অ্যাপশহর

বইমেলায় ভিড় হলে ফাঁকা কেন গ্রন্থাগার, প্রশ্ন হর্ষের

বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ-এ সেখানকার পাঠক সমাজ আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে সাহিত্যিক হর্ষ দত্তের বক্তব্যে রবিবার উঠে এল এমনই ঐতিহাসিক বাস্তবের কথা। এ দিন বিকেলে সেখানে সুনীল দাস স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করা হয়।

EiSamay.Com 3 Feb 2020, 1:32 pm
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক গ্রন্থাগার। যেগুলি ‘জীবিত’, তার বেশিরভাগই চলছে টিমটিম করে। অথচ ৯৮ বছর আগে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গ্রন্থাগারের দৈন্য সম্পর্কে প্রবন্ধ লিখে গিয়েছিলেন। গ্রন্থাগারের মুখ্য কর্তব্যের পাশাপাশি তুলে ধরেছিলেন অসুখের খুঁটিনাটি। মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, পাঠককে কাছে টানা পাঠাগারেরই কাজ। কিন্তু দুর্ভাগ্য, পুরোনো সে রোগের উপসর্গ আজও বদলায়নি। ফলে সারেনি অসুখ। পাঠাগারের আতিথেয়তার অভাবেই হয়তো বিমুখ হচ্ছেন পাঠক।
EiSamay.Com book fair
কলকাতা বইমেলা


বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ-এ সেখানকার পাঠক সমাজ আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে সাহিত্যিক হর্ষ দত্তের বক্তব্যে রবিবার উঠে এল এমনই ঐতিহাসিক বাস্তবের কথা। এ দিন বিকেলে সেখানে সুনীল দাস স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করা হয়। প্রয়াত গ্রন্থাগারিকের স্মরণে আয়োজিত ‘উপেক্ষিত গ্রন্থাগার ও উদাসীন পাঠক’ শীর্ষক ভাষণে হর্ষ বলেন, ‘বইমেলার বিপুল ভিড় দেখে বইয়ের কদর সম্পর্কে ভালো আন্দাজ করা যায় না। ভাবছি, গ্রন্থাগারেও তো বইয়ের মেলা। তা হলে সেখানে কেন ভিড় নেই! বিষয়টা বেশ চিন্তা ও উদ্বেগের। কেন এই উপেক্ষা? ছোট লাইব্রেরিগুলো কোথায় গেল? যাঁরা বরাবর পাঠাগারে আসেন, তাঁরাও কেন মুখ ফেরাচ্ছেন?’

নিজের তুলে ধরা প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে রবি ঠাকুরের প্রসঙ্গ টেনে আনেন হর্ষ। ১৯২৮ সালে রবীন্দ্রনাথের লেখা প্রবন্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘রবি ঠাকুর লিখে গিয়েছিলেন, মুশকিল হচ্ছে, অধিকাংশ গ্রন্থাগার সংগ্রহ-বাতিকগ্রস্ত। সবাই হিসেব করে, ভাঁড়ারে কত বই আছে! বইগুলো কতটা কাজে লাগছে, সে খেয়াল কেউ রাখে না। এত দিন আগেই রবীন্দ্রনাথ লিখে গিয়েছিলেন, লাইব্রেরির একটা দায় আছে। বই জমিয়ে লাভ নেই। সেটা লোকে না পড়লে লাভ কী! তাই গ্রন্থাগারিক ও পাঠক, উভয়েরই গ্রন্থবোধ থাকতে হবে। ভালো গ্রন্থাগারিক হল সে-ই, বই দিয়ে পাঠককে আপ্যায়ন করার গুণ আছে যার।’ হর্ষ মনে করিয়ে দেন, ‘এই সন্ধিক্ষণে সেই গুণ ফিরিয়ে আনা জরুরি। সে জন্য বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎকে দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান তিনি।

যদিও মনোগ্রাহী অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের দোতলার হলঘরটি কেন ভরল না, গুঞ্জন রয়েছে পাঠক মহলে। এ দিনের আলোচনার বিষয়বস্তু যে কতটা সময়োপযোগী, পাঠকসমাজের একাংশ নিজেদের অনুপস্থিতি দিয়ে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। মাত্র ৬০-৭০ জনের উপস্থিতিতে হলঘরের ৩৩টি লম্বা বেঞ্চের সিকিভাগ ভরেছিল এ দিন বিকেলে। যদিও পাঠাগার সূত্রের দাবি, দৈনিক ৩৫-৪০ জনের বেশি পাঠক সেখানে যান না। এ দিন বরং কিছু বেশি পাঠকের সমাগম হয়েছিল স্মারক বক্তৃতা উপলক্ষ্যে। বারিদবরণ ঘোষের সভাপতিত্বে হওয়া অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ-এর সম্পাদক রতনকুমার নন্দী।

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল