অ্যাপশহর

গেরস্থের পাতে আলুপোস্তও আগুন, রাজ্যের তিরে কেন্দ্র

নিরামিষ হোক বা আমিষ পোস্তর দামের ছেঁকায় পাতে ঠেকানোয় দায়। ভোজনরসিক বাঙালির স্বাদের পোস্ত (Poppy) বিলাস পুড়ে খাক হতে বসেছে দামের ঠেলায়। আর যা নিয়ে শুরু হয়েছে কেন্দ্র-রাজ্য তরজা।

Ei Samay 19 Jul 2021, 5:36 pm

হাইলাইটস

  • পোস্তর দাম এখন অনেক জায়গাতেই কিলো-প্রতি দু'হাজার টাকা ছাড়িয়েছে।
  • প্রিয় এই রন্ধন-উপকরণের অগ্নিমূল্য নিয়ে বাংলার প্রশাসনিক কর্তারা দায়ী করছেন কেন্দ্রের নীতিকেই।
  • এই মুহূর্তে সারা দেশে মাত্র তিনটি রাজ্য উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে পোস্ত চাষের অনুমোদন রয়েছে।
EiSamay.Com Food
প্রতীকী ছবি
পার্থসারথি সেনগুপ্ত
পোস্তর বড়া, পোস্ত বাটা, আলু পোস্ত, লাউ পোস্ত বা ঝিঙে পোস্ত ....। জিভে জল আনা কত না রকমারি পদ। বাঙালির সেই পোস্ত-বিলাসও পুড়ে খাক হতে বসেছে দামের ছ্যাঁকায়। পোস্তর দাম এখন অনেক জায়গাতেই কিলো-প্রতি দু'হাজার টাকা ছাড়িয়েছে, বিশেষ করে প্যাকেটের পোস্তয়। প্রিয় এই রন্ধন-উপকরণের অগ্নিমূল্য নিয়ে বাংলার প্রশাসনিক কর্তারা দায়ী করছেন কেন্দ্রের নীতিকেই।

পোস্তর দাম-বৃদ্ধি নিয়ে নবান্নের কৃষি-উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদারের বক্তব্য, '২০১৯-য়েই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তৎকালীন মুখ্যসচিব কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রকে চিঠি দিয়ে রাজ্যে সরকারি কৃষি খামারগুলিতে পোস্ত চাষের অনুমোদন চেয়েছিলেন। কারণ, এই মুহূর্তে সারা দেশে মাত্র তিনটি রাজ্য উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে পোস্ত চাষের অনুমোদন রয়েছে। তা হয় নারকোটিক্স কন্ট্রোল বুরোর (এনসিবি) নজরদারিতে।' তাঁর সংযোজন, 'আমরা কৃষিমন্ত্রককে জানিয়েছিলাম, রাজ্যে দেওয়াল ঘেরা সরকারি কৃষি খামারে পোস্ত চাষের অনুমোদন দিক কেন্দ্র। এগুলি পুরোপুরি সুরক্ষিত। আমরা এও জানিয়েছিলাম, পোস্তর যে অংশ ওষুধ তৈরিতে লাগে, তা সরকারি নিয়ন্ত্রণে যথাযথ সংস্থাকেই বিক্রি করা হবে।'

নারকোটিক অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবসটেন্সেস অ্যাক্ট অনুযায়ী, দেশে পোস্ত চাষ নিয়ন্ত্রিত। কারণ, পোস্ত থেকে মাদকচক্রগুলি বেআইনি ভাবে আফিম বানায়। বেআইনি পোস্ত চাষ ঠেকাতে ২০১৮-য় রাজ্য সরকারও বেশ কয়েকটি জেলায় ড্রোনের সাহায্যে নজরদারি চালিয়েছিল। ভারত সরকারই তিন রাজ্যে চাষিদের কাছ থেকে পোস্ত কিনে নেয়। তা ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার হয়। দেশে যে পোস্ত খাদ্য হিসাবে ব্যবহার হয়, তা মূলত আমদানি-নির্ভর।


প্রদীপের কথায়, 'সাধারণ ভাবে বাঙালির খাদ্য-তালিকায় পোস্ত অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি পদ। ২০১৯-এ যখন পোস্তর দাম ছ'শো টাকা কিলো ছুঁয়েছিল, তখনই আমরা কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের সরকারি খামারে পোস্ত চাষের অনুমোদন চেয়েছিলাম। তিন-তিনটি চিঠি দিয়েছিলাম আমরা। কৃষিমন্ত্রক সেগুলি এনসিবিকে পাঠায়। তারা আমাদের জানায়, রাজ্যের সরকারি খামারে পোস্ত চাষের অনুমোদন মিলবে না।' রাজ্যের কৃষি-উপদেষ্টার ক্ষোভ, 'কেন্দ্র অনুমোদন দিলে আজ বাংলার মানুষ অপেক্ষাকৃত কম দামে পোস্ত কিনতে পারতেন।'

ফোরাম ফর ট্রেডার্স অর্গানাইজেসনস-এর সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, 'পোস্ত খোলা বিক্রি হচ্ছে আঠারোশো টাকা কিলো, প্যাকেটে দু'হাজার টাকা। এমনিতে চাষ নেই, ভুটান, নেপাল থেকে যেটুকু আসছে, তা দিয়েই কাজ চলছে। ফলে দামও আকাশছোঁয়া।'

দিল্লিতে কোভ্যাক্সিনের ট্রায়ালে যোগ সাহসী দুই খুদে বোনের
এরই মধ্যে আবার পোস্তয় ভুট্টার গুঁড়ো মিশিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে, এমন অভিযোগ আসছিল কলকাতা পুরসভার কন্ট্রোল রুমে। এর ভিত্তিতে শনিবার পুরসভার খাদ্য সুরক্ষা দপ্তরের কর্মীরা পোস্তা বাজার-সহ বেশ কয়েকটি বাজারে অভিযান চালান। সংগ্রহ করা হয় পোস্তর নমুনা। পুরসভার পরীক্ষাগারে সে-সব পরীক্ষা করা হবে। দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, দু'টি বরো এলাকার একাধিক বাজারে অভিযান চালিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। অভিযান চলবে। গত বৃহস্পতিবার কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চও ভেজাল পোস্ত বিক্রির অভিযোগে এক জনকে গ্রেপ্তার করেছিল।

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল