অ্যাপশহর

গলায় ফাঁস, তৃণমূল পুরমাতার মৃত্যু ঘিরে রহস্য

ডেঙ্গি থেকে কী ভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা যায় রবিবার সকালেই সে কথা প্রচার করতে নিজের ওয়ার্ডে বেরিয়েছিলেন দক্ষিণ দমদম পুরসভার ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সঞ্চিতা দত্ত৷

EiSamay.Com 4 Sep 2017, 8:17 am
এই সময়: ডেঙ্গি থেকে কী ভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা যায় রবিবার সকালেই সে কথা প্রচার করতে নিজের ওয়ার্ডে বেরিয়েছিলেন দক্ষিণ দমদম পুরসভার ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সঞ্চিতা দত্ত৷ কয়েক ঘণ্টা পর দুপুরে ২ নম্বর এস কে দেব রোড ফাস্ট লেনের ফ্ল্যাটের দোতলার ফ্ল্যাট থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হল তাঁরই ঝুলন্ত দেহ৷ ৩২ বছর বয়সী কাউন্সিলরের এই রহস্যমৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা৷ মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মৃতার দেহের ময়না-তদন্ত করে রাতেই নিমতলা শ্মশানঘাটে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়৷ বর্তমান কাউন্সিলরের দেহ পুরসভার অফিস তো দূরের কথা, তাঁর বাড়িতেও নিয়ে যাওয়া হয়নি৷ ময়না-তদন্ত থেকে সত্কার, গোটা পর্ব দেহ ঘিরে ছিলেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা৷ সঞ্চিতার স্বামী কৃষ্ণপদ দত্তও এলাকায় তৃণমূলের নেতা হিসাবে পরিচিত৷ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলতেও পদে পদে বাধা দেওয়া হয় সাংবাদিকদের৷ শুধু ছোট ছেলে সায়ন বলে, ‘দরজা খুলে দেখি চেয়ারে হাঁটু মুড়ে বসে রয়েছে মা৷ সিলিংয়ের একটি হুক থেকে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া৷ ’ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মৃতার বাপের বাড়ির তরফে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের না করলেও, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷ লেকটাউন থানার এক পদস্থ অফিসার বলেন, ‘মৃতার পরিবারের তরফে আমাদের কিছু জানানো হয়নি৷ টালা থানা থেকেই আমরা ঘটনার কথা জানতে পেরেছি৷ ওরাই অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে৷ ’স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন সকালে নিজের ওয়ার্ডের মাইকেল কলোনি এলাকায় ডেঙ্গি বিরোধী প্রচারে বেরিয়েছিলেন সঞ্চিতা৷ ওই সময় বড় ছেলে অঙ্কুশও ফুটবল খেলতে কৃষ্ণনগরে বেরিয়ে যায়৷ ছোট ছেলে সায়ন যায় টিউশন পড়তে৷ কিছুক্ষণ পরে বাইরে যান স্বামী কৃষ্ণপদ দত্ত৷ প্রচার শেষে সঞ্চিতা ১১.৩০ নাগাদ বাড়ি রওনা দেন৷ ওই সময় বাড়িতে কেউই ছিলেন না৷ আবাসনের দোতলাতেও কাউন্সিলরের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে৷ দোতলার ভাড়াটিয়ার কাছেই ফ্ল্যাটের চাবি দেওয়া ছিল৷
EiSamay.Com uncanny death of tmc councillor
গলায় ফাঁস, তৃণমূল পুরমাতার মৃত্যু ঘিরে রহস্য


দুপুর ১.১০ মিনিটে ছোট ছেলে সায়ন বাড়ি ফিরে ওই চাবি নিয়েই দরজা খুলে দেখতে পায়, গলায় দড়ি দিয়ে মা ঝুলছেন৷ স্থানীয়দের সহায়তায় সঞ্চিতাকে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়৷ বিকেলে হাসপাতাল চত্বর থিকথিক করছিল দক্ষিণ দমদমের তৃণমূল সমর্থকদের ভিড়৷ এমনকী, ময়না-তদন্ত চলাকালীন মর্গের ভিতরেই থাকতে দেখা গিয়েছে বিধানগরের বিধায়ক সুজিত বসু, পুর পারিষদ সদস্য সমীর চট্টোপাধ্যায়, সঞ্চিতার স্বামী কৃষ্ণপদ দত্তকে৷ আধ ঘণ্টার মধ্যেই ময়না-তদন্ত পর্ব শেষ করে দেহ নিয়ে বাইরে বেরিয়ে তৃণমূল নেতারা সোজা রওনা দেন শ্মশানে৷ রবিবার এমনিতেই ময়না-তদন্ত শেষ হতে অনেক সময় লাগে৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দুপুরের দিকে মৃত্যু হলে ময়না-তদন্ত হয় পরদিন৷ সেখানে কেন এত দ্রুততার ময়না-তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করে শ্মশানে রওনা দিলেন তৃণমূল নেতারা , কেনই বা ময়না-তদন্ত চলাকালীন তাঁরা ভিতরে বসে রইলেন? কেনই বা ঘটনার কথা জানানো হল না সংশ্লিষ্ট থানায়? তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন৷ ফেসবুকে দমদমের পুরমাতা রিঙ্কু দেবদত্তা লিখেছেন, ‘সঞ্চিতা আর একটু লড়াই করতে পারতিস৷’ মৃতার বড় ছেলে অঙ্কুশের দাবি, ‘সবকিছু ঠিকঠাক ছিল, কেন যে এমন হল বুঝতে পারছি না৷’ মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়েই এদিন ডানকুনি থেকে হাসপাতালে এসে পৌঁছন বাবা আর এন গিরি৷ তাঁরও বক্তব্য, ‘কী করে এমন হল বুঝতে পারছি না৷’ কৃষ্ণপদ কোনও কথা বলতে চাননি৷ সুজিত বসু অবশ্য দাবি করেছেন, ‘ও আমার বোনের মতো৷ সে -কারণেই ছিলাম৷ আর লোক তো আমরা ভাড়া করে আনিনি৷’

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল