অ্যাপশহর

'খোলা মনে' পৌষমেলা করতে রাজি বিশ্বভারতী

পৌষমেলার মাঠ ঘেরার ব্যাপারেও সুস্পষ্ট মত প্রকাশ করেছে বিশ্বভারতী। পরিবেশ আদালতে নির্দেশ মতো মেলার মাঠ ঘিরতে তারা বাধ্য বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। তবে তা হবে নান্দনিক ভাবে, তাও স্পষ্ট করা হয়েছে।

Ei Samay 29 Aug 2020, 8:09 am
এই সময় শান্তিনিকেতন: পৌষমেলা ও রবীন্দ্র ঐতিহ্যের 'সংরক্ষণ' প্রসঙ্গে অবশেষে কিছুটা 'সুর নরম' করল বিশ্বভারতী।
EiSamay.Com visva-bharati agrees to organize  poush mela with an open mind
পৌষ মেলার প্রস্তুতি


সম্প্রতি মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়া ও সেই পাঁচিল বিক্ষোভকারীদের ভেঙে ফেলার প্রেক্ষিতে একাধিক বার বিশ্বভারতী কতৃর্পক্ষের তরফে বিভিন্ন বিতর্কিত বিবৃতি জারি করে 'কড়া' ও অনড় মনোভাব দেখানো হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে পড়ুয়াদের এবং খোদ রবি ঠাকুর প্রসঙ্গে লেখা বিবৃতির ভাষা নিয়েও। কিন্তু শুক্রবার বিশ্বভারতী জানিয়েছে, তারা কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত পৌষমেলা বন্ধ করতে চায় না। বরঞ্চ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে 'খোলা মন' এবং 'পর্যাপ্ত অর্থসাহায্য' দিয়ে পৌষমেলা করার আহ্বান জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকারের জারি করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, 'আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, যাঁরা আবেগকে বাস্তবায়িত করতে চান কার্যাবলীর মাধ্যমে, তাঁদের সাহায্যে পৌষমেলা তার পূর্বরূপ ফিরে পাবে।'

এ দিন বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সভাকক্ষ থেকে কর্মী, আধিকারিক, অধ্যাপকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বৈঠকে পৌষমেলা সংক্রান্ত বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে আমন্ত্রিত সদস্য সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, 'বিশ্বভারতী পৌষমেলা আয়োজন করবে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এ বছরই পৌষমেলা হবে। তবে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী শর্ত দিয়েছেন পৌষমেলা সুষ্ঠু ভাবে আয়োজন করতে অনলাইনে স্টল বিলি, নির্দিষ্ট দিনে মেলা শেষ করার বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে সাহায্য করতে হবে।'

প্রসঙ্গত, এর আগে কর্মসমিতির বৈঠকে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানান, পৌষমেলা করতে তাঁরা অপারগ। সেই মতো গত ৮ জুলাই বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব আশা মুখোপাধ্যায় জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসুকে চিঠি লিখে বিষয়টি জানিয়ে দেন। এরপর বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, ঘরে বাইরে প্রবল চাপ শুরু হয়। দু'দিন আগে অনলাইনে একটি বক্তৃতায় রাজ্যসভার সাংসদ তথা বিশ্বভারতীর কোর কমিটির সদস্য স্বপন দাশগুপ্ত জানিয়ে দেন, পৌষমেলা হচ্ছে ও তা কেন্দ্রীয় সরকারের তত্ত্বাবধানে হবে। একই ভাবে এবিভিপিও পৌষমেলার পক্ষে আওয়াজ তোলে। এ দিন কার্যত সেই সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

'রবীন্দ্রনাথ বহিরাগত' প্রসঙ্গেও সুর পাল্টেছে বিশ্বভারতী। সদ্য বার্তালাপ নামে একটি খোলা চিঠিতে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী কবিগুরুকে 'বহিরাগত' বলে উল্লেখ করায় বিতর্ক চরম আকার নেয়। এ দিন প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রসঙ্গেও দুঃখপ্রকাশ করে লেখা হয়েছে, 'এই বক্তব্যের জন্য অনেকে দুঃখ পেয়েছেন। তার জন্য আমরা দুঃখিত ও মর্মাহত।'

বিশ্বভারতী জানিয়েছে, 'শান্তিনিকেতনের নিরাপত্তা যতখানি গুরুত্বপূর্ণ ততখানি এখানকার নান্দনিক সৌন্দর্য। এই দিকগুলো মাথায় রেখে আমরা কাজ করছি। একই সঙ্গে জমি হাঙরদের থেকে বিশ্বভারতী রক্ষার জন্য কাজ করছি।'

ঘটনাচক্রে এ দিন বিজেপির মহিলা মোর্চা রাজ্য সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে পৌষমেলায় 'দেহব্যবসা'র তত্ত্ব সমর্থন করে দাবি করেন, শাসকদলের রাজনৈতিক মদতেই অসামাজিক কাজ হচ্ছে। যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।

পরের খবর