অ্যাপশহর

দুর্বল ব্রিজে খাঁড়ার ঘা কম্পন

বছর খানেকেরও বেশি সময় ধরে লাগাতার যে কম্পন হয়েছে, তার জন্য ব্রিজের বিয়ারিং ক্ষয়ে ধারণ ক্ষমতাটাই হারিয়ে ফেলেছিল।

EiSamay 7 Sep 2018, 11:14 am
এই সময়: জোকা-বিবাদীবাগ নির্মীয়মাণ মেট্রো প্রকল্পের মাঝেরহাট স্টেশন থেকে মাঝেরহাট ব্রিজের ভেঙে পড়ার অংশের দূরত্ব ৪.৭ মিটারের মতো। পূর্ত দপ্তরের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঝেরহাট স্টেশন নির্মাণের জন্য ওই এলাকায় অত্যাধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে একের পর এক গর্ত খুঁড়ে পিলার বসানো হয়েছে। এর ফলে বছর খানেকেরও বেশি সময় ধরে লাগাতার যে কম্পন হয়েছে, তার জন্য ব্রিজের বিয়ারিং ক্ষয়ে ধারণ ক্ষমতাটাই হারিয়ে ফেলেছিল। এই বিয়ারিংই এত দিন ধরে রেখেছিল ব্রিজটিকে। আর সেই কারণেই মাঝেরহাট ব্রিজ মাঝখান থেকে বিস্কুটের মতো ভেঙে পড়ে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় খতিয়ে দেখে এমনটাই মত দেন পূর্ত দপ্তর ও ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা।
EiSamay.Com Kolkata_bridge_PTI_Picture


তাঁদের কথায়, দুর্ঘটনার সময় ব্রিজের উপরে যে সংখ্যক গাড়ি ছিল, তাতে গাড়ির চাপ কোনও কারণ নয়। বিয়ারিং ক্ষয়ে ব্রিজের ওই অংশের এমন অবস্থা হয়েছিল যে, সেই সময়ে একটি পিঁপড়েও থাকলে ব্রিজের ওই অংশ একই ভাবে ভেঙে পড়ত। কারণ, যে বিয়ারিংগুলি ব্রিজেরও ওই অংশের ভার বহন করত, তাদের বিন্দুমাত্র ধারণক্ষমতা ছিল না। এই বিয়ারিং দিয়েই লম্বা গাটারের সঙ্গে আটকানো ছিল মাঝেরহাট ব্রিজের ভেঙে পড়া অংশ। যার উপরে এত দিন ধরে নির্ভর করেছিল ব্রিজের ওই অংশের ভার-বিন্যাসের রসায়নটি। তবে পূর্ত দপ্তরের বিশেষজ্ঞদের এই ব্যাখা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মাঝেরহাটের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজের বিয়ারিং-এর এই ক্ষয় কি পূর্ত দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের নজরে আসেনি? যদিও এই প্রশ্নের কোনও উত্তর ঘটনাস্থলে উপস্থিত পূর্ত দপ্তরের আধিকারিকদের থেকে পাওয়া যায়নি।

তবে বিয়ারিং-এর এই ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাওয়া, মেট্রোর নির্মাণ কাজের জন্য তৈরি হওয়া কম্পন যেমন একটা বড় কারণ, তেমনই সেতুর বয়সকেও একটা কারণ হিসেবে ধরেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের কথায়, যে সময় সেতুটি তৈরি হয়েছিল, তখন যে সংখ্যক গাড়ি চলাচলের অঙ্ক কষা হয়েছিল, পরে তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি গাড়ি সেতুর উপর থেকে চলাচল করেছে। ফলে সেতুটি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছিল। বিশেষজ্ঞদের দাবি, সেই দুর্বলতায় অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে মেট্রোর নির্মাণকাজের জন্য তৈরি হওয়া কম্পন। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভেঙে পড়া অংশ ছাড়াও ব্রিজের অনেক অংশে দেওয়াল ফেটে জল ঢুকে স্যাঁতসেতে হয়ে গিয়েছে। কোথাও আবার ওই ফাটলের মধ্যে জল জমে শ্যাওলার স্তর পড়ে গিয়েছে। যা ব্রিজের স্বাস্থ্যের পক্ষে ভয়ঙ্কর ক্ষতিকারক।

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল