অ্যাপশহর

নিউ টাউনে বন দপ্তরের অভিযান, মিলল পাখি ধরার ফাঁদ

এক কর্মী ওই জলাশয়ে নেমে হাতড়ে দেখেন , কঞ্চির মাধ্যমে গোটা জলাশয় জুড়েই সরু জালের ফাঁদ পাতা রয়েছে৷ সেগুলি বাজেয়াপ্ত করে বন দপ্তর৷

EiSamay.Com 20 Apr 2017, 1:49 pm
শিলাদিত্য সাহা ও অভিজিত্‍‌ আঢ্য
EiSamay.Com illegal bird poaching racket busted at new town
নিউ টাউনে বন দপ্তরের অভিযান, মিলল পাখি ধরার ফাঁদ


রাজারহাট নিউ টাউনে দেদার ফাঁদ পেতে পাখি ধরার কারবার চলছে, বুধবারই তা সামনে এসেছিল এই সময়-এর সচিত্র প্রতিবেদনে৷ সেই খবর পাওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসল রাজ্য বন দপ্তরের ওয়াইল্ডলাইফ উইং৷ বুধবার বিকেল তারা অভিযান চালিয়ে নিউ টাউনের ইকো আরবান ভিলেজ এলাকার জলাভূমি থেকে উদ্ধার করল পাখি ধরার বেশ কয়েকটি ফাঁদ৷ একই সঙ্গে এই পাখি মারার এবং বিক্রির ব্যবসার সঙ্গে কারা জড়িত, তা জানার জন্য বিশেষ তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে তারা৷

ফাঁদ পেতে পাখি ধরার ছবি প্রকাশের পরেই বুধবার সকালে বন দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন কলকাতার সাম্মানিক ওয়াইল্ডলাইফ ওয়ার্ডেন সুচন্দ্রা কুণ্ডু এবং বন্যপ্রাণ উপদেষ্টা কমিটির সদস্য জয়দীপ কুণ্ডু৷ ছবিগুলি দেখে চিফ কনজারভেটর (ওয়াইল্ডলাইফ হেড কোয়ার্টার) এস কুলান্দাইভেল সিদ্ধান্ত নেন , এদিনই অভিযানে নামবেন তাঁরা৷ সেই মতো বিকেলের পর রেঞ্জ অফিসার উল্লাস নাথের নেতৃত্বে ওয়াইল্ডসাইফ উইংয়ের জনা আষ্টেক কর্মী ইকো আরবান ভিলেজ এলাকায় জলাশয়গুলি পরিদর্শনে যান৷ কাদায় ভরা মাঠের মধ্যে কার্যত হারিয়ে থাকা বেশ কয়েকটি জলাজমি চিহ্নিত করা হয় যেখানে পাখির ঝাঁক বসে রয়েছে৷ এর পরেই একটি জলাশয়ে বাঁশের কঞ্চি লাগানো রয়েছে দেখে সন্দেহ হয় তাঁদের৷ তখন এক কর্মী ওই জলাশয়ে নেমে হাতড়ে দেখেন , কঞ্চির মাধ্যমে গোটা জলাশয় জুড়েই সরু জালের ফাঁদ পাতা রয়েছে৷ সেগুলি বাজেয়াপ্ত করে বন দপ্তর৷

একই সঙ্গে সেখানে প্রচুর পায়ের ছাপও দেখেন বনকর্মীরা৷ কিন্ত্ত এই এলাকায় পাখি মারার কারণ কী ? এই অপরাধ সংঘটিত হয় কী ভাবে ?স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেল , শীতকালে প্রচুর পরিযায়ী পাখি এই এলাকায় আসে৷ একই সঙ্গে স্থানীয় পাখিও প্রচুর৷ রোজ বিকেলে কিছু যুবক জলার ধারে ফাঁদ পেতে রাখে৷ তার পর পরের দিন ভোরবেলায় যখন কাদাখোঁচা , বাটামের মতো পাখি সেখানে জল খেতে আসে , তখন তারা ধরা পড়ে যায় ফাঁদে৷ এই ভাবে পাখি মারা না গেলে অন্য উপায়ও আছে৷ মৌরলার মতো কুচো মাছে ফলিডল বা অন্য কোনও বিষ মিশিয়ে তা ছড়িয়ে রাখা হয়৷ পাখিরা ওই মাছ খেয়ে বিষক্রিয়ায় মারা যায়৷ কিন্ত্ত কোন কাজে লাগে ওই পাখিগুলি ? স্থানীয়রা জানাচ্ছেন , এলাকার মধ্যেই ৫০ টাকা পিস দরে পাখিগুলি বিক্রি হয়৷ মূলত সস্তার মাংস হিসেবে৷

যদিও চিফ কনজারভেটরের বক্তব্য , ‘এই ধরনের অপরাধ বিভিন্ন জায়গায় বাড়ছে৷ কারণ স্থানীয় হোটেল , বার , রেস্তোরাঁয় এসব পাখির মাংসের চাহিদা রয়েছে৷ নিউ টাউনেও সেই সন্দেহ আমরা উড়িয়ে দিচ্ছি না৷ আমি ওয়াইল্ডলাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর সঙ্গে কথা বলব৷ দোষীদের ধরে কঠিন সাজা না দিলে পাখি মারার ব্যবসায় লাগাম টানা মুশকিল৷ কারণ এগুলো খুব স্থানীয় ভাবে হয়৷ এই সময়কে ধন্যবাদ , তারা নিউ টাউনের ঘটনাটিকে সামনে এনেছে৷ ’ সুচন্দ্রা বলছেন , ‘এমনিতেই কলকাতায় জলাশয় , জলাভূমি ক্রমশ কমছে৷ পাখিদের বাসা বলে কিছু পড়ে নেই আর৷ সেখানে যদি এমন ঘৃণ্য অপরাধ রমরমিয়ে চলতে থাকে , তা হলে তো বাস্ত্ততন্ত্রই নষ্ট হয়ে যাবে৷ আমরা যে কোনও মূল্যে এই কারবার রুখব৷ ’

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল