কুবলয় বন্দ্যোপাধ্যায়
স্টিয়ারিং হুইলের দায়িত্ব যাতে অযোগ্য হাতে না পড়ে , তা নিশ্চিত করতে কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে পরিবহণ দন্তর৷ এর জন্য একদিকে যেমন রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অফিসের (আরটিও ) কার্যকলাপের উপর কড়া নজরদারি রাখা শুরু হয়েছে , অন্য দিকে রাজ্য সরকারের থেকে লাইসেন্সপ্রান্ত প্রায় ৪০০ মোটর ট্রেনিং স্কুলের পরিকাঠামো কতটা অনুমোদনসাপেক্ষ ---খতিয়ে দেখা হচ্ছে তা -ও৷ শুধুমাত্র ঠিকঠাক ‘সেটিং ’ থাকায় একসময় আরটিও না গিয়েও বা গাড়ি চালানোর পরীক্ষা না দিয়েও ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যা বিরল নয়৷ বরং তা এতটাই বেশি যে আজও ‘তাড়াতাড়ি ’ ড্রাইভিং লাইসেন্স করানোর কথা উঠলে গাড়ি চালানো শেখা নয় , বিভিন্ন আরটিও -তে গিয়ে ‘প্রভাবশালী ’ দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ করার উপদেশই মেলে সবচেয়ে বেশি৷ এরই অনিবার্য পরিণতি পথ দুর্ঘটনা ও সেই কারণে মৃত্যুর সংখ্যায় দিনে দিনে বৃদ্ধি৷ ন্যাশনাল রোড সেফটি কাউন্সিলের দাখিল করা হিসাব বলছে , ভারতে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ করে মানুষ পথ দুর্ঘটনায় মারা যান৷ এই হিসেবে বছরের শেষে চালকের ভুলে বা নিজের অসাবধানতায় মৃত ব্যক্তির সংখ্যা এ দেশে দেড় লক্ষ ছুঁইছুই৷
এর মধ্যে এই রাজ্যেই বছরে গড়ে সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ পথ দুর্ঘটনায় মারা যান৷ পরিবহণ দপ্তরের বিশ্লেষণ অনুযায়ী , ভূত লুকিয়ে আছে সর্ষের মধ্যেই৷ গাড়ি চালানোর জন্য যাঁরা লাইসেন্স নিতে আসছেন , তাঁদের শেখার মধ্যেই গলদ থাকার জন্য এত বেশি সংখ্যক দুর্ঘটনা ঘটছে রাজ্যে৷ তাই , যেখানে গাড়ি চালানো শেখানো হয় এবং যেখান থেকে লাইসেন্স ইস্যু করা হয় --- এই দুই জায়গার উপরেই বিশেষ নজরদারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ অনলাইন পরীক্ষা দিয়ে প্রথমে লার্নার্স লাইসেন্স এবং সিসিটিভির সামনে গাড়ি চালিয়ে দেখানোর পরীক্ষায় উতরোলে তবেই লাইসেন্স পাওয়ার ব্যবস্থা চালু করে বাড়িতে বসে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার সম্ভাবনা শেষ করে দিয়েছে পরিবহণ দন্তর৷ এ বার মোটর ড্রাইভিং স্কুলগুলোর উপর নজরদারি শুরু করার পালা৷ এই বিষয়ে বেলতলায় পাবলিক ভেহিকলস ডিপার্টমেন্টের (পিভিডি ) ডিরেক্টর তপনকান্তি রুদ্র জানিয়েছেন , ‘নিরাপত্তার সঙ্গে কোনও আপোষ নয়৷ যদি আমরা কঠোর হলে দুর্ঘটনা কমে , তবে আমাদের কঠোর হতে হবে৷ ’ পরিবহণ দন্তর জানিয়েছে , একদিকে যেমন বেহালায় সেন্সর -যুক্ত অত্যাধুনিক টেস্টিং ট্র্যাক তৈরি করে সেখানেই গাড়ি চালানোর পরীক্ষা নেওয়া হবে ঠিক হয়েছে , অন্য দিকে তেমনি মোটর ট্রেনিং স্কুলগুলোকেও ঢেলে সাজার পদ্ধতি বের করার ভার দেওয়া হয়েছে খড়গপুর আইআইটি -কে৷
খড়গপুর আইআইটি -র যে বিশেষ টিম পরিবহণ দপ্তরের হয়ে দুর্ঘটনা কমানোর কাজ করছে তার নেতৃত্বে রয়েছেন অধ্যাপক ভার্গব মৈত্র৷ তাঁর কথায় , ‘রাজ্যের বিভিন্ন মোটর ট্রেনিং স্কুল পরিদর্শন করে আমাদের মনে হয়েছে , বেশিরভাগ স্কুলের পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে৷ বেশিরভাগ স্কুলে শিক্ষা দেওয়ার ন্যূনতম জায়গাটুকু নেই৷ ট্রেনিং স্কুল মানে গিয়ার , ক্লাচ , অ্যাক্সেলারেটর নাড়াচাড়া করা নয়৷ আরও অনেক কিছু শেখার রয়েছে৷ সেগুলো ক্লাসে শিখতে হয়৷ ’জায়গার অভাব ছাড়াও যোগ্যতাসম্পন্ন প্রশিক্ষকের অভাব মোটর ট্রেনিং স্কুলগুলোর দুর্বলতার জায়গা৷ এই দুর্বলতা কাটালে কয়েক মাস আগে খড়গপুর আইআইটি -তে রাজ্যের ৮০টি মোটর ট্রেনিং স্কুলের প্রশিক্ষকদের নিয়ে এক বিশেষ শিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল৷ কী করে শেখাতে হয় , ওই শিবিরে তা -ই শেখানো হয়েছিল প্রশিক্ষকদের৷ ভার্গবের কথায় , ‘মোটর
ট্রেনিং স্কুলগুলোয় কোনও বই বা টিচিং ম্যানুয়াল বলে কিছু নেই৷ সেই কারণে আমরা পরিবহণ দপ্তরের নির্দেশে খুব সহজ ভাবে লেখা একটা টিচিং ম্যানুয়াল তৈরি করছি৷ কাজ প্রায় শেষ৷ ’ কলকাতার মোটর ট্রেনিং স্কুল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিমল গুহর সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করলে তিনি স্বীকার করেছেন , ‘বহু মোটর ট্রেনিং স্কুলেই ক্লাস নেওয়ার মতো জায়গা নেই৷ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ট্রেনারও নেই৷ ভাড়া করা ট্রেনার দিয়ে কাজ চালিয়ে রোজগার করে এই ধরনের স্কুল৷ ’ পথ দুর্ঘটনা ক্রমশ বাড়তে থাকার এটা একটা বড় কারণ বলে তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন৷
স্টিয়ারিং হুইলের দায়িত্ব যাতে অযোগ্য হাতে না পড়ে , তা নিশ্চিত করতে কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে পরিবহণ দন্তর৷ এর জন্য একদিকে যেমন রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অফিসের (আরটিও ) কার্যকলাপের উপর কড়া নজরদারি রাখা শুরু হয়েছে , অন্য দিকে রাজ্য সরকারের থেকে লাইসেন্সপ্রান্ত প্রায় ৪০০ মোটর ট্রেনিং স্কুলের পরিকাঠামো কতটা অনুমোদনসাপেক্ষ ---খতিয়ে দেখা হচ্ছে তা -ও৷ শুধুমাত্র ঠিকঠাক ‘সেটিং ’ থাকায় একসময় আরটিও না গিয়েও বা গাড়ি চালানোর পরীক্ষা না দিয়েও ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যা বিরল নয়৷ বরং তা এতটাই বেশি যে আজও ‘তাড়াতাড়ি ’ ড্রাইভিং লাইসেন্স করানোর কথা উঠলে গাড়ি চালানো শেখা নয় , বিভিন্ন আরটিও -তে গিয়ে ‘প্রভাবশালী ’ দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ করার উপদেশই মেলে সবচেয়ে বেশি৷ এরই অনিবার্য পরিণতি পথ দুর্ঘটনা ও সেই কারণে মৃত্যুর সংখ্যায় দিনে দিনে বৃদ্ধি৷ ন্যাশনাল রোড সেফটি কাউন্সিলের দাখিল করা হিসাব বলছে , ভারতে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ করে মানুষ পথ দুর্ঘটনায় মারা যান৷ এই হিসেবে বছরের শেষে চালকের ভুলে বা নিজের অসাবধানতায় মৃত ব্যক্তির সংখ্যা এ দেশে দেড় লক্ষ ছুঁইছুই৷
এর মধ্যে এই রাজ্যেই বছরে গড়ে সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ পথ দুর্ঘটনায় মারা যান৷ পরিবহণ দপ্তরের বিশ্লেষণ অনুযায়ী , ভূত লুকিয়ে আছে সর্ষের মধ্যেই৷ গাড়ি চালানোর জন্য যাঁরা লাইসেন্স নিতে আসছেন , তাঁদের শেখার মধ্যেই গলদ থাকার জন্য এত বেশি সংখ্যক দুর্ঘটনা ঘটছে রাজ্যে৷ তাই , যেখানে গাড়ি চালানো শেখানো হয় এবং যেখান থেকে লাইসেন্স ইস্যু করা হয় --- এই দুই জায়গার উপরেই বিশেষ নজরদারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ অনলাইন পরীক্ষা দিয়ে প্রথমে লার্নার্স লাইসেন্স এবং সিসিটিভির সামনে গাড়ি চালিয়ে দেখানোর পরীক্ষায় উতরোলে তবেই লাইসেন্স পাওয়ার ব্যবস্থা চালু করে বাড়িতে বসে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার সম্ভাবনা শেষ করে দিয়েছে পরিবহণ দন্তর৷ এ বার মোটর ড্রাইভিং স্কুলগুলোর উপর নজরদারি শুরু করার পালা৷ এই বিষয়ে বেলতলায় পাবলিক ভেহিকলস ডিপার্টমেন্টের (পিভিডি ) ডিরেক্টর তপনকান্তি রুদ্র জানিয়েছেন , ‘নিরাপত্তার সঙ্গে কোনও আপোষ নয়৷ যদি আমরা কঠোর হলে দুর্ঘটনা কমে , তবে আমাদের কঠোর হতে হবে৷ ’ পরিবহণ দন্তর জানিয়েছে , একদিকে যেমন বেহালায় সেন্সর -যুক্ত অত্যাধুনিক টেস্টিং ট্র্যাক তৈরি করে সেখানেই গাড়ি চালানোর পরীক্ষা নেওয়া হবে ঠিক হয়েছে , অন্য দিকে তেমনি মোটর ট্রেনিং স্কুলগুলোকেও ঢেলে সাজার পদ্ধতি বের করার ভার দেওয়া হয়েছে খড়গপুর আইআইটি -কে৷
খড়গপুর আইআইটি -র যে বিশেষ টিম পরিবহণ দপ্তরের হয়ে দুর্ঘটনা কমানোর কাজ করছে তার নেতৃত্বে রয়েছেন অধ্যাপক ভার্গব মৈত্র৷ তাঁর কথায় , ‘রাজ্যের বিভিন্ন মোটর ট্রেনিং স্কুল পরিদর্শন করে আমাদের মনে হয়েছে , বেশিরভাগ স্কুলের পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে৷ বেশিরভাগ স্কুলে শিক্ষা দেওয়ার ন্যূনতম জায়গাটুকু নেই৷ ট্রেনিং স্কুল মানে গিয়ার , ক্লাচ , অ্যাক্সেলারেটর নাড়াচাড়া করা নয়৷ আরও অনেক কিছু শেখার রয়েছে৷ সেগুলো ক্লাসে শিখতে হয়৷ ’জায়গার অভাব ছাড়াও যোগ্যতাসম্পন্ন প্রশিক্ষকের অভাব মোটর ট্রেনিং স্কুলগুলোর দুর্বলতার জায়গা৷ এই দুর্বলতা কাটালে কয়েক মাস আগে খড়গপুর আইআইটি -তে রাজ্যের ৮০টি মোটর ট্রেনিং স্কুলের প্রশিক্ষকদের নিয়ে এক বিশেষ শিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল৷ কী করে শেখাতে হয় , ওই শিবিরে তা -ই শেখানো হয়েছিল প্রশিক্ষকদের৷ ভার্গবের কথায় , ‘মোটর
ট্রেনিং স্কুলগুলোয় কোনও বই বা টিচিং ম্যানুয়াল বলে কিছু নেই৷ সেই কারণে আমরা পরিবহণ দপ্তরের নির্দেশে খুব সহজ ভাবে লেখা একটা টিচিং ম্যানুয়াল তৈরি করছি৷ কাজ প্রায় শেষ৷ ’ কলকাতার মোটর ট্রেনিং স্কুল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিমল গুহর সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করলে তিনি স্বীকার করেছেন , ‘বহু মোটর ট্রেনিং স্কুলেই ক্লাস নেওয়ার মতো জায়গা নেই৷ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ট্রেনারও নেই৷ ভাড়া করা ট্রেনার দিয়ে কাজ চালিয়ে রোজগার করে এই ধরনের স্কুল৷ ’ পথ দুর্ঘটনা ক্রমশ বাড়তে থাকার এটা একটা বড় কারণ বলে তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন৷