শিশুও বলছে 'আজাদি' চাই! 'ঘরকুনো' মহিলা-স্লোগানেই কলকাতায় প্রতিবাদের নতুন ভাষা
শীতের বেলায় রোদ পড়ে আসছে দ্রুত। ঠান্ডা হাওয়ায় মাঝে মাঝেই হাড় কাঁপিয়ে দিচ্ছে ওঁদের। কিন্তু শীত উপেক্ষা করে পাশাপাশি বসে জোর গলায় 'সরফারোশি কি তমন্না' গেয়ে উঠছিলেন ৭০ পার করা নাজো বেগম, সুব্বুই আজিজ ও নুরজাহান জুনাইদ। গায়ে অতি সাধারণ সোয়েটার, ওপরে শাল মুড়ি দিয়ে বসে স্লোগান দিতে থাকা এই মহিলারা কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য নন।
EiSamay.Com 9 Jan 2020, 8:20 pm
হাইলাইটস
- সিএএ-এনআরসি নিয়ে গোটা দেশ প্রতিবাদে সরব। প্রতিবাদে সামিল হয়ে প্রাণও খুইয়েছেন অনেকে। তাতেও অবশ্য থেমে নেই মানুষ।
- সিএএ-এনআরসি এবং সাম্প্রতিক জেএনইউ হামলার বিরুদ্ধে জোরদার হচ্ছে গণকণ্ঠ।
- দিল্লির শাহিনবাগ অবশ্য অনেক আগে থেকেই নতুন পর্ব শুরু করেছে প্রতিবাদের। লাগাতার প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলছে সেখানে।
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: সিএএ-এনআরসি নিয়ে গোটা দেশ প্রতিবাদে সরব। প্রতিবাদে সামিল হয়ে প্রাণও খুইয়েছেন অনেকে। তাতেও অবশ্য থেমে নেই মানুষ। সিএএ-এনআরসি এবং সাম্প্রতিক জেএনইউ হামলার বিরুদ্ধে জোরদার হচ্ছে গণকণ্ঠ। দিল্লির শাহিনবাগ অবশ্য অনেক আগে থেকেই নতুন পর্ব শুরু করেছে প্রতিবাদের। লাগাতার প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলছে সেখানে। প্রতিবাদীদের সিংহভাগই যেখানে মহিলা। সেই পথে হেঁটেছে কলকাতাও। মঙ্গলবার থেকে পার্ক সার্কাস ময়দান যেন কলকাতার শাহিনবাগ। হাড় কাঁপানো ঠান্ডার মধ্যেই মহিলারা মাঠে বসে এনআরসি-বিরোধী স্লোগান তুলছেন। দিচ্ছেন আজাদির স্লোগানও। তাঁদের স্বামী-বাবা-ভাইরাও গলা মেলাচ্ছেন। তবে ব্যারিকেডের বাইরে থেকে। পার্ক সার্কাসে সিএএ বিরোধী অন্দোলনের রাশ মহিলাদের হাতেই। আর সেখানেই এক শিশুর মুখেই উঠে এল 'আজাদি' স্লোগান! শীতের বেলায় রোদ পড়ে আসছে দ্রুত। ঠান্ডা হাওয়ায় মাঝে মাঝেই হাড় কাঁপিয়ে দিচ্ছে ওঁদের। কিন্তু শীত উপেক্ষা করে পাশাপাশি বসে জোর গলায় 'সরফারোশি কি তমন্না' গেয়ে উঠছিলেন ৭০ পার করা নাজো বেগম, সুব্বুই আজিজ ও নুরজাহান জুনাইদ। গায়ে অতি সাধারণ সোয়েটার, ওপরে শাল মুড়ি দিয়ে বসে স্লোগান দিতে থাকা এই মহিলারা কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য নন। কোনও জনকল্যাণকর সংস্থার নিয়মিত কর্মীও নন। মঙ্গলবার দুপুরের আগে এঁরা যে পরস্পরকে চিনতেন, তা-ও নয়। একেবারে সাধারণ এই গৃহবধূরা কয়েক দিন আগেও ভাবতে পারেননি এমন ভাবে তাঁরা কখনও বাড়ির চৌকাঠ পার করে পার্ক সার্কাস ময়দানে এসে প্রকাশ্যে এমন ভাবে আন্দোলন শুরু করবেন। কিন্তু তিন বৃদ্ধার কথায়, 'এখনও যদি না বেরোই তবে আর কবে বেরোব?' দেশজোড়া প্রতিবাদে শুধু যে সামিল হয়েছেন ওঁরা তাই-ই নয়, সারা রাত এমন ভাবেই বসে ধর্না দেওয়ার প্রতিজ্ঞা ওঁদের মুখে।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, নাগরিক পঞ্জীকরণ ও এনপিআর-এর বিরুদ্ধে ক্রমাগত স্লোগান দিতে থাকা শাহিন হুসেন সঙ্গে এনেছিলেন তাঁর ছ' বছরের ছেলেকে। একবছরের শিশু ও শাশুড়ি ফিরদৌসিকে সঙ্গে নিয়ে জমায়েতে এসেছিলেন নিলোফার সাদিকও। দু'জনেই বললেন, 'এটা আমাদের সবার অস্তিত্বের লড়াই। ছোট বলে ওদের বাইরে রাখা যাবে না। বিপদ তো ছোটদের কোনও ছাড় দেবে না। তাই ওদেরও থাকতে হবে।'
অজানা, অপরিচিত এই 'সাধারণ' গৃহবধূদের মঙ্গলবার দুপুরে মিলিয়ে এক করে দিয়েছিল যে ঘটনা, আপাতত গোটা দেশ তাতে উত্তাল। পথে নেমে সংশোধিত নাগরিক আইন এবং নাগরিক পঞ্জীকরণ ও এনপিআর-এর প্রতিবাদ করতেই পার্ক সার্কাস ময়দানে এক হয়েছিলেন প্রায় ৭০ জন মুসলিম গৃহবধূ। সচরাচর ঘরের চৌহদ্দির মধ্যেই স্বচ্ছন্দ বোধ করা এই মহিলারা 'আর বিলম্ব নয়' সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেননি। আর যাই হয়ে যাক, নিজেদের 'ভারতীয়' পরিচয়ে কোনও মতেই দাগ লাগাতে দিতে রাজি নন ওঁরা। দিল্লির শাহিন বাগ থেকে কলকাতার পার্ক সার্কাস ময়দান, দুই জায়গার মধ্যের দেড় হাজার কিলোমিটারের দূরত্ব যেন মুহূর্তে উবে গেল। পার্ক সার্কাস ময়দানই হয়ে উঠল কলকাতার শাহিন বাগ।
আগাম কোনও পরিকল্পনা ছিল না। মঙ্গলবার দুপুর থেকে নিতান্ত মুখে মুখেই রটে গিয়েছিল পার্ক সার্কাস ময়দানে এই জমায়েতে কথাটা। কিছুক্ষণের মধ্যে বিপুল উৎসাহে এখানে জমা হতে শুরু করলেন মুসলিম গৃহবধূরা। কারও হাতে জাতীয় পতাকা, কারও হাতে ব্যানার পোস্টার। মুখে স্লোগান। কেউ বেরিয়ে এসেছেন সদ্য হাঁটতে শেখা সন্তানের হাত ধরে। কারও বা কোলে শিশু। কেউ ভালো করে চলতে পারেন না - সঙ্গীর কাঁধে ভর করে এসেছেন প্রতিবাদ জানাতে। কলেজ স্ট্রিট, তালতলা, তোপসিয়া, তিলজলা, খিদিরপুর, পার্ক সার্কাস - শহরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসে জমা হতে শুরু করেছিলেন তাঁরা।
এই জমায়েতের মূল উদ্যোক্তা আসমাত জামিল। তিলজলা অঞ্চলের এই সমাজকর্মী আদতে একজন গৃহবধূ। মঙ্গলবারের জমায়েত নিয়ে তিনি বলেন, 'অনেক হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ, তাঁর 'আচ্ছে দিন' ফেরত নিয়ে আমাদের সেই পুরনো 'খারাপ দিন' ফিরিয়ে দিন। আমরা তাতেই ভালো থাকব। তবে আজ এখানে সারা রাত এমন প্রতিবাদ চলবে।' কলেজ স্ট্রিটের নুরজাহান জুনাইদ, তালতলার সুব্বুই আজিজ ও পার্ক সার্কাসের নাজো বেগম তো পরিষ্কার বললেন, 'আমরা সবাই ভারতীয়। কিন্তু, হঠাৎ করে কোনও তুঘলকের কাছে আমাদের ভারতীয়ত্বের প্রমাণ দিতে রাজি নই। কারও যদি দরকার থাকে, তবে তিনি প্রমাণ করুন আমি ভারতীয় নই। সারা রাতের প্রতিবাদে আমরা আছি।'
জেএনইউ থেকে যে 'আজাদি' স্লোগানের সূত্রপাত, তা ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ছন্দে-ছন্দে 'আজাদি' স্লোগানে আন্দোলিত হচ্ছে আসমুদ্রহিমাচল। সেই স্লোগান আছড়ে পড়ে মুম্বইয়ের গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়াতেও। আর সেই স্লোগানের সঙ্গে একটানা নেচে গেলেন আশির কোঠায় পৌঁছে যাওয়া এক বৃদ্ধ। আর সেই নাচই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, নাগরিক পঞ্জীকরণ ও এনপিআর-এর বিরুদ্ধে ক্রমাগত স্লোগান দিতে থাকা শাহিন হুসেন সঙ্গে এনেছিলেন তাঁর ছ' বছরের ছেলেকে। একবছরের শিশু ও শাশুড়ি ফিরদৌসিকে সঙ্গে নিয়ে জমায়েতে এসেছিলেন নিলোফার সাদিকও। দু'জনেই বললেন, 'এটা আমাদের সবার অস্তিত্বের লড়াই। ছোট বলে ওদের বাইরে রাখা যাবে না। বিপদ তো ছোটদের কোনও ছাড় দেবে না। তাই ওদেরও থাকতে হবে।'
অজানা, অপরিচিত এই 'সাধারণ' গৃহবধূদের মঙ্গলবার দুপুরে মিলিয়ে এক করে দিয়েছিল যে ঘটনা, আপাতত গোটা দেশ তাতে উত্তাল। পথে নেমে সংশোধিত নাগরিক আইন এবং নাগরিক পঞ্জীকরণ ও এনপিআর-এর প্রতিবাদ করতেই পার্ক সার্কাস ময়দানে এক হয়েছিলেন প্রায় ৭০ জন মুসলিম গৃহবধূ। সচরাচর ঘরের চৌহদ্দির মধ্যেই স্বচ্ছন্দ বোধ করা এই মহিলারা 'আর বিলম্ব নয়' সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেননি। আর যাই হয়ে যাক, নিজেদের 'ভারতীয়' পরিচয়ে কোনও মতেই দাগ লাগাতে দিতে রাজি নন ওঁরা। দিল্লির শাহিন বাগ থেকে কলকাতার পার্ক সার্কাস ময়দান, দুই জায়গার মধ্যের দেড় হাজার কিলোমিটারের দূরত্ব যেন মুহূর্তে উবে গেল। পার্ক সার্কাস ময়দানই হয়ে উঠল কলকাতার শাহিন বাগ।
আগাম কোনও পরিকল্পনা ছিল না। মঙ্গলবার দুপুর থেকে নিতান্ত মুখে মুখেই রটে গিয়েছিল পার্ক সার্কাস ময়দানে এই জমায়েতে কথাটা। কিছুক্ষণের মধ্যে বিপুল উৎসাহে এখানে জমা হতে শুরু করলেন মুসলিম গৃহবধূরা। কারও হাতে জাতীয় পতাকা, কারও হাতে ব্যানার পোস্টার। মুখে স্লোগান। কেউ বেরিয়ে এসেছেন সদ্য হাঁটতে শেখা সন্তানের হাত ধরে। কারও বা কোলে শিশু। কেউ ভালো করে চলতে পারেন না - সঙ্গীর কাঁধে ভর করে এসেছেন প্রতিবাদ জানাতে। কলেজ স্ট্রিট, তালতলা, তোপসিয়া, তিলজলা, খিদিরপুর, পার্ক সার্কাস - শহরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসে জমা হতে শুরু করেছিলেন তাঁরা।
এই জমায়েতের মূল উদ্যোক্তা আসমাত জামিল। তিলজলা অঞ্চলের এই সমাজকর্মী আদতে একজন গৃহবধূ। মঙ্গলবারের জমায়েত নিয়ে তিনি বলেন, 'অনেক হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ, তাঁর 'আচ্ছে দিন' ফেরত নিয়ে আমাদের সেই পুরনো 'খারাপ দিন' ফিরিয়ে দিন। আমরা তাতেই ভালো থাকব। তবে আজ এখানে সারা রাত এমন প্রতিবাদ চলবে।' কলেজ স্ট্রিটের নুরজাহান জুনাইদ, তালতলার সুব্বুই আজিজ ও পার্ক সার্কাসের নাজো বেগম তো পরিষ্কার বললেন, 'আমরা সবাই ভারতীয়। কিন্তু, হঠাৎ করে কোনও তুঘলকের কাছে আমাদের ভারতীয়ত্বের প্রমাণ দিতে রাজি নই। কারও যদি দরকার থাকে, তবে তিনি প্রমাণ করুন আমি ভারতীয় নই। সারা রাতের প্রতিবাদে আমরা আছি।'
জেএনইউ থেকে যে 'আজাদি' স্লোগানের সূত্রপাত, তা ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ছন্দে-ছন্দে 'আজাদি' স্লোগানে আন্দোলিত হচ্ছে আসমুদ্রহিমাচল। সেই স্লোগান আছড়ে পড়ে মুম্বইয়ের গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়াতেও। আর সেই স্লোগানের সঙ্গে একটানা নেচে গেলেন আশির কোঠায় পৌঁছে যাওয়া এক বৃদ্ধ। আর সেই নাচই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।