অভিজিৎ সেন
সব কফি বার বার, স্টারবাকস এক বার৷ সেটা কি এই মার্কিন বহুজাতিক বিশ্বের বৃহত্তম কফি চেন হওয়ার জন্য? পঁচাত্তরটি দেশে চব্বিশ হাজার আউটলেট, প্রতিদিন ৪০০ কোটি কাপ কফি বিক্রি, সত্যিই মাথা ঘুরিয়ে দেবার মতো পরিসংখ্যান! গত ২০ মার্চ, কলকাতায় আবির্ভাবের দিন, উত্সাহীদের দীর্ঘ লাইন দেখে তাই কি মনে হয়েছিল এটা পার্ক স্ট্রিট না সারপেন্টাইন লেন? প্রশ্নটা সহজ, উত্তরটা জানা৷ স্টারবাকস পান যে শুধু উচ্চাভিলাষীদেরই মানায়৷ ঠিক যেমন অনেকে মনে করেন, পেশাদার জীবনে সফল হওয়ার মাপকাঠি অন্তত একটি জাগুয়ার বা ল্যান্ড-রোভারের মালিক হওয়া৷ কাকতালীয় ভাবে, সব ক’টি ব্র্যান্ড ভারতে আনার পিছনে রয়েছে ১৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী টাটা গোষ্ঠী৷
কোনও বহুজাতিক খাবারের ব্রান্ড স্টোরের উদ্বোধনী দিনে এমন উদ্দীপনা আগেও দেখেছে কলকাতা৷ ফার্স্ট ডে, ফার্স্ট শো’র সামাজিক ঘোষণা তখনও ছড়িয়ে পড়েছিল, ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ ছাড়াই৷ ২০০০ সালে কলকাতায় প্রবেশ কফি চেন বারিস্তার৷ ২০০৫ সালে কলকাতায় আসে কেএফসি, সাবওয়ে ও কোস্টা কফি৷ ২০০৭ সালে ম্যাকডোনাল্ডস৷ গত এক দশকে ভারতে ইতালিয়ান কফি চেন বারিস্তার হাত বদল হয়েছে বার দুয়েক৷ আর ব্রিটিশ চেন কোস্টা কফি ভারতে থাকলেও, কলকাতা থেকে অনেক দিন আগেই ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে৷ প্রায় দু’দশক ধরে দেশের কফি চেন সাম্রাজ্য শাসন করছে একটি ভারতীয় ব্র্যান্ড, ক্যাফে কফি ডে বা সিসিডি৷ ভারতের যুবসমাজের মধ্যে কফি সংস্কৃতি চালু করার কৃতিত্বও তাদের৷ সেই কারণেই কলেজ ক্যান্টিনে, ভেন্ডিং মেশিনে দশ-বিশ টাকার ইনফিউশন আর সফেন কাপের গণ্ডি ছেড়ে কফি হাউসের সেই আড্ডাটা এখন সরে এসেছে দেড়শো-দুশোর লাতে, মোকা আর ফ্রাপের ময়দানে৷
স্টারবাকসের জন্ম ১৯৭১ সালে আমেরিকার বন্দরশহর সিয়াটলে৷ তার লোগো মত্স্যকন্যা সাইরেন৷ ভারতে যাত্রা শুরু ২০১২ সালে টাটাদের সঙ্গে ৫০:৫০ যৌথ উদ্যোগে৷ মোট আউটলেটের সংখ্যা ইতিমধ্যেই একশো ছাড়িয়েছে৷ তা হলে কলকাতাকে ছ’বছর অপেক্ষা করতে হল কেন? ইমেলে দেওয়া সাক্ষাত্কারে টাটা স্টারবাকস-এর চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার (সিইও) সুমিত্র ঘোষ বললেন, ‘ভারতের মতো বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশে, দীর্ঘ মেয়াদে সাফল্য পেতে হলে অনেক ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হয়৷ নতুন স্টোর খোলার সময় এই বোধ কাজ করে৷’ তবে প্রথম দিন থেকেই কলকাতার তিনটি স্টোরেই কফি প্রেমিকদের বিপুল উত্সাহ দেখে সুমিত্রর আশা, শহরের নতুন আড্ডাস্থল হোক স্টারবাকস৷ তাঁর মতে, এতে বহু মানুষ স্টারবাকস কফিপানের অনন্য অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করবেন৷ এর পাশাপাশি তিনি মনে করিয়ে দিলেন, অতিথির মতামতকেও তাঁরা যথেষ্ট গুরুত্ব দেন৷
একটু উষ্ণতার জন্য এসপ্রেসো, লাতে, মোকা, কাপুচিনি, আমেরিকানো হাজির শর্ট, টল গ্র্যান্ড মাপে৷ আবার গরমকে হারাতে রয়েছে নানা ধরনের ফ্রাপুচিনো আর কোল্ড ব্রিউ৷ কিন্তু অল্পেতে খুশি হবে কলকাতাবাসী কি? উত্তরে সুমিত্র বললেন, ‘শুধু শহরবাসীর মিষ্টিমুখের জন্যই রাখা হয়েছে চমচম তিরামিসু এবং চকোলেট রসমালাইয়ের মতো দুটি ডেজার্ট আইটেম৷ কলকাতা মানেই তো ছানার মিষ্টির উদ্যাপন৷ আগামী দিনে আরও বেশ কিছু শহরকেন্দ্রিক পদ যোগ হবে৷’
বহু ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে মহাসমারোহে বহুজাতিক ব্রান্ডের উদ্বোধন হয় কিন্তু সময়ের সঙ্গে সেই উদ্দীপনাও মিইয়ে যায়৷ নতুন উৎসাহ জিইয়ে রাখার জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছে টাটা স্টারবাকস৷ সুমিত্রর মতে, ‘আমাদের লক্ষ্যই হল স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক স্বাদের মিশেলের মাধ্যমে গ্রাহককে সেরা পরিষেবা দেওয়া৷ স্টারবাকস অভিজ্ঞতা দাঁড়িয়ে আছে তিনটি ভিতের উপর- আমাদের পণ্য, আমাদের স্থান ও আমাদের কর্মীরা৷ আমাদের অভিজ্ঞতা বলে, এই কফির আকর্ষণে যাঁরা এখানে এক বার আসেন, স্টোরের পরিবেশ ও পরিষেবা তাঁদের বার বার ফিরিয়ে আনে৷’
সব কফি বার বার, স্টারবাকস এক বার৷ সেটা কি এই মার্কিন বহুজাতিক বিশ্বের বৃহত্তম কফি চেন হওয়ার জন্য? পঁচাত্তরটি দেশে চব্বিশ হাজার আউটলেট, প্রতিদিন ৪০০ কোটি কাপ কফি বিক্রি, সত্যিই মাথা ঘুরিয়ে দেবার মতো পরিসংখ্যান! গত ২০ মার্চ, কলকাতায় আবির্ভাবের দিন, উত্সাহীদের দীর্ঘ লাইন দেখে তাই কি মনে হয়েছিল এটা পার্ক স্ট্রিট না সারপেন্টাইন লেন? প্রশ্নটা সহজ, উত্তরটা জানা৷ স্টারবাকস পান যে শুধু উচ্চাভিলাষীদেরই মানায়৷ ঠিক যেমন অনেকে মনে করেন, পেশাদার জীবনে সফল হওয়ার মাপকাঠি অন্তত একটি জাগুয়ার বা ল্যান্ড-রোভারের মালিক হওয়া৷ কাকতালীয় ভাবে, সব ক’টি ব্র্যান্ড ভারতে আনার পিছনে রয়েছে ১৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী টাটা গোষ্ঠী৷
কোনও বহুজাতিক খাবারের ব্রান্ড স্টোরের উদ্বোধনী দিনে এমন উদ্দীপনা আগেও দেখেছে কলকাতা৷ ফার্স্ট ডে, ফার্স্ট শো’র সামাজিক ঘোষণা তখনও ছড়িয়ে পড়েছিল, ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ ছাড়াই৷ ২০০০ সালে কলকাতায় প্রবেশ কফি চেন বারিস্তার৷ ২০০৫ সালে কলকাতায় আসে কেএফসি, সাবওয়ে ও কোস্টা কফি৷ ২০০৭ সালে ম্যাকডোনাল্ডস৷ গত এক দশকে ভারতে ইতালিয়ান কফি চেন বারিস্তার হাত বদল হয়েছে বার দুয়েক৷ আর ব্রিটিশ চেন কোস্টা কফি ভারতে থাকলেও, কলকাতা থেকে অনেক দিন আগেই ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে৷ প্রায় দু’দশক ধরে দেশের কফি চেন সাম্রাজ্য শাসন করছে একটি ভারতীয় ব্র্যান্ড, ক্যাফে কফি ডে বা সিসিডি৷ ভারতের যুবসমাজের মধ্যে কফি সংস্কৃতি চালু করার কৃতিত্বও তাদের৷ সেই কারণেই কলেজ ক্যান্টিনে, ভেন্ডিং মেশিনে দশ-বিশ টাকার ইনফিউশন আর সফেন কাপের গণ্ডি ছেড়ে কফি হাউসের সেই আড্ডাটা এখন সরে এসেছে দেড়শো-দুশোর লাতে, মোকা আর ফ্রাপের ময়দানে৷
স্টারবাকসের জন্ম ১৯৭১ সালে আমেরিকার বন্দরশহর সিয়াটলে৷ তার লোগো মত্স্যকন্যা সাইরেন৷ ভারতে যাত্রা শুরু ২০১২ সালে টাটাদের সঙ্গে ৫০:৫০ যৌথ উদ্যোগে৷ মোট আউটলেটের সংখ্যা ইতিমধ্যেই একশো ছাড়িয়েছে৷ তা হলে কলকাতাকে ছ’বছর অপেক্ষা করতে হল কেন? ইমেলে দেওয়া সাক্ষাত্কারে টাটা স্টারবাকস-এর চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার (সিইও) সুমিত্র ঘোষ বললেন, ‘ভারতের মতো বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশে, দীর্ঘ মেয়াদে সাফল্য পেতে হলে অনেক ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হয়৷ নতুন স্টোর খোলার সময় এই বোধ কাজ করে৷’ তবে প্রথম দিন থেকেই কলকাতার তিনটি স্টোরেই কফি প্রেমিকদের বিপুল উত্সাহ দেখে সুমিত্রর আশা, শহরের নতুন আড্ডাস্থল হোক স্টারবাকস৷ তাঁর মতে, এতে বহু মানুষ স্টারবাকস কফিপানের অনন্য অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করবেন৷ এর পাশাপাশি তিনি মনে করিয়ে দিলেন, অতিথির মতামতকেও তাঁরা যথেষ্ট গুরুত্ব দেন৷
একটু উষ্ণতার জন্য এসপ্রেসো, লাতে, মোকা, কাপুচিনি, আমেরিকানো হাজির শর্ট, টল গ্র্যান্ড মাপে৷ আবার গরমকে হারাতে রয়েছে নানা ধরনের ফ্রাপুচিনো আর কোল্ড ব্রিউ৷ কিন্তু অল্পেতে খুশি হবে কলকাতাবাসী কি? উত্তরে সুমিত্র বললেন, ‘শুধু শহরবাসীর মিষ্টিমুখের জন্যই রাখা হয়েছে চমচম তিরামিসু এবং চকোলেট রসমালাইয়ের মতো দুটি ডেজার্ট আইটেম৷ কলকাতা মানেই তো ছানার মিষ্টির উদ্যাপন৷ আগামী দিনে আরও বেশ কিছু শহরকেন্দ্রিক পদ যোগ হবে৷’
বহু ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে মহাসমারোহে বহুজাতিক ব্রান্ডের উদ্বোধন হয় কিন্তু সময়ের সঙ্গে সেই উদ্দীপনাও মিইয়ে যায়৷ নতুন উৎসাহ জিইয়ে রাখার জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছে টাটা স্টারবাকস৷ সুমিত্রর মতে, ‘আমাদের লক্ষ্যই হল স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক স্বাদের মিশেলের মাধ্যমে গ্রাহককে সেরা পরিষেবা দেওয়া৷ স্টারবাকস অভিজ্ঞতা দাঁড়িয়ে আছে তিনটি ভিতের উপর- আমাদের পণ্য, আমাদের স্থান ও আমাদের কর্মীরা৷ আমাদের অভিজ্ঞতা বলে, এই কফির আকর্ষণে যাঁরা এখানে এক বার আসেন, স্টোরের পরিবেশ ও পরিষেবা তাঁদের বার বার ফিরিয়ে আনে৷’