অ্যাপশহর

অনুগামীদের নতুন দলে টানতে কৌশল

প্রতিদিনই বিভিন্ন জেলা থেকে বিক্ষুব্ধ তৃণমূলকর্মীদের ফোন আসছে মুকুল রায়ের কাছে৷ এখনই বিজেপিতে যোগ দিতে চান তাঁদের অনেকেই৷

EiSamay.Com 17 Nov 2017, 11:49 am
মণিপুষ্পক সেনগুপ্ত
EiSamay.Com many ground level tmc workers want to join bjp following mukul roy
অনুগামীদের নতুন দলে টানতে কৌশল


প্রতিদিনই বিভিন্ন জেলা থেকে বিক্ষুব্ধ তৃণমূলকর্মীদের ফোন আসছে মুকুল রায়ের কাছে৷ এখনই বিজেপিতে যোগ দিতে চান তাঁদের অনেকেই৷ কিন্তু শর্ত একটাই৷ পদ্ম-পতাকা তাঁরা নেবেন ‘দাদা’র হাত থেকেই৷

আপাত নিরীহ এই আব্দারের ফল যে সুদূরপ্রসারী হতে পারে, তা বিলক্ষণ জানেন দুঁদে রাজনীতিক মুকুল৷ তাই অনুগামীদের তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাঁর অপেক্ষায় না থেকে জেলার বিজেপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যোগদান-পর্বটি সেরে ফেলতে৷ মুকুল-ঘনিষ্ঠরা জেলায় জেলায় বিক্ষুব্ধ তৃণমূলকর্মীদের কাছে সেই বার্তা পৌঁছেও দিচ্ছেন৷

মুকুল-ঘনিষ্ঠদের যুক্তি, সবাই যদি মুকুলের হাত থেকেই বিজেপির পতাকা নেন, তাতে রাজ্য বিজেপির ভারসাম্য নষ্ট হবে৷ দিলীপ ঘোষকে গুরুত্বহীন করে মুকুলই‘লাইমলাইটে’আসছেন-এমন বার্তা ছড়িয়ে পড়বে বিজেপির অন্দরে৷ বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মুকুল সেটা একদমই চান না৷ বরং দিলীপ ঘোষের নেতৃত্ব মেনেই তিনি আপাতত বিজেপির বুথ-স্তরের কর্মীদের কাছে পৌঁছতে চান৷ সে কারণেই তিনি একাধিক বার দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়েছেন, দিলীপ ঘোষই তাঁর সেনাপতি৷ তাঁর ক্যাপ্টেন৷ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বুথ স্তরের অনুগামীদের তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, নিয়মমাফিক স্থানীয় বিজেপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলেই দলবদলের কাজটি সেরে ফেলতে৷ বিজেপির গঠনতন্ত্রেও তেমনই সংস্থান৷
গত বুধবার বেহালার কয়েক জন যুব তৃণমূলকর্মী রাজ্য বিজেপি দপ্তরে এসে মুকুলকে বলেন, তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিতে চান৷ তবে পতাকা তাঁরা মুকুলের হাত থেকেই নেবেন৷ বিচক্ষণ রাজনীতিকের মতো মুকুল তত্‍ক্ষণাত্‍ ডেকে নেন সেই সময় পার্টি অফিসে হাজির বিজেপি নেতা-নেত্রীদের৷ রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক দেবশ্রী চৌধুরিকে দিয়েই ওই বিক্ষুব্ধ যুব তৃণমূলকর্মীদের হাতে পদ্ম-পতাকা তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন৷

নতুন দলে যোগ দেওয়ার আগে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মুকুল বুঝিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গে এখনই তৃণমূলের ক’জন সাংসদ, বিধায়ক এলেন--সেটা খুব জরুরি বিষয় নয়৷ রাজ্যের শাসকদলের নিচুতলায় ভাঙন ধরাতে পারলেই ‘আসল কাজ’হবে৷ সেই কাজ ইতিমধ্যে শুরুও করেছেন৷ সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলের নিচুস্তরে বড়সড় ফাটল ধরানোর আশ্বাস তিনি দিয়েছেন অমিত শাহদের৷ কিন্ত্ত তার আগে জানুয়ারিতে পশ্চিমবঙ্গে আসছেন অমিত৷ সাংসদ-বিধায়ক না হোন, তৃণমূলের নিচুতলা থেকে কত সংখ্যক কর্মীকে মুকুল বিজেপিতে ভাঙিয়ে আনতে পারলেন--তার হিসেব অবশ্যই চাইবেন অমিত৷ তাই কালবিলম্ব না করে মুকুলও চাইছেন বিভিন্ন জেলার বিক্ষুব্ধ তৃণমূলকর্মীরা সংশ্লিষ্ট জেলাতেই বিজেপিতে যোগ দিন৷ যাতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি কলকাতায় আসার আগে ‘মুকুল-বিজেপি’র সংখ্যাটা পাতে দেওয়ার মতো হয়৷

দল ছাড়ার পরে তৃণমূলের অন্দরে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তুলে মুকুল আদপে দলীয় কর্মীদের ক্ষোভ উস্কে দিতেই চেয়েছেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের৷ ১০ তারিখ রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের জনসভায় ‘জাগো বাংলা’এবং তৃণমূলের লোগোর মালিকানা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলে যে অভিযোগ তিনি করেছেন, সেটাও যে তৃণমূলের নিচুতলায় ফাটল ধরাতেই--তা তাঁর ঘনিষ্ঠরা স্বীকারও করছেন৷ আগামী মাসে জেলা সফরে বের হচ্ছেন৷ মুকুল-ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, তৃণমূলের নিচুতলায় বড় ফাটলটা তখনই ধরবে৷

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল