন। সমাধানসূত্রও খোঁজা হচ্ছে। রাজ্য প্রশাসনের একাংশের মতে, হাঁসখালিতে কৃষ্ণনগর-দত্তফুলিয়া রাজ্য সড়কে যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেটি ব্ল্যাক স্পট হিসেবে চিহ্নিত ছিল না। ওই পথে কোনও বাঁকও ছিল না। সোজা রাস্তাতেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাই এ ধরনের দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের পথ কী হতে পারে--সে-সব নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। তবে কুয়াশায় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, সে ক্ষেত্রে চালককেই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে গাড়ির গতি। নেশাগ্রস্ত চালককেও কোনও ভাবেই গাড়ির স্টিয়ারিং ধরতে দেওয়া যাবে না। রাজ্য পুলিশের এডিজি (ট্র্যাফিক) অজয় কুমার বলেন, 'মদ্যপ চালকদের নিয়ন্ত্রণই দুর্ঘটনা এড়ানোর ক্ষেত্রে বড় কাজ। এ জন্যে পুলিশ রাতের অভিযানে ব্রেথ অ্যানালাইজার ব্যবহার করতো। বিশেষ করে বড় রাস্তার অভিযানে। কিন্তু অতিমারী পরিস্থিতিতে তা বন্ধ হয়েছিল। ফের এ ধরনের যন্ত্র নিয়ে অভিযান শুরুর ভাবনাচিন্তা চলছে।' এর বাইরেও ব্ল্যাক স্পট নিয়ে সচেতনতার প্রচার, রিফ্লেক্টরের ব্যবস্থা, সিগন্যালিং উন্নত করা, স্পিড ব্রেকার বাড়ানো নিয়েও আলোচনা চলছে। জতীয় সড়কে স্পিড ব্রেকার নিয়ে ভূতল পরিবহণ মন্ত্রকের গাইডলাইনও রয়েছে। তবে জাতীয় সড়ক কতৃর্পক্ষ ও পূর্ত দপ্তরের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্য সড়কের দায়িত্বও পূর্ত দপ্তরের হাতেই।

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল