অ্যাপশহর

শহরের শেরিফ বিদ্যাসাগরের বংশধর

জরুরি কাজ বাবদ মাসে ভাতা বরাদ্দ সাকুল্যে ৪৭৩ টাকা৷ নুন আনতে পান্তা ফুরনোর জোগাড়৷ ফলে হাইকোর্ট চত্বরে শেরিফের অফিসে পুরোনো পদাধিকারীদের দুষ্প্রাপ্য ছবিগুলি টাঙানোর মতো আর্থিক সংস্থানও নেই বিভাগীয় কর্তাদের৷

EiSamay.Com 11 Aug 2017, 1:29 pm
এই সময়: জরুরি কাজ বাবদ মাসে ভাতা বরাদ্দ সাকুল্যে ৪৭৩ টাকা৷ নুন আনতে পান্তা ফুরনোর জোগাড়৷ ফলে হাইকোর্ট চত্বরে শেরিফের অফিসে পুরোনো পদাধিকারীদের দুষ্প্রাপ্য ছবিগুলি টাঙানোর মতো আর্থিক সংস্থানও নেই বিভাগীয় কর্তাদের৷ সেই ছবিগুলি ডাঁই হয়ে পড়ে রয়েছে স্টোর রুমে৷ হাইকোর্টের রক্ষণাবেক্ষণর দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের বার বার চিঠি দিয়েছেন শেরিফের অফিসের কর্তারা৷ কিন্ত্ত কোনও ফল মেলেনি৷ যদিও কলকাতার শেরিফ পদটির বয়স প্রায় ২৪৩ বছর৷ কিন্ত্ত সময়ের পাকেচক্রে সেই ঐতিহ্য আর হালে তেমন পানি পাচ্ছে না৷
EiSamay.Com vidyasagars descendant is appointed at kolkatas sherif
শহরের শেরিফ বিদ্যাসাগরের বংশধর


ইতিহাসের পাতা ওল্টালে দেখা যায়, ইংল্যান্ডের রাজা তৃতীয় জর্জ ১৭৭৪ সালে একটি রাজকীয় আদেশনামার (চার্টার) বলে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে সুপ্রিম গঠন করেন৷ ওই আদেশনামায় এ কথাও বলা হয়েছিল যে, গর্ভনর জেনারেল কলকাতার তিন জন বাসিন্দার মধ্যে থেকে একজনকে শেরিফ হিসেবে বাছাই করবেন৷ ইংল্যান্ডের হাই শেরিফের ট্র্যাডিশন মেনেই এই প্রথা চালু হয়েছিল৷ ১৭৭৫ সালে কলকাতার প্রথম শেরিফ হন জেমস ম্যাকরাবে৷ বৃহস্পতিবারই এই অফিসে নয়া শেরিফের দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়৷ পারিবারিক সূত্রে তিনি বিদ্যাসাগরের বংশধর৷ তাঁর বাবা প্রয়াত সুধাকর চট্টোপাধ্যায় বিদ্যাসাগরের প্রপৌত্র৷ এই অফিসেই দেখা মিলল ডেপুুটি শেরিফ সুমিত ঘোষালের৷ তিনি আদতে সরকারি অফিসার৷ শেরিফকে মনোনীত করেন রাজ্যপাল৷

সুমিত বললেন,‘এক সময় শেরিফের ঘরের দেওয়াল অলঙ্কৃত করত পুরোনো পদাধিকারীদের নানা দুষ্প্রাপ্য তৈলিচিত্র ও ছবি৷ মাঝখানে ঘর রং করা হয়েছিল৷ ফলে ছবিগুলি নামানো হয়৷ কিন্ত্ত ছবিগুলি ফের টাঙানোর জন্য লোকলস্কর লাগবে বা কিছু খরচপত্রও লাগবে৷ আমাদের মাসিক কনটিনজেনসি ফান্ড মাত্র ৪৭৩ টাকা৷ ছবিগুলি টাঙানোর জন্য খরচ করার মতো আর্থিক সংস্থান এই অফিসের নেই৷ আমরা ২০১৩ সাল থেকে এই ব্যাপারে হাইকোর্ট ভবনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত পূর্ত অফিসারদের চিঠি দিচ্ছি৷ এখনও কিছু হয়নি৷’এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হয় নবান্নে পূর্তদপ্তরের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে৷ তাঁরা জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে নিশ্চয়ই বিবেচনা করে দেখবেন৷ তবে টাকাপয়সার বরাদ্দের ব্যাপারটা তাঁদের হাতে নেই৷

ব্রিটিশ আমলে কলকাতার শেরিফের হাতে কিছু আইনগত ও প্রশাসনিক ক্ষমতা ছিল৷ সময়ের সঙ্গে তা খর্ব হয়েছে৷ যদিও এই পদটি কলকাতার মেয়রের সমান্তরাল৷ এই মুহূর্তে শেরিফের পদটি নিতান্তই আলঙ্কারিক৷ তাঁর বেতন বা ভাতা বলে কিছুই নেই৷ এমনকি আলাদা করে সরকার কোনও গা‌ি.ডও শেরিফকে দেয় না৷ এ ব্যাপারে নয়া শেরিফ হাসতে হাসতে বললেন,‘শুধু আমার গাড়ির চালক একটা হাতে বাঁধার তকমা পাবে শেরিফের গাড়ি চালায় বলে৷ তবে আমি মনে করি হাইকোর্টের সঙ্গে সরকারের সেতুবন্ধনে এই পদটির এখনও যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে৷ আমিও আমার তরফে সেই চেষ্টাই আন্তরিক ভাবে চালাব৷’

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল