অ্যাপশহর

সুপ্রিম কোর্টকে ভুল পথে চালনা করেছে আরসিটিসি

কলকাতা রেসকোর্সের দূষণ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে জরিমানার অঙ্ক কমাল জাতীয় পরিবেশ আদালত। কিন্তু পরিবেশ আদালত মন্তব্য করেছে, সুপ্রিম কোর্টকে শুনানির সময় ভুল পথে চালনা করেছেন রয়্যাল ক্যালকাটা টার্ফ ক্লাব বা আরসিটিসি কর্তৃপক্ষ।

EiSamay.Com 26 Jul 2019, 9:35 am
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: জরিমানা ছিল ৫০ লক্ষ টাকা। কমে হল পাঁচ লক্ষ। কলকাতা রেসকোর্সের দূষণ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে জরিমানার অঙ্ক কমাল জাতীয় পরিবেশ আদালত। কিন্তু পরিবেশ আদালত মন্তব্য করেছে, সুপ্রিম কোর্টকে শুনানির সময় ভুল পথে চালনা করেছেন রয়্যাল ক্যালকাটা টার্ফ ক্লাব বা আরসিটিসি কর্তৃপক্ষ। পরিবেশ আদালতের বিচারপতি এসপি ওয়াংদি এবং বিশেষজ্ঞ সদস্য এসএস গারবিয়ালের বেঞ্চ বলেছে, ‘এই মামলার শুনানি চলাকালীন আগাগোড়াই আরসিটিসি কর্তৃপক্ষের ভূমিকা সন্তোষজনক ছিল না এবং আদালতের নির্দেশ কার্যকরী করার ক্ষেত্রে ক্রমাগত দীর্ঘসূত্রতা অবলম্বন করেছে, নানা ভাবে দায়িত্ব এড়াতে চেয়েছে।’ তবে মামলার সর্বেশেষ শুনানিতে আরসিটিসি কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁরা পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মতো বর্জ্য পরিশোধনকেন্দ্র তৈরি করেছেন। তাই পারফরম্যান্স গ্যারান্টি হিসাবে যে টাকা গচ্ছিত ও পরবর্তী সময়ে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, তাতে ছাড় দেওয়া হোক। পরিবেশ আদালতের বেঞ্চ বলেছে, ‘আরসিটিসি কর্তৃপক্ষের বর্ষীয়ান কৌঁসুলির বক্তব্য সন্তোষজনক হলেও তারা অসদাচরণ করেছে, তার জন্য বাজেয়াপ্ত পুরো পারফরম্যান্স গ্যারান্টি ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। পাঁচ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্তই করা হবে। বাকি টাকা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ আদালত।
EiSamay.Com kolkata race course pollution case


রেসকোর্সের ঘোড়ার মলমূত্র পরিশোধন না-করেই দেদার ফেলা হচ্ছে আদিগঙ্গায়, এমন অভিযোগে পরিবেশ আদালতে মামলা করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তার ভিত্তিতে ২০১৭-র নভেম্বরে আদালত রেসকোর্স কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়, অপরিশোধিত অবস্থায় ওই বর্জ্য কোনও ভাবেই ফেলা যাবে না। বর্জ্য পরিশোধনকেন্দ্র তৈরি করতে হবে। প্রথমে পরিশোধনকেন্দ্রের পরিকল্পনা তৈরির জন্য কিছু সময় চায় আরসিটিসি। সুভাষের অভিযোগ, তার পরেও বার বার মামলা দীর্ঘায়িত করে আখেরে পরিশোধনকেন্দ্র গড়ে তোলার নির্দেশ মানছিল না তারা। এ নিয়ে একাধিক বার পরিবেশ আদালত তিরস্কারও করে তাদের। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তারা যাতে বর্জ্য পরিশোধনকেন্দ্র তৈরি করে, তা নিশ্চিত করতে ৫০ লক্ষ টাকা পারফরম্যান্স গ্যারান্টি রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে জমা দিতে বলে আদালত। আরসিটিসি কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বর্জ্য পরিশোধনকেন্দ্র গড়ে না-তোলায় আদালত প্রচণ্ড অসন্তোষ প্রকাশ করে। ৫০ লক্ষ টাকা গ্যারান্টি জরিমানা হিসাবে বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি আরও ২৫ লক্ষ টাকা গ্যারান্টি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় পরিবেশ আদালত। এর পরেই সুপ্রিম কোর্টে যান আরসিটিসি কর্তৃপক্ষ।

সুভাষের অভিযোগ, ২০১৭ সালেই যে পরিবেশ আদালত তাদের পরিশোধনকেন্দ্র গড়ে তুলতে বলেছে, এটা ‘গোপন’ করে শীর্ষ আদালতে আরসিটিসি কর্তৃপক্ষ জানান, তারা বর্জ্য পরিশোধনকেন্দ্র তৈরি করেছেন। তাই জরিমানায় ছাড় দেওয়া হোক। পরিবেশ আদালত জানিয়েছে, তাদের পুরোনো নির্দেশ সঠিক ভাবে শীর্ষ আদালতে তুলে না-ধরে আরসিটিসি কর্তৃপক্ষ শীর্ষ আদালতকে ভুল পথে চালনা করেছেন, যাতে মনে হচ্ছে পরিবেশ আদালত ভুলবশত জরিমানা করেছিল। সুভাষের মন্তব্য, ‘আদালতে কোনও মামলার এক্স-পার্টি শুনানির সময়ে আরও সতর্কতা অবলম্বন প্রয়োজন।’

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল