অ্যাপশহর

কবে ফিরবে ভেড়ি, সে প্রশ্নেই দিন কাটছে বাসিন্দাদের

সরকারের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল , পাঁচিল ভেঙে খুব তাড়াতাড়ি জলাভূমি ফিরিয়ে দেওয়া হবে৷

EiSamay.Com 28 Jun 2017, 11:02 am
এই সময়: সরকারের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল , পাঁচিল ভেঙে খুব তাড়াতাড়ি জলাভূমি ফিরিয়ে দেওয়া হবে৷ মত্স্যজীবীরা আগের মতো সেখানে মাছ চাষ করতে পারবেন৷ তবে পূর্ব কলকাতার মুকুন্দপুরের গঙ্গানগর লাগোয়া সেই একদা জলাভূমি কবে পুরোনো চেহারায় ফিরবে , তা নিয়ে সন্দিহান স্থানীয় বাসিন্দা থেকে মত্স্যজীবীরা৷
EiSamay.Com illegal construction on waterland in mukundapur
কবে ফিরবে ভেড়ি, সে প্রশ্নেই দিন কাটছে বাসিন্দাদের


প্রায় ৪০০ বিঘের জগতীপোতা ৬২ শেয়ারের এই জমির চারদিকে ঘেরা পাঁচিল ভাঙার কাজ প্রশাসন শুরু করেছিল মাসখানেক আগে৷ তারপর দ্রুত কংক্রিটের চাঙড় , ইট , কাঠ সরিয়ে জমিটি পরিষ্কার করে তার পুরোনো চরিত্রে ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়৷ সোমবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল , ভেঙে পড়া পাঁচিল , ইট -কাঠ -পাথর , টিনের শেড এখনও বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে৷

আশপাশের গ্রামের লোকজন পুলিশের নজরদারির মধ্যেই সেখান থেকে ইট -কাঠ নিজেদের প্রয়োজনে যে যাঁর মতো সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন৷ জেসিবি দিয়ে কিছু জায়গায় আবর্জনা সরিয়ে মাটি কাটা হলেও বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও আগের অবস্থাতেই পড়ে৷ প্রশাসন হস্তক্ষেপ করার পরও স্বাভাবিক ভাবেই স্থানীয় বাসিন্দারা আশঙ্কায় , ওই জমি জলাভূমির চেহারা আদৌ ফিরে পাবে তো , পেলেও কত সময় লাগবে ?দাসপাড়ার কালীপদ পোড়েল যেমন বলছিলেন , ‘বছর খানেক আগে পর্যন্তও ওই জায়গায় জলাজমি ছিল৷ আমরা মাছ ধরে সংসার চালাতাম৷ ছিটকালিকাপুর , আটঘড়া , দাসপাড়া , জগতীপোতা , গঙ্গানগর , যমুনানগরের অনেকগুলি পরিবার এর সঙ্গে যুক্ত ছিলাম৷

কোনও মাসে চার হাজার , কোনও মাসে সাত -আট হাজার টাকার মতো আয় হত৷ জমি ভরাট হয়ে গিয়ে সে সব তো কবেই উধাও হয়ে গিয়েছে৷ বাধ্য হয়ে এখন জোগাড়ের কাজ করি৷ তাতে আর কতটুকু আয় হয় ? মাসে ১০ দিনও কাজ পাই না৷ ’ কালীপদর মতো খুদিরাবাদের তাপস হালদারের কথায়, ‘আমরা তো চাই আগের মতো জলাভূমি আমাদের ফিরিয়ে দেওয়া হোক৷ প্রশাসন বলেছে ঠিকই৷ তবে দেখতেই তো পাচ্ছেন , কাজ কতটুকু এগিয়েছে৷ বর্ষা এসে যাওয়ায় নিয়ম করে জেসিবি বসিয়ে মাটি কাটার কাজও হচ্ছে না৷ ’ কালী বাগ , সুধীর প্রামাণিকদের মতো অনেকেই মাছ চাষের কাজ হারিয়ে অন্য জীবিকা বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন পেটের দায়ে৷ তাঁরা প্রত্যেকেই চান , যত দ্রুত সম্ভব প্রশাসন কাজ শেষ করুক৷

জগতীপুর ৬২ শেয়ারের ওই জমির উল্টো দিকেই রয়েছে জগতীপুর ৫৬ শেয়ারের ভেড়ি৷ ওই জমি ভরাট করে প্লট করে বিক্রি শুরু হয়ে গেলেও এই ভেড়িতে মাছ চাষ আগের মতোই চলছে৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায় , ‘৬২-শেয়ারের বিরাট জলাভূমিটির শেষ পর্যন্ত কী হবে , তা আমরাও বুঝে উঠতে পারছি না৷ কারণ , রাবিশ ফেলে ওই জমি অনেক দিন ধরে উঁচু করে ফেলা হয়েছে৷ সে সব সরাতে অনেকটা সময় লাগবে৷ কাজ সেই মতো হচ্ছে না৷ রাবিশ সরানোর কাজ খুবই ঢিমেতালে চলছে৷ এরমধ্যে বর্ষা নেমে যাওয়ায় কাজ থমকে যাচ্ছে৷ আমরা চাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করুন৷ ’

জগতীপোতা রবীন্দ্র পার্কের বাসিন্দা সুনীল মণ্ডল বলেন , ‘প্রশাসন যা বলেছে , আমরা তা সমর্থন করি৷ আমরাও তো প্রথম থেকেই চাই , আগের অবস্থায় জমি দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়া হোক৷ ’ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান , জমিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে৷ এত বিশাল জমিকে জলাভূমির চেহারায় ফেরাতে কিছু সময় লাগবে৷

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল