অ্যাপশহর

শরীর থেকে বেরিয়ে অন্ত্র, অস্ত্রোপচারে সুস্থ নবজাত

ভূমিষ্ঠ হয়েই জীবনসঙ্কট! যমে-মানুষে টানাটানিটা অবশ্য তার ‘জীবনে’ শুরু হয়েছিল জন্মের আগেই৷

Ei Samay 9 Aug 2017, 10:14 am
এই সময়: ভূমিষ্ঠ হয়েই জীবনসঙ্কট! যমে-মানুষে টানাটানিটা অবশ্য তার ‘জীবনে’ শুরু হয়েছিল জন্মের আগেই৷ আর সেই সূত্রে প্রাণসংশয় দেখা দিয়েছিল তার মায়েরও৷ গর্ভাবস্থার সাত সপ্তাহের মাথাতেই স্ক্যানে স্পষ্ট বোঝা গিয়েছিল , ডলি হালদারের গর্ভস্থ শিশুর অন্ত্র তার পেটের মধ্যে নেই , বেরিয়ে রয়েছে শরীরের বাইরে৷ ডাক্তারি পরিভাষায় , গ্যাস্ট্রোসাইসিস৷ ফাঁড়া অবশ্য কেটে গিয়েছে৷ জন্মের মাসখানেক পরে সফল অপারেশন আর পরবর্তী চিকিত্সার কেরামতিতে অ্যাপোলো গ্লেনিগেলস থেকে সেই শিশু মঙ্গলবার বাড়ি গেল মায়ের কোলে৷
EiSamay.Com kolkata hospital saves infant with critical case
শরীর থেকে বেরিয়ে অন্ত্র, অস্ত্রোপচারে সুস্থ নবজাত


খুশিতে উদ্বেল ডলি তাঁর এবং তাঁর নবজাতক পুত্রের নতুন জীবনলাভের যাবতীয় কৃতিত্ব দিয়েছেন অ্যাপোলের পেডিয়াট্রিক সার্জেন দেবাশিস মিত্রের পাশাপাশি প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ রমনা বন্দ্যোপাধ্যায় , শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ বিক্রমজিত্ দাস, শিবাঙ্গী ডোগরা ও সুদীপ সেনগুপ্তকে৷ যে অ্যাপোলোকে বার বার সাম্প্রতিক কালে জনতার পাশাপাশি সরকারের কাঠগড়াতেও উঠতে হয়েছে চিকিত্সায় গাফিলতি , বিরাট অঙ্কের বিল প্রভৃতি ইস্যুতে , সেই হাসপাতালের কর্তা থেকে শুরু করে চিকিত্সক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীরা এই একরত্তিকে প্রায় মৃত্যুমুখ দিয়ে ফিরিয়ে দিয়ে যারপরনাই তৃপ্ত৷

কেন এই নজিরকে বাহবা দিচ্ছে চিকিত্সক মহল ? মেডিক্যাল কলেজ , এসএসকেএমের পেডিয়াট্রিক সার্জেন হীরালাল কোনার কিংবা ঋষভদেব পাত্রদের মতে , ক্ষুদ্রান্ত্রের মতো একটি অভ্যন্তরীণ অতিগুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ শরীরের বাইরে উন্মুক্ত থাকায় প্রতি মুহূর্তে থেকে যায় বেয়াড়া ও প্রাণঘাতী সংক্রমণের আশঙ্কা৷ অস্ত্রোপচার -পরবর্তী সংক্রমণের সঙ্কট কাটতে চায় না সহজে৷ তার উপর আবার গোড়া থেকেই অন্ত্রটি পেটের বাইরে বেড়ে ওঠায় উদর -গহ্বর বা অ্যাবডোমিনাল ক্যাভিটির গঠনও পর্যান্ত হয় না যা পূর্ণাঙ্গ অন্ত্রকে ধারণ করতে পারে৷ ফলে সেলাই ফাটিয়ে দেওয়া কিংবা ফুসফুসের উপর চাপ তৈরি করার আশঙ্কা রয়েই যায়৷ তাই গ্যাস্ট্রোসাইসিসের অপারেশনের জন্য প্রয়োজন চিকিত্সকের অসীম দক্ষতা৷ সেই কাজটি অবশ্য সফল ও সাবলীল ভাবে করেছেন দেবাশিস মিত্র৷ এ দিন তিনি জানান , ডলিকে সফল ভাবে প্রসব করানোটাই ছিল প্রথম চ্যালেঞ্জ৷ সেটি হওয়ার পরে দেখা গেল , সদ্যোজাত ভয়াবহ শ্বাসকষ্টের শিকার৷ ভেন্টিলেশনে রেখে তাকে স্থিতিশীল করা হয় তাকে৷ ততক্ষণ তার উন্মুক্ত ক্ষুদ্রান্ত্রেকে একটি ভিজে জীবাণুমুক্ত আবরণে ঢেকে রাখা হয়েছিল৷ তার পর অপারেশন করে অন্ত্রকে পেটের মধ্যে ঢোকানো হয়৷ তাঁর কথায় , ‘অন্ত্রটি অবশ্য খাবার পরিপাকের উপযোগী ছিল না গোড়ায়৷ তাই টানা দু’সপ্তাহ স্যালাইনের মাধ্যমে ওই শিশুর পুষ্টির ব্যবস্থা করা হয়৷ তিন সন্তাহের মাথায় স্যালাইন ও খাবার খাওয়ানো দুটোই শুরু করা হয়৷ আস্তে আস্তে বন্ধ হয় স্যালাইন৷ অস্ত্রোপচার -পরবর্তী সময়ে আমাদের সর্বক্ষণের চিন্তা ছিল , কোনও সংক্রমণ যেন থাবা না -বসায়৷ যাক ! এখন সে ষোলো আনা সুস্থ৷ ’

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল