অ্যাপশহর

আর পাইপে ঢেলে নয়, জল বাঁচাতে হাতিয়ার স্প্রিঙ্কলার

সারা দেশে জলসঙ্কটের পরিস্থিতি নজরে রেখে এ রাজ্যেও জল সংরক্ষণে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য সরকার। এই আবেদনকে সামনে রেখে সম্প্রতি কলকাতার রাজপথে এক মহামিছিলে সামিল হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

EiSamay.Com 16 Jul 2019, 1:18 pm
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: ইস্টার্ন বাইপাস থেকে নিউ টাউনের রাস্তার ধার, মা উড়ালপুলের নীচের বাগান থেকে সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের বুলেভার্ডের গাছগুলির পরিচর্যায় প্রতিদিনই প্রয়োজন হয় প্রচুর জল। এ ছাড়া প্রতিদিন শহরে যে পরিমাণ জল স্রেফ অপচয় হয়, তার পরিমাণও নেহাত কম নয়। এই পরিস্থতিতিতে শহরের রাস্তার ধার, বুলেভার্ড, পার্ক এবং উদ্যানগুলির পরিচর্যায় জলের অপচয় কমানোর উদ্যোগ শুরু করছে কলকাতা পুরসভা এবং রাজ্যের আর্বান রিক্রিয়েশনাল ফরেস্ট্রি বিভাগ।
EiSamay.Com kol water


সারা দেশে জলসঙ্কটের পরিস্থিতি নজরে রেখে এ রাজ্যেও জল সংরক্ষণে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য সরকার। এই আবেদনকে সামনে রেখে সম্প্রতি কলকাতার রাজপথে এক মহামিছিলে সামিল হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম প্রতি সপ্তাহে বরো অফিসগুলিতে যে বৈঠক করছেন, তাতে জলের অপচয় বন্ধে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলছেন কাউন্সিলরদের। রাজ্যের আর্বান রিক্রিয়েশনাল ফরেস্ট্রির সিনিয়র হর্টিকালচারিস্ট প্রবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘এখন মূলত কল থেকে পাইপের মাধ্যমে বা গাড়িতে জল দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে শহরের বাগানগুলিতে। তাতে যথেষ্ট অপচয় হয়। সে তুলনায় স্প্রিঙ্কলার, ডিপ ইরিগেশন বা বৃষ্টির জল ধরে তা বাগানে ব্যবহার করা হলে, অপচয় অনেকটাই কমানো সম্ভব।’

স্প্রিঙ্কলারের মাধ্যমে যেহেতু ছিটিয়ে জল দেওয়া হয়, তাই গাছ প্রয়োজনীয় জল পায়, অপচয়ও কমে। রাজস্থানের মতো শুখা রাজ্যে কৃষিতে এই পদ্ধতিতেই জল সেচের ব্যবস্থা করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ জমিতে। যেহেতু জলের মিটার বসানো নেই, তাই প্রতিদিন কলকাতার বাগানগুলির পরিচর্যায় ঠিক কতটা জল ব্যবহার হয়, তার কোনও তথ্য নেই। তবে বিশেষজ্ঞদের প্রাথমিক হিসেবে এ কাজে ব্যবহৃত জলের প্রায় ২০ শতাংশ অপচয় হয়। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (পার্ক এবং উদ্যান) দেবাশিস কুমার জানান, ইতিমধ্যে ইলিয়ট পার্ক এবং সাদার্ন অ্যাভিনিউ বুলেভার্ডে স্প্রিঙ্কলার বসানো হয়েছে। শহরের বড় বড় সবক’টি পার্ক এবং উদ্যানে জল দেওয়ার জন্য স্প্রিঙ্কলারই ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে কলকাতা পুরসভার। প্রবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আধুনিক শহরের অন্যতম অঙ্গ হল উদ্যান। তার জন্য জল প্রয়োজনীয়। অপচয় বন্ধে স্প্রিঙ্কলারের ব্যবহার এবং ডিপ ইরিগেশনের ব্যবহার বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে আর্বান রিক্রিয়েশনাল ফরেস্ট্রি বিভাগও।’

ডিপ ইরিগেশন পদ্ধতিতে মাটির নীচে পাইপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে জল সেচের ব্যবস্থা করা যায়। পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন ল’অফিসার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় মনে করেন, ‘বড় বড় আবাসনগুলিতে বৃষ্টির জল ধরে রেখে তা বাগান পরিচর্যার মতো কাজে অনায়াসেই ব্যবহার করা যেতে পারে। একইসঙ্গে পার্ক এবং উদ্যানগুলিতে জল দেওয়ার জন্য যে কলগুলি রয়েছে, তার মাধ্যমে যেন জলের অপচয় না-হয়, তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। অপচয় বন্ধে জল জরিমানা চালু করা দরকার।’ প্রবীর জানান, কলগুলির মুখগুলি ঠিক করা-সহ অপচয় বন্ধে আরও কিছু পদক্ষেপ করবে আর্বান ফরেস্ট্রি বিভাগ। দেবাশিস কুমার বলেন, ‘রেন ওয়াটার হারভেস্টিং অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি পদক্ষেপ। কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ তার ব্যবহার বাড়াতে কিছু উদ্যোগ নিচ্ছে।’

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল