অ্যাপশহর

'ড্রাইভিং ইন পুজো'র ভাবনায় ধন্দে পুলিশও

করোনাকালে ভিড়ের মধ্যে ঢুকে ঠাকুর দেখাটাও যেমন চাপের তেমনই পথে গাড়ি নিয়ে বেরোলে তা পার্কিং করতে কম ঝক্কি পোহাতে হয় না চালকদের। কিন্তু সেসবের ঝামেলা ছাড়াই গাড়ির মধ্যেই বসে দেখা যাবে প্রতিমা। কিন্তু কি ভাবে? বিস্তারিত জানতে পড়ুন...

Ei Samay 10 Oct 2021, 9:02 am

হাইলাইটস

  • করোনাকালে নতুন ট্রেন্ড 'ড্রাইভিং ইন পুজো'।
  • ভিড় এড়িয়ে গাড়িতে বসেই ঠাকুর দেখুন।
  • যদিও এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ অন্ধকারে কলকাতা পুলিশ। প্রশাসন থেকে স্পষ্ট ভাবে কিছু না জানানোয় ধন্দে সাধারণ দর্শনার্থীরাও।
EiSamay.Com Durga Puja
ছবি সৌজন্যে- ইন্সটাগ্রাম
এই সময়: করোনাকালে নতুন ট্রেন্ড 'ড্রাইভিং ইন পুজো'। মণ্ডপ কিংবা প্রতিমা দর্শনের জন্য ঠেলাঠেলি কিংবা লাইনে দাঁড়ানোর দরকার নেই। ভিড় এড়িয়ে গাড়িতে বসেই ঠাকুর দেখুন। বেশ কিছু দিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়া এবং টিভি চ্যানেলে ফলাও করে তার প্রচার করছে দক্ষিণ কলকাতার তিনটি পুজো কমিটি। যদিও এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ অন্ধকারে কলকাতা পুলিশ। প্রশাসন থেকে স্পষ্ট ভাবে কিছু না জানানোয় ধন্দে সাধারণ দর্শনার্থীরাও।
বাদামতলা আষাঢ় সঙ্ঘ, ৬৬ পল্লি এবং নেপাল ভট্টাচার্য স্ট্রিট-এই তিন পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, করোনার কথা মাথায় রেখে গত বারের মতো এ বছরও তাঁরা ড্রাইভিং ইন পুজো দর্শনের ব্যবস্থা করেছেন। যার মানে হল, ঠাকুর দেখার জন্যে কাউকে গাড়ি থেকে নামতে হবে না। গাড়িতে বসেই প্যান্ডেল এবং ঠাকুর দেখা যাবে। যদিও ট্র্যাফিক আইন অনুসারে রাস্তা দেখে গাড়ি চালানোই দস্তুর। এ ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করতে ট্র্যাফিক পুলিশ রাস্তার মোড়ে মোড়ে হোর্ডিংও লাগায়। তা ছাড়া পুজোর সময়ে এমনিতেই রাস্তায় মানুষের ভিড় থাকে।

এ অবস্থায় উদ্যোক্তাদের কথা মতো গাড়ি চালানোর সময়েই চালকের চোখ যদি পুজোমণ্ডপে চলে যায়, তা হলে যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। শুধু তাই নয়, গাড়িগুলি মণ্ডপের সামনে থমকে দাঁড়াবে। তাতে যানজটও বাড়বে। তাই ড্রাইভিং ইন পুজোর ভাবনা নিয়ে বেশ ফাঁপরে পুলিশকর্তারা। লালবাজারের এক শীর্ষ কর্তা অবশ্য জানাচ্ছেন, ড্রাইভিং ইন পুজো বলে যেটাকে চালানো হচ্ছে, সে ব্যাপারে তাঁরা কিছু জানেন না। পুলিশের তরফে এই ধরনের কোনও অনুমতিও দেওয়া হয়নি। রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সম্পূর্ণ ভাবে পুলিশের। ভিড়ের সময়ে রাস্তায় গাড়িতে বসে ঠাকুর দেখার সুযোগ কতটুকু মিলবে, সে ব্যাপারে সন্দিহান তাঁরা। সে রকম হলে পুলিশ কড়া হাতে মোকাবিলা করবে। রাস্তা আটকে গাড়িতে বসে ঠাকুর দেখার অনুমতি পুলিশ দেবে না।

ভবানীপুরে পুজো উদ্বোধনে সম্প্রীতির বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম জনপ্রিয় পুজো কমিটি বাদামতলা আষাঢ় সঙ্ঘের সম্পাদক সন্দীপ বারিক অবশ্য বলছেন, 'সারা দেশের মধ্যে আমরাই প্রথম গত বছর করোনার সময়ে 'ড্রাইভিং ইন পুজো' চালু করেছিলাম। এ বছরও সেটাই করছি। করোনা সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে অনেকে অনেক ধরনের উপায়ই বের করছেন। ড্রাইভিং ইন পুজোটাও আমাদের একটা নতুন ভাবনা।' তাঁর দাবি, 'আমাদের প্যান্ডেল এমন ভাবেই বানানো, গাড়ি থেকে নামার দরকার হবে না। গাড়ির জানালা না খুলেই প্যান্ডেল এবং ঠাকুর দেখতে পাওয়া যাবে। সে জন্যে চার দিক খোলা প্যান্ডেল বানিয়েছি।'

কিন্তু এতে কি পুলিশের অনুমতি আছে? তাঁর জবাব, 'আমাদের পুজোর অনুমতি আছে। ড্রাইভিং ইন পুজোর জন্যে আলাদা করে অনুমতি নেওয়া হয়নি। তা ছাড়া আমাদের রাস্তাটা চওড়া। এখানে গাড়ি চলাচলে অসুবিধা হবে না। যদি যানজট হয়, আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরাই গাড়ি পাস করিয়ে দেবেন। বড়জোড় ৪০-৪৫ সেকেন্ড গাড়ি দাঁড়াতে পারবে। তার বেশি হলেই সরিয়ে দেওয়া হবে।'

৬৬ পল্লি পুজো কমিটির সম্পাদক সমিতাভ দত্তেরও দাবি, 'গাড়ির চালক ছাড়া বাকিরা ঠাকুর দেখলে কোনও অসুবিধা হবে না। আগে আমাদের রাস্তার উপরে প্যান্ডেল হতো। সেটাকেও আমরা ফুটপাথে তুলে দিয়েছি। ফলে রাস্তায় গাড়ি দাঁড়ালে যানজট হওয়ারও কথা নয়। যানজট হলে পুলিশ দেখবে। আমরা তো রাস্তা বন্ধ করছি না।'

পুজোর ভিড়েই কি অশনি সঙ্কেততবে নেপাল ভট্টাচার্য স্ট্রিট পুজো কমিটির সম্পাদক অভিজিৎ বোসের বক্তব্য, 'আমরা গত বছর ড্রাইভিং ইন পুজো করেছিলাম। এ বারও চেষ্টা করছি। কিন্তু পুলিশ এখনও অনুমতি দেয়নি। কারণ, আমাদের যেখানে পুজো, সেটা একটা গলি। শেষ পর্যন্ত পুলিশ যদি ছাড়পত্র না দেয় তখন কিছুটা দূরে গাড়ি রেখেই মণ্ডপে আসতে হবে।'

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল